বিজেডির নেতৃত্বাধীন ওড়িশা সরকারের পুরী হেরিটেজ করিডর প্রকল্পটি এখন বিতর্কের মুখে। সম্প্রতি ওড়িশা হাইকোর্টে আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার দাখিল করা একটি হলফনামা ঘিরে প্রকল্পটি নিয়ে বিতর্ক তীব্র হয়েছে।
পুরী হেরিটেজ করিডর প্রকল্প কী?
২০১৬ সালে পরিকল্পিত, হেরিটেজ করিডর প্রকল্পটি। যা ঐতিহ্যময় পুরী শহরকে আন্তর্জাতিকস্তরে তুলে ধরতে নেওয়া হয়েছে। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে শুরু হয়েছে এই প্রকল্প। দর্শনার্থী ও পর্যটকদের জন্য শহরের প্রধান অংশ এবং মন্দিরের আশেপাশের উন্নয়ন এই প্রকল্পের বিষয়বস্তু। ৮০০ কোটি টাকা ব্যয়ে আনুমানিক প্রথম ধাপের কাজ শুরু হয়েছে। এজন্য ২০২০-র ফেব্রুয়ারিতে ওড়িশা বিধানসভায় এই প্রকল্প নিয়ে একটি প্রস্তাব সর্বসম্মতভাবে পাস হয়।
এর পরে, শ্রী জগন্নাথ মন্দির প্রশাসন (এসজেটিএ) আনুমানিক ৩,২০০ কোটি টাকা ব্যয়ের এই প্রকল্পের স্থাপত্য এবং নকশা অনুমোদন করে। এই প্রকল্পে পর্যায়ক্রমে মোট ২২টি ছোট প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে। রাজ্য সরকারের মৌলিক সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি ও পুরীর ঐতিহ্য ও স্থাপত্যের উন্নয়ন (ABADHA) প্রকল্প থেকে প্রাথমিক পর্যায়ের ৮০০ কোটি টাকা নেওয়া হয়েছে। পরে আরও ২৬৫ কোটি টাকা প্রথম পর্যায়ের এই উন্নয়নখাতে ব্যয় হবে বলে ওড়িশা সরকার জানিয়েছে।
আরও পড়ুন- সেলিব্রিটির নার্সিসিজমে আত্মহত্যার উসকানি, সাবধান না হলেই বিপদ
বিতর্কটা কী নিয়ে?
১২ শতকের পুরীর মন্দিরের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছে আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া। আইন অনুযায়ী, প্রাচীন স্থাপত্যের ১০০ মিটারের মধ্যে কোনও নির্মাণকাজ করা যায় না। আর, সেরকম কাজ করতে হলে জাতীয় স্মৃতিসৌধ কর্তৃপক্ষ বা (এনএমএ)-র অনুমোদন লাগে। এই এনএমএ আবার কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রকের অধীনস্থ সংস্থা। এনএমএ সবদিক খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নেয়। এনএমএর নির্দেশিকা অনুযায়ী, কোনও স্থাপত্যের ৫,০০০ বর্গমিটার এলাকার মধ্যে নির্মাণকাজ হলে স্থাপত্যে তার কতটা প্রভাব পড়বে, তার মূল্যায়ন জরুরি। কারণ, নতুন নির্মাণের প্রভাব স্থাপত্যেরও ওপর পড়ার সম্ভাবনা থাকে।
তার ওপর পুরীর জগন্নাথ মন্দিরটি ৪৩,৩০১.৩৬ বর্গমিটার এলাকাজুড়ে বিস্তৃত। এক্ষেত্রে এনএমএ জানিয়েছে, পুরাতত্ত্ব বিভাগের অধীনে পুরী হেরিটেজ করিডর প্রকল্পের কাজ হলে তাদের আপত্তি নেই। এই শর্তে তারা নো অবজেকশন সার্টিফিকেট দিয়েছে ২০২১ সালের ৪ সেপ্টেম্বর। কিন্তু, এনএমএ যাদের ওপর ভরসা রাখছে সেই পুরাতত্ত্ব বিভাগই ওড়িশা সরকারকে হেরিটেজ প্রকল্পের ব্যাপারে কোনও ছাড়পত্র দিতে নারাজ। উলটে, পরিদর্শনের পর এএসআই কর্তারা গত ৫ মার্চ ওড়িশা সরকারকে চিঠি দিয়েছে। সেই চিঠিতে প্রকল্পটি নিয়েই উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
Read full story in English