Advertisment

President Ebrahim Raisi: প্রেসিডেন্টের আচমকা মৃত্যু! মহাবিপাকে ইরান, বিরাট পালাবদলের সম্ভাবনা?

A difficult moment for Iran: আর্মেনিয়া এবং আজারবাইজান সীমান্তের কাছে উত্তর-পশ্চিমে পাহাড়ে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Ebrahim Raisi। Iran। Tehran

Ebrahim Raisi: ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। (ফাইল ছবি)

President Ebrahim Raisi a difficult moment for Iran: ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি, আর্মেনিয়া এবং আজারবাইজান সীমান্তের কাছে উত্তর-পশ্চিমে পাহাড়ে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন। এই কপ্টারে ছিলেন ইরানের বিদেশমন্ত্রী হোসেইন আমিরাবদুল্লাহিয়ান ও ইরানের পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের গভর্নর মালেক রহমাতিও। রবিবার (২১ মে) ঘন কুয়াশায় কপ্টারটি অদৃশ্য হয়ে যায়। রাইসি আজারবাইজানের রাষ্ট্রপতি ইলহাম আলিয়েভের সঙ্গে এক অনুষ্ঠান থেকে তেহরানে ফিরছিলেন। মিডিয়া রিপোর্টে এমনটাই দাবি করা হয়েছে। বৃষ্টি ও কুয়াশার মধ্যেই তল্লাশি চলে।

Advertisment

রাতভর তল্লাশির পর উদ্ধার
উদ্ধারকারী দল রাতভর তল্লাশির পর ধ্বংসাবশেষ খুঁজে বের করে। দুর্ঘটনাস্থল থেকে প্রাপ্ত ছবি অনুযায়ী, লেজের একটি অংশ ছাড়া বিমানটির প্রায় কিছুই পাওয়া যায়নি। প্রেসিডেন্টের নিজের শহর মাশহাদে ইমাম রেজার সম্মানিত মাজারের মঞ্চ থেকে তাঁর মৃত্যুর কথা ঘোষণা করা হয়। ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা IRNA বলেছে, রাইসি 'সেবা করতে গিয়ে শহিদ' হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম টুইটারে রাইসির মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, ভারত এই ট্র্যাজেডিতে ইরানের পাশে দাঁড়িয়েছে।

রাইসির স্থলাভিষিক্ত কে হবেন?
ইরানের সংবিধান অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট মারা গেলে বা অক্ষম হলে একনম্বর ভাইস প্রেসিডেন্ট দায়িত্ব নেন। তিনি হলেন মোহাম্মদ মোখবার। ২০২১ সালের আগস্টে প্রেসিডেন্ট রাইসি তাঁকে এই পদে নিয়োগ করেছিলেন। ইরানে বেশ কয়েকজন ভাইস প্রেসিডেন্ট আছেন। তাঁরা ইরানের মন্ত্রিসভায় দায়িত্ব পালন করেন। নতুন করে প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত মোহাম্মদ মোখবের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করবেন। এই প্রেসিডেন্ট নির্বাচন আগামী ৫০ দিনের মধ্যে শেষ করতে হবে। প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট মোখবার এর আগে ১৪ বছর, 'সেতাদ'-এর প্রধান পদে ছিলেন। এই 'সেতাদ' একটি শক্তিশালী অর্থনৈতিক সংগঠন। এই সংগঠন সরাসরি ইরানের সর্বোচ্চ নেতার অধীনে কাজ করে। মোখবেরের নেতৃত্বে, 'সেতাদ' ইরানের নিজস্ব করোনা ভাইরাস ভ্যাকসিন তৈরি করেছিল। এই ভ্যাকসিনের নাম, 'কোভিরান বারেকাত'। যার নিরাপত্তা এবং কার্যকারিতা নিয়ে অবশ্য প্রশ্ন উঠেছিল।

কেন এটা ইরানের জন্য একটি কঠিন সময়?
প্রেসিডেন্ট রাইসির বয়স ৬৩। তিনি একজন কট্টরপন্থী ধর্মযাজক ছিলেন। তাঁকে ইরানের অষ্টাদশ সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির সম্ভাব্য উত্তরসূরি হিসেবে দেখা হত। তাঁর ক্ষমতায় থাকার তিন বছরের মধ্যে, প্রেসিডেন্ট রাইসি মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের প্রভাব বিস্তারের জন্য কাজ করেছিলেন। যার মধ্যে ছিল, এই অঞ্চলের বেশ কয়েকটি দেশের সশস্ত্র জঙ্গিগোষ্ঠীকে সহায়তাদানের মত বিষয়ও। পাশাপাশি, রাইসির জমানায় ইরান তাদের পরমাণু কর্মসূচিও ত্বরান্বিত করেছিল।

উত্তপ্ত মধ্যপ্রাচ্য
রাইসির জমানায় মধ্যপ্রাচ্য উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল। সিরিয়ায় ইরানের কূটনৈতিক দূতাবাস চত্বরে ইজরায়েলি বোমা হামলার প্রতিশোধ নিতে তেহরান গত মাসে ইজরায়েলের ওপর একটি নজিরবিহীন বিমান হামলা চালায়। যাতে, ইজরায়েলের সঙ্গে ইরানের কয়েক দশকের পুরোনো শত্রুতা প্রকাশ্যে ছড়িয়ে পড়ে। রাইসির জমানায়, ইরান রাশিয়াকে সামরিক ড্রোন সরবরাহ করেছে বলে অভিযোগ ওঠে। এরপরই গত বছর, চিন কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনরুদ্ধার করার জন্য তেহরান এবং রিয়াদের মধ্যে একটি ঐতিহাসিক চুক্তির মধ্যস্থতা করেছে। যা এই অঞ্চলে বৃহৎ শক্তির রাজনীতিতে বেজিংয়ের প্রবেশের ইঙ্গিত দিয়েছে। এটা আরবের ভূ-রাজনৈতিক সমীকরণে একটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বর্তমানে সৌদি আরবের হাতে হাত মিলিয়ে এই অঞ্চলে ইরানকে বিচ্ছিন্ন করতে চেষ্টা চালাচ্ছে।

আরও পড়ুন- নির্বাচনী প্রচারে বিরাট অভিযোগ! সরকারি গণমাধ্যমে মত প্রকাশে বিরোধীদের বাধা

কুর্দি মহিলার মৃত্যু
রাইসি ক্ষমতায় থাকাকালীন ধর্মীয় পুলিশের হেফাজতে একজন কুর্দি মহিলার মৃত্যু হয়। তার পরে ইরানের রাস্তায় ব্যাপক বিক্ষোভ দেখা গেছে। সরকার কড়া হাতে সেই বিক্ষোভ সামলেছে। অনেক বিক্ষোভকারীকে মৃত্যুদণ্ডও দিয়েছে। এই সব কিছুর সঙ্গেই যেন রাইসি ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন।

Iran President Death Helicopter
Advertisment