MCC violation complaint: আদর্শ নির্বাচনী আচরণবিধি ভাঙলে, যাবতীয় দায় সংশ্লিষ্ট প্রার্থীর। এই নীতি থেকে সরে এল নির্বাচন কমিশন। প্রার্থীর বদলে নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের নোটিশ পাঠানো হচ্ছে সংশ্লিষ্ট দলকে। অতীতে প্রার্থীর হয়ে প্রচার করতে এসে তারকা প্রচারকরা আদর্শ নির্বাচনী আচরণবিধি আকছার ভাঙতেন বলে অভিযোগ উঠত। তার প্রেক্ষিতে প্রার্থীকেই অভিযুক্ত করে নোটিস পাঠাত কমিশন। তার বদলে এবার রাজনৈতিক দলকে নোটিস পাঠানো হচ্ছে।
যেমন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে অভিযোগের ভিত্তিতে এবার কমিশন- বিজেপি এবং কংগ্রেসকে নোটিস পাঠিয়েছে। নোটিশগুলোতে কমিশন আন্ডারলাইন করে জানিয়েছে যে, আলাদা আলাদা তারকা প্রচারকরা তাঁদের নিজস্ব বক্তৃতার জন্য দায়ী। এক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন, 'কেস-বাই-কেস ভিত্তিতে' তাদের প্রচারকদের দ্বারা যে কোনও আদর্শ আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে রাজনৈতিক দলগুলোকে দায়ী করতে পারে।
প্রাক্তন একজন নির্বাচন কমিশনার এই প্রসঙ্গে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, 'কমিশনের এই পদক্ষেপ ভরাডুবির শামিল। আপনি যদি কোনও নেতার মন্তব্যের জন্য একটি দলকে নোটিশ পাঠান, তাহলে আপনি ওই নেতার বিরুদ্ধে কী আর এমন করলেন? বড়জোর বলতে পারেন, দলের উত্তর সন্তোষজনক নয়। এর বাইরে একটা দলের বিরুদ্ধে আপনি আর কী ব্যবস্থা নেবেন? এই সিদ্ধান্তটা কমিশন কেন নিল, সেই উদ্দেশ্যটা পরিষ্কার নয়।'
প্রাক্তন নির্বাচন কমিশনারের এই কটাক্ষ মিথ্যে নয়। কারণ, হাই প্রোফাইল নেতাদের বিরুদ্ধে কমিশন এখনও পর্যন্ত বড় কোনও পদক্ষেপ নিয়ে দেখাতে পারেনি। অতীতে অনেক হাই প্রোফাইল নেতার বিরুদ্ধেই আদর্শ নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু, কোনওক্ষেত্রেই কমিশনের পদক্ষেপ সন্তোষজনক নয়।
যেমন, ২০০৭ সালে গুজরাট বিধানসভা নির্বাচনের সময় সোনিয়া গান্ধীকে, ২০১৩ সালের নভেম্বরে নরেন্দ্র মোদীকে, ২০১৪ সালে অমিত শাহ যখন বিজেপির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন, তাঁকে নির্বাচন কমিশন সরাসরি নোটিশ পাঠিয়েছিল। কিন্তু, আজ পর্যন্ত কোনও বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে আদর্শ নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগে নোটিস জারি করা হয়নি।
নির্বাচন কমিশনের একজন আধিকারিক জানিয়েছেন, ১৬ মার্চ লোকসভা নির্বাচন নিয়ে সাংবাদিক বৈঠকের সময় মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার ঘোষণা করেছিলেন, যে প্রচারকারীরা বারবার আদর্শ নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। রাহুল গান্ধী ও নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তাঁদের দলকে নোটিস পাঠানো মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের সেই ঘোষণারই অঙ্গ।
আরও পড়ুন- সুপ্রিম কোর্টের বিরাট রায়! ব্যালটে ভোটের আর্জি, যাবতীয় ইভিএম-ভিভিপ্যাট মেলানোর আবেদন খারিজ
কমিশনের এক আধিকারিক এই ব্যাপারে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেছেন, 'কমিশন আসলে প্রচারকের বিধি ভাঙার দায় দলগুলোর ঘাড়েও চাপাচ্ছে। সংবিধানে রাজনৈতিক দলগুলোর বিশেষ ভূমিকা রয়েছে, কমিশন নোটিস পাঠানোর মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলোকে সেকথাই নতুন করে মনে করিয়ে দিচ্ছে।'