Advertisment

Explained: অযোগ্যতার কারণ তো বাতিল হয়েছে, সংসদে ফিরতে পারবেন রাহুল?

অভিযোগ দায়ের করেছিলেন পূর্ণেশ মোদী।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Rahul Gandhi

পাটনায় ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে সারাদেশের বেশ কয়েকটি বিরোধী দলের প্রথম যৌথ বৈঠকে বিরোধী দলগুলির অন্যতম নেতা কংগ্রেসের রাহুল গান্ধী। (এক্সপ্রেস ছবি)

শুক্রবার (৪ আগস্ট) সুপ্রিম কোর্ট গুজরাটের এক আদালতে দায়ের করা একটি মানহানির মামলায় রাহুল গান্ধীর দোষী সাব্যস্ত হওয়া স্থগিত করেছে। গুজরাটের আদালত রাহুল গান্ধীর দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে। বিচারপতি বিআর গাভাইয়ের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চ বলেছেন যে ট্রায়াল কোর্টের বিচারক কেন রাহুলকে সর্বোচ্চ দুই বছরের সাজা দেওয়া উচিত ছিল তা স্পষ্ট করেননি। অথচ, এই দুই বছরের কারাদণ্ডের জন্যই সাংসদ হিসেবে রাহুল গান্ধী অযোগ্য বিবেচিত হয়েছিলেন।

Advertisment

রাহুল গান্ধীর ওপর সুপ্রিম কোর্টের আদেশের প্রভাব কী?
সুপ্রিম কোর্টের এই স্থগিতাদেশের অর্থ, রাহুল গান্ধীর ওপর এই সাজার কোনও প্রভাব পড়বে না। সংসদে তাঁর অযোগ্যতারও কোনও ভিত্তি থাকল না। সুরাটের একটি দায়রা আদালত বর্তমানে রাহুল গান্ধীর সম্পর্কে ট্রায়াল কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আবেদনের শুনানি করছে। সেই শুনানি শেষ না-হওয়া পর্যন্ত রাহুলের অযোগ্যতা স্থগিত থাকবে। 'লোক প্রহারি বনাম কেন্দ্রীয় সরকার' মামলায় ২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট করে দিয়েছিল যে সাজার ওপর স্থগিতাদেশ জারির পর থেকেই অযোগ্যতার সিদ্ধান্ত আর কার্যকর হবে না।

এর মানে কি এই যে ওয়ানাদ লোকসভা আসনে উপনির্বাচন হবে না?
সম্ভবত সেটাই। লোকসভার স্পিকার আনুষ্ঠানিকভাবে অযোগ্যতা এখনও প্রত্যাহার করেনি। তবে স্থগিতাদেশের মঞ্জুরি অযোগ্যতার কারণকে সরিয়ে দিয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ শুক্রবার বলেছে যে এই দোষী সাব্যস্ত হওয়ার বিস্তৃত প্রভাব রয়েছে। এটি কেবল রাহুল গান্ধীর জীবনকেই প্রভাবিত করেনি। বরং ভোটারদের অধিকারকেও প্রভাবিত করেছে। সেই সব ভোটারদের অধিকারকে, যাঁরা তাঁকে তাঁদের প্রতিনিধি হিসেবে বেছে নিয়েছিল। রাহুল সংসদে ফিরতে পারবেন? লোকসভা সচিবালয় আনুষ্ঠানিকভাবে অযোগ্যতা প্রত্যাহার করার পরে এটি স্বাভাবিক নিয়মেই হওয়া উচিত। এমপি হিসেবে তাঁর সুযোগ-সুবিধাও পাওয়া উচিত।

এই মামলার প্রেক্ষাপট কী?
১৩ এপ্রিল, ২০১৯-এ, রাহুল লোকসভা নির্বাচনের জন্য প্রচার করছিলেন। কর্ণাটকের কোলারে একটি নির্বাচনী সমাবেশে তিনি হিন্দিতে বলেছিলেন, 'কেন সব চোর, সে নীরব মোদী, ললিত মোদী বা নরেন্দ্র মোদীই হোক না-কেন, উপাধি মোদী?' সেই সময় তিনি পলাতক জুয়েলারি ব্যবসায়ী নীরব মোদী এবং প্রাক্তন ক্রিকেট প্রশাসক ললিত মোদীর নাম উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করছিলেন। যাঁদের উভয়ের বিরুদ্ধেই আর্থিক জালিয়াতির অভিযোগ রয়েছে। রাহুলের বক্তৃতার পরের দিন, গুজরাটের বিজেপি নেতা এবং গুজরাটের প্রাক্তন রাষ্ট্রমন্ত্রী পূর্ণেশ মোদী সুরাটের মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে একটি ব্যক্তিগত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। যাতে তিনি কংগ্রেস নেতার বিরুদ্ধে মোদী পদবির ব্যক্তিদেরকে মানহানি করার অভিযোগ এনেছিলেন।

লোকসভায় অযোগ্য
২৩ শে মার্চ, ২০২৩-এ, ম্যাজিস্ট্রেট এইচএইচ ভার্মা রাহুলকে আইপিসি ধারা ৫০০-এর অধীনে ফৌজদারি মানহানির জন্য দোষী সাব্যস্ত করেন। তাঁকে সেই ধারার অধীনে অনুমোদিত সর্বোচ্চ সাজা দিয়েছেন। যা হল, দুই বছরের জেল। ট্রায়াল কোর্টের এই সিদ্ধান্ত জনগণের প্রতিনিধিত্ব আইন, ১৯৫১-এর ধারা ৮(৩) অনুযায়ী নেওয়া হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে, 'কোনও অপরাধের জন্য দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তি এবং কমপক্ষে দুই বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত ব্যক্তিকে এই ধরনের তারিখ থেকে অযোগ্য ঘোষণা করা হবে। দোষী সাব্যস্ত তার মুক্তির পর থেকে আরও ছয় বছরের জন্য অযোগ্য বলে বিবেচিত হবে।' ফলে ২৪ মার্চ, লোকসভা সচিবালয় একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানায় যে রাহুল তার দোষী সাব্যস্ত হওয়ার তারিখ ২৩ মার্চ থেকে লোকসভায় অযোগ্য হয়ে গিয়েছেন।

আরও পড়ুন- ৩৭০ ধারা বিলুপ্তির পর চার বছর: কতটা বদলাল উপত্যকার নিরাপত্তা পরিস্থিতি?

এরপর কী করলেন রাহুল গান্ধী?
চলতি বছরের ৩ এপ্রিল রাহুল পরবর্তী উচ্চ আদালত, সুরাট দায়রা আদালতে আপিল করেন। তিনি দুটি আবেদন করেন। তার মধ্যে একটি দুই বছরের সাজা স্থগিত করার জন্য। অন্যটি দোষী সাব্যস্ত হওয়ার বিরুদ্ধে। ২০ এপ্রিল অতিরিক্ত দায়রা জজ আরপি মোগেরা উভয় আবেদনই খারিজ করে দেন। এরপর রাহুল গুজরাট হাইকোর্টে আপিল করেন। ৭ জুলাই, বিচারপতি হেমন্ত প্রচ্ছক আপিল খারিজ করে দিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন যে দায়রা আদালত তার দোষী সাব্যস্ত হওয়ার ওপর স্থগিতাদেশ দিতে অস্বীকার করেছে। সেই অস্বীকার ছিল 'ন্যায্য এবং আইনী'। এরপরই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন রাহুল গান্ধী।

rahul gandhi Lok Sabha Supreme Court of India
Advertisment