কয়েক মাস আগের ছবি ফিরল রাজধানী দিল্লিতে। কয়েক মাস আগে দেখা যেত দেশের রাজধানীর বিভিন্ন প্রবেশপথে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন কৃষকরা। তাঁরা বিতর্কিত কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছেন। সোমবার, ২২ আগস্ট সেই ছবিই ফিরল দেশের রাজধানীতে। কেন্দ্রস্থল যন্তর-মন্তরে প্রবেশের জন্য বিভিন্ন প্রান্ত দিয়ে দিল্লির পথে রওনা হয়েছেন কৃষকরা। এসব দেখেই টিকরি, সিংগু, গাজিপুর-সহ দিল্লির বিভিন্ন প্রবেশপথে ব্যাপক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সাধারণ যাত্রীদের এই সব প্রবেশপথ এড়ানোরও পরামর্শ দিয়েছে দিল্লি পুলিশ।
পুলিশ কর্তাদের ধারণা, ৫,০০০-এরও বেশি কৃষক দিল্লিতে প্রবেশের চেষ্টা করছেন। এঁরা আসছেন প্রধানত পঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ থেকে। সোমবার বিকেলে অবশ্য কৃষক নেতারা অভিযোগ করেন, 'বিক্ষোভকারীদের বহনকারী যানবাহন দিল্লিতে প্রবেশে বাধা দেওয়া হচ্ছে।' পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, 'যথাযথ যাচাই করার পর বিক্ষোভকারীদের এগিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।'
কেন বিক্ষোভকারী কৃষকরা দিল্লিত ফিরছেন?
কেন্দ্র সরকারকে বিতর্কিত তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহার করতে বাধ্য করার নয় মাস পরে কৃষকরা ফের প্রতিবাদের রাস্তায় ফিরছেন। ভারতীয় কিষান ইউনিয়নের (বিকেইউ) যুব নেতা সুমিত শাস্ত্রীর মতে, বিক্ষোভকারী কৃষকরা অন্যান্য বিষয়ের পাশাপাশি ন্যূনতম মূল্যের (এমএসপি) আইনি গ্যারান্টি, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয়মিশ্র টেনিকে বরখাস্ত করার দাবি জানাচ্ছেন। একইসঙ্গে তাঁদের দাবি, জেলে আটক কৃষকদের মুক্তি দিতে হবে। কয়েক মাস আগে বিক্ষোভ চলাকালীন এই কৃষকদের গ্রেফতার করেছিল দিল্লি পুলিশ।
এমএসপি
কেন্দ্র সাতটি শস্য (ধান, গম, ভুট্টা, বাজরা, জোয়ার, রাগি এবং বার্লি), পাঁচটি ডাল (ছানা, তুর/অড়হর, মুগ, উরদ এবং মুসুর), সাতটি তেলবীজ (সরিষা-রেপিসিড) সহ ২৩টি ফসলের জন্য এমএসপি ঘোষণা করেছে। চিনাবাদাম, সয়াবিন, সূর্যমুখী, তিল, কুসুম এবং নাইজারসিড) এবং চারটি বাণিজ্যিক ফসল (আখ, তুলা, কোপরা এবং কাঁচা পাট)-এর ক্ষেত্রেও জারি হয়েছে এমএসপি।
আরও পড়ুন- কেন তিস্তার জামিনের আবেদন বাতিল হবে, গুজরাত সরকারের জবাব চায় সুপ্রিম কোর্টের
এমএসপি কী?
এমএসপি হল ন্যূনতম সহায়ক মূল্য। এর কোনও আইনি বিধি নেই। কৃষকরা অধিকার হিসেবে এমএসপি দাবিও করতে পারেন না। ভারতের বেশিরভাগ অংশে উৎপাদিত বেশিরভাগ ফসলে কৃষকরা যে দাম পান, বিশেষ করে ফসল কাটার পর, তা সরকারিভাবে ঘোষিত এমএসপির চেয়ে অনেক কম।
কৃষক সংগঠনগুলো তিনটি বিতর্কিত কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছিল। একইসঙ্গে কৃষকরা চেয়েছিল যাতে মোদী সরকার এমএসপি বাধ্যতামূলক করে। এজন্য আইন আনে। কেন্দ্রীয় সরকার কৃষকদের এই দাবি মেনে নিলে এমএসপি আর কেবল সরকারের ইচ্ছেমতো সহায়ক মূল্য থাকত না।
কিন্তু, প্রধানমন্ত্রী যখন ২০২১ সালের ১৯ নভেম্বর, তিনটি বিতর্কিত কৃষি আইন প্রত্যাহারের কথা ঘোষণা করেছিলেন, তখন এমএসপিকে বাধ্যতামূলক এবং আইনি রূপ দেওয়ার কথা জানায়নি। গত মাসে, সংসদে একটি প্রশ্নের জবাবে, সরকার স্পষ্ট জানায় যে তারা এনিয়ে প্রতিবাদী কৃষকদের কোনও আশ্বাসও দেয়নি। উলটে বলেছে যে এমএসপি বিষয়টিকে আরও স্বচ্ছ করা প্রয়োজন।
Read full story in English