Portion of Virupaksha temple collapses: প্রবল বৃষ্টির জেরে চরম ক্ষতিগ্রস্ত হল ইউনেস্কোর ঐতিহ্যবাহী মন্দির! ভেঙে পড়ল মন্দিরটির একাংশ। ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এর নাটমন্দিরটিও। ঘটনায় রীতিমতো উদ্বিগ্ন ইতিহাসবিদরা। তাঁরা প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে ইউনেস্কোর এই ঐতিহ্যবাহী মন্দির রক্ষা করার জন্য আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া (এএসআই)-র আধিকারিকদের কাছে আবেদন করেছেন। খ্রিস্টীয় সপ্তম শতাব্দীতে মন্দিরটি তৈরি হয়েছিল বলে অনুমান।
মন্দিরটির ঐতিহাসিক গুরুত্ব
মন্দিরটি বহু শতাব্দী আগে তৈরি হলেও ১৪ শতকে বিজয়নগর সাম্রাজ্যের (১৩৩৬ থেকে ১৬৪৬) আমলে, তার অগ্রগতি ঘটে। সঙ্গম রাজবংশের প্রথম হরিহর দ্বারা প্রতিষ্ঠিত বিজয়নগর সাম্রাজ্য তুঙ্গভদ্রা নদীর তীরে গড়ে উঠেছিল। সেসময়ে এটি ছিল অন্যতম শক্তিশালী রাজ্য। বিজয়নগর সাম্রাজ্যের শাসকরা শিল্প এবং ধর্মের পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। সেই শাসকদের পৃষ্ঠপোষকতায় মন্দিরটি ধর্মীয় এবং সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হয়ে উঠেছিল
মন্দিরটির বিশেষত্ব
এটি দ্রাবিড় মন্দির স্থাপত্যের একটি প্রধান উদাহরণ। এখানে বিশাল গোপুরাম (উঁচু প্রবেশদ্বার) আছে। গর্ভগৃহের ওপরে আছে চূড়া। গোপুরামে বিভিন্ন দেবতা, পৌরাণিক দৃশ্য এবং প্রাণীদের চিত্রিত করা রয়েছে। গর্ভগৃহে আছে শিব লিঙ্গ। ঐতিহাসিকরা জানিয়েছেন, এই মন্দিরের সামনে মেলা বসত। ব্যবসায়ীরা উপাসনায় ব্যবহৃত জিনিসপত্র-সহ নানা সামগ্রী বিক্রি করতেন। কখনও কখনও মন্দিরে আসা ভক্তরাও মণ্ডপের নীচে ছাউনি ফেলতেন। মন্দিরটি যেখানে, একসময় সেই অঞ্চল ছিল হাম্পি সাম্রাজ্যের রাজধানী। ইউনেস্কোও এই মন্দিরের প্রাচীনত্বকে বিশেষ স্বীকৃতি দিয়েছে।
কী কারণে মন্দিরটি ভেঙে পড়ল?
পাথরের স্তম্ভ ব্যবহার করে মণ্ডপটি তৈরি হয়েছে। পুরাতত্ত্ব বিভাগের আধিকারিকদের মতে, দীর্ঘ সময় ধরে বৃষ্টির জেরে এই পাথরের স্তম্ভগুলোর অবস্থার অবনতি ঘটেছে। এএসআই-এর হাম্পি সার্কেলের সুপারিনটেনডেন্ট প্রত্নতাত্ত্বিক নিহিল দাস বলেছেন, 'চারটি স্তম্ভ সমন্বিত ১৯ মিটার দীর্ঘ প্যাভিলিয়ন। তার তিন মিটার, ভারী বৃষ্টির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।' তারপর মঙ্গলবার (২১ মে) ধসে পড়েছে। এএসআই জানিয়েছে, হাম্পির ৯৫টি স্তম্ভের মধ্যে ৫৭টি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব তাদের অর্থাৎ কেন্দ্রীয় সরকারের। বাকিগুলো রক্ষণাবেক্ষণের দায়ভার রাজ্য সরকারের।
আরও পড়ুন- তড়িঘড়ি ভোট! এত তাড়াতাড়ি ঋষির নির্বাচন করানোর কী দরকার ছিল? প্রশ্ন বিশেষজ্ঞদেরও
ইউনেস্কোর উদ্বেগপ্রকাশ
এএসআই ঘটনার দায় এড়ানোর চেষ্টা করলেও ইউনেস্কোর ওয়েবসাইট ঐতিহ্যবাহী স্থানটির রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, 'বিরূপাক্ষ মন্দিরে নিয়মিত পূজা হয়। এজন্য মন্দির চত্বরের বিভিন্ন অংশে অনেক সংযোজন এবং পরিবর্তন ঘটানো হয়েছে। এর আশপাশে এলোমেলোভাবে অনেক আধুনিক দোকান, রেস্তোরাঁ বাজার তৈরি হয়েছে। যা মন্দিরটির স্থাপত্যে বিরূপ প্রভাব ফেলেছে।'