Advertisment

এসপিজি নিরাপত্তা কী, কারা এই সুবিধা পেয়ে থাকেন?

এসপিজি বাহিনীতে ৩০০০ সদস্য রয়েছে। গান্ধী পরিবারের এসপিজি নিরাপত্তা হঠিয়ে নিলে এখন কেবলমাত্র প্রধানমন্ত্রী মোদীই এসপিজি নিরাপত্তার আওতায় থাকবেন।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
SPG

কেন্দ্রীয় সরকার সোনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধী এবং প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর এসপিজি নিরাপত্তা প্রত্যাহার করে নিতে চলেছে। গান্ধী পরিবারের সদস্যরা এখন থেকে জেড প্লাস নিরাপত্তা পাবেন, তাঁদের সঙ্গে এবার থেকে থাকবেন সিআরপিএফ কম্যান্ডোরা।

Advertisment

গান্ধী পরিবারের সদস্যদের উপর সরাসরি কোনও আক্রমণের আশঙ্কা নেই বলে নিরাপত্তা কমানোর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অগাস্ট মাসে সরকার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের নিরাপত্তাও কমিয়ে দিয়েছিল।

নিরাপত্তার মাত্রা কীভাবে স্থির হয়?

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো (আইবি) এবং রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিসিস উইং (র)-এর মতন গোয়েন্দা সংস্থার কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এ বিষয়গুলির মূল্যায়ন করে থাকে।

তবে যেহেতু গোয়েন্দা সংস্থাগুলি স্বরাষ্ট্র ও বিদেশ মন্ত্রক ছাড়া আর কারও কাছে জবাবদিহিতে বাধ্য নয়, ফলে নিরাপত্তা বিষয়ে ছলচাতুরি হতেই পারে।

সুরক্ষার বিভিন্ন স্তরগুলি কীরকম?

মোটামুটি ৬ ধরনের নিরাপত্তা বলয়ের বন্দোবস্ত রয়েছে। এগুলি হল এক্স, ওয়াই, ওয়াই প্লাস, জেড, জেড প্লাস এবং এসপিজি। এসপিজি নিরাপত্তা দেওয়া হয়ে থাকে প্রধানমন্ত্রী এবং তাঁর নিকট পরিবারের জন্য। বাকি ক্ষেত্রগুলিতে কে কোন নিরাপত্তা পাবেন তা স্থির করে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার।

এক্স ক্যাটিগরির নিরাপত্তায় সাধারণভাবে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকেন একজন বন্দুকধারী, ওয়াই ক্যাটিগরিতে চলমান নিরাপত্তার জন্য একজন বন্দুক ধারী এবং স্থির নিরাপত্তার জন্য একজন (আরও চারজন রোটেশন ভিত্তিতে), ওয়াই প্লাস ক্যাটিগরিতে রোটেশন ভিত্তিতে দুজন পুলিশকর্মী নিরাপত্তার জন্য এবং একজন (আরও চারজন রোটেশন ভিত্তিতে) বাড়ি পাহারার জন্য, জেড ক্যাটিগরিতে মোবাইল সিকিউরিটির জন্য ৬জন বন্দুকধারী এবং বাড়ি পাহারার জন্য ২জন (আরও ৮জন রোটেশন ভিত্তিতে), জেড প্লাস ক্যাটিগরিতে মোবাইল সিকিউরিটির জন্য ১০ জন নিরাপত্তা কর্মী এবং বাড়ির নিরাপত্তার জন্য আরও দুজন (রোটেশান ভিত্তিতে আরও আটজন)।

এসপিজি কারা? তারা কাদের নিরাপত্তা দেয়?

এসপিজি হল একটি এলিট বাহিনি যারা দেশের প্রধানমন্ত্রী, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এবং তাঁদের পরিবারের নিকট সদস্যদের নিরাপত্তা দিয়ে থাকে। এই বাহিনীতে ৩০০০ সদস্য রয়েছে। গান্ধী পরিবারের এসপিজি নিরাপত্তা হঠিয়ে নিলে এখন কেবলমাত্র প্রধানমন্ত্রী মোদীই এসপিজি নিরাপত্তার আওতায় থাকবেন।

এসপিজি শারীরিক দক্ষতা, দ্বন্দ্বযুদ্ধ, লক্ষ্যভেদ প্রভৃতি বিষয়ে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। এজের সমস্ত কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সংস্থাগুলি সহায়তা করে থাকে। এসপিজি স্পেশাল এজেন্টরা প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকার সময়ে কালো রঙের বিদেশি ধাঁচের ফর্মাল বিজনেস স্যুট পরে থাকেন, তাঁদের চোখে থাকে সানগ্লাস এবং যোগাযোগের জন্য তাঁদের কানে থাকে ইয়ার পিস, গোপনে তাঁরা হ্যান্ডগান বহন করেন। বিভিন্ন সময়ে তাঁরা সাফারি স্যুটও পরে থাকেন।

এসপিজিতে স্পেশাল অপারেশন কম্যান্ডোও রয়েছে যারা অত্যাধুনিক অ্যাসল্ট রাইফেল বহন করেন, বুলেটপ্রুফ পোশাক পরেন এবং এলবো ও নি প্যাড পরিধান করেন।

এসপিজি কবে শুরু হল?এর ইতিহাস কী?

১৯৮৪ সালে ইন্দিরা গান্ধী নিজের দেহরক্ষীদের হাতে নিহত হওয়ার পর, রাজীব গান্ধী সরকার প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার জন্য বিশেষ ক্যাডার তৈরির সিদ্ধান্ত নেয়। ১৯৮৯ সালে ভিপি সিং ক্ষমতায় আসার পর তাঁর সরকার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর এসপিজি নিরাপত্তা প্রত্যাহার করে নেয়। কিন্তু ১৯৯১ সালে রাজীব গান্ধীর মৃত্যুর পর এসপিজি আইন সংশোধন করা হয় এবং সংশোধিত আইনে সমস্ত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ও তাঁদের পরিবারকে অন্তত ১০ বছর নিরাপত্তা দেওয়ার বিধি তৈরি হয়।

২০০৩ সালে অটল বিহারী বাজপেয়ী সরকার ক্ষমতায় আসার পর এসপিজি আইনে ফের সংশোধন করা হয় এবং ন্যূনতম ১০ বছরের সময়সীমাকে ন্যূনতম এক বছর করা হয়। এর পর তাঁরা ওই নিরাপত্তা পাবেন কিনা তা স্থির করবে সরকার, এ কথাও বলা হয় সংশোধিত আইনে। বাজপেয়ী সরকারের আমলে এইচ ডি দেবগৌড়া, আই কে গুজরাল এবং পি ভি নরসীমা রাওয়ের মতন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীদের এসপিজি নিরাপত্তা প্রত্যাহৃত হয়।

তবে বাজপেয়ী নিজে কিন্তু তাঁর মৃত্যু অবধি এসপিজি নিরাপত্তার সুবিধা ভোগ করেছিলেন। বর্তমান এসপিজি আইনানুসারে, কোনও বর্তমান বা প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের সদস্যরা নিরাপত্তা প্রত্যাখ্যান করতে পারেন। মনমোহন সিংয়ের মেয়াদ শেষ হবার পর এসপিজি নিরাপত্তা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন তাঁর মেয়ে।

rahul gandhi sonia gandhi PM Narendra Modi
Advertisment