Advertisment

Explained: কংগ্রেস কেন বলছে মহিলা সংরক্ষণ বিল আসলে তাদেরই, কী করেছিলেন রাজীব গান্ধী?

মহিলা সংরক্ষণ বিল ২০১০ সালেও রাজ্যসভায় পাশ হয়েছিল। কিন্তু, তারপর আর বিষয়টা এগোয়নি।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Women’s reservation Bill.jpg 1

সংরক্ষণের দাবিতে নারী সংগঠনগুলোর প্রতিবাদ।

রাজনীতিতে নারীর বৃহত্তর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার বিষয়গুলো স্বাধীনতার আগে এবং গণপরিষদেও আলোচিত হয়েছিল। স্বাধীন ভারতে, এই ইস্যুটি গতি পায় ১৯৭০-এর দশকে। আন্তর্জাতিক মহিলা বর্ষ, ১৯৭৫-এর আগে মহিলাদের অবস্থা সম্পর্কে একটি প্রতিবেদনের জন্য ১৯৭১ সালে রাষ্ট্রসংঘের অনুরোধের জবাবে, কেন্দ্রীয় শিক্ষা ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রক ভারতে মহিলাদের অবস্থা (সিএসডব্লিউআই) জানার জন্য একটি কমিটি নিযুক্ত করে। যার কাজ ছিল- সাংবিধানিক, প্রশাসনিক, এবং আইনি বিধান, যা মহিলাদের সামাজিক অবস্থান, তাঁদের শিক্ষা এবং কর্মসংস্থানের ওপর প্রভাব ফেলে, তার প্রভাব কতটা, তা জানা।

Advertisment

কমিটির সুপারিশ

কমিটি তার রিপোর্ট 'সমতার দিকে'-তে জানায় যে, দেশের রাজ্যগুলো লিঙ্গ সমতা স্থাপনের সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে। আর, তারপরই বিভিন্ন রাজ্য স্থানীয় প্রশাসনে মহিলাদের নিযুক্তির কথা ঘোষণা করতে শুরু করে। ১৯৮৭ সালে, রাজীব গান্ধীর নেতৃত্বাধীন সরকার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মার্গারেট আলভার নেতৃত্বে একটি ১৪ সদস্যের কমিটি তৈরি করে। যে কমিটি ১৯৮৮ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত 'জাতীয় দৃষ্টিকোণ পরিকল্পনা' তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীদের হাতে তুলে দিয়েছিল। কমিটি তার ৩৫৩ পাতার সুপারিশপত্রে নির্বাচিত সংস্থায় মহিলাদের প্রতিনিধিত্ব বাড়ানোর ওপর জোর দিয়েছে। এই সুপারিশ প্রধানমন্ত্রী পিভি নরসিমহা রাওয়ের সরকারকে সংবিধানের ৭৩ এবং ৭৪তম সংশোধনীর দিকে চালিত করেছিল। যে সংশোধনী পঞ্চায়েত এবং পুরস্তরের সমস্ত প্রতিষ্ঠানে এক-তৃতীয়াংশ আসনে মহিলা সংরক্ষণ নিশ্চিত করেছিল। বিভিন্ন রাজ্যে তফশিলি জাতি, উপজাতি এবং ওবিসি মহিলাদের জন্যও আসন সংরক্ষণ করা হয়।

আরও পড়ুন- লোকসভায় পেশ মহিলা সংরক্ষণ বিল, চ্যালেঞ্জ কী কী?

মহিলা সংরক্ষণ বিল ও দেবগৌড়া সরকার

সংবিধান সংশোধনীর পর প্রথম মহিলা সংরক্ষণ বিল আনে দেবগৌড়ার সরকার। কারণ, সেই সময় সংবিধান সংশোধনীর পরে বিভিন্ন মহল থেকে আইনসভায় মহিলা সংরক্ষণের দাবি জোরদার হয়ে উঠেছিল। ১৯৯৬ সালের ১২ সেপ্টেম্বর, প্রধানমন্ত্রী এইচডি দেবগৌড়ার সরকার সংবিধানের (৮১তম সংশোধনী) বিল পেশ করে। যা সংসদ এবং বিধানসভায় মহিলাদের জন্য এক-তৃতীয়াংশ আসন সংরক্ষণের প্রস্তাব দিয়েছিল। দলীয় লাইন হওয়ায় অনেক সাংসদ ওই দিনে সর্বসম্মতিক্রমে এই বিল পাস করানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু, ওবিসি সাংসদরা বিলের বিরোধিতা করেছিলেন। বিলে পরিবর্তন চেয়ে তীব্র প্রতিবাদে সরব হয়েছিলেন।

আরও পড়ুন- মহিলা সংরক্ষণ বিল! সবক্ষেত্রেই এক-তৃতীয়াংশ সংরক্ষণ, জটিল বিষয় জানুন সহজে

উমা ভারতীর দাবি

খাজুরাহোর বিজেপি সাংসদ উমা ভারতী বলেছিলেন, 'আমার দাবি যে পঞ্চায়েতিরাজ ব্যবস্থার মত অনগ্রসর শ্রেণির মহিলাদের জন্যও সংরক্ষণ করা উচিত। কারণ, অনগ্রসর শ্রেণির মহিলারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত।' প্রধানমন্ত্রী সম্মত হন যে সংসদ সদস্যদের দ্বারা উত্থাপিত কিছু বিষয় পুরোপুরি খারিজ করা যাবে না। তিনি সংসদকে বলেছিলেন একদিনে সব দলের নেতাদের নিয়ে একটি বৈঠক ডাকবেন। দেবগৌড়ার ইউনাইটেড ফ্রন্টে তাঁর নিজের জনতা দল এবং মুলায়ম সিং যাদবের সমাজবাদী পার্টি-সহ ওবিসি সমর্থনপুষ্ট দলগুলো ছিল। কংগ্রেস এই জোটকে বাইরে থেকে সমর্থন করেছিল।

আরও পড়ুন- মহিলা সংরক্ষণ বিল: হইহই করে আইনে পরিণত হলেও ২০২৪-এ কার্যকর হবে না! কেন, তাহলে কবে?

গীতা মুখোপাধ্যায় কমিটি

প্রবীণ সিপিআই নেতা গীতা মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে সংসদের একটি নির্বাচন কমিটির কাছে বিলটি পাঠানো হয়েছিল। লোকসভার ২১ জন এবং রাজ্যসভার ১০ জন সদস্যকে নিয়ে তৈরি এই কমিটিতে শরদ পাওয়ার, নীতীশ কুমার, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, উমা ভারতী এবং প্রয়াত সুষমা স্বরাজ-সহ বেশ কয়েকজন বিশিষ্ট নেতা ও নেত্রী ছিলেন। সেই কমিটি বা প্যানেল জানায়, তফশিলি জাতি-উপজাতিদের মধ্যেও মহিলাদের জন্য আসন সংরক্ষণের ব্যবস্থা আছে। কিন্তু, ওবিসি মহিলাদের আসন সংরক্ষণের কোনও সুবিধা নেই। তাই কমিটি সরকারকে সুপারিশ করে, 'সঠিক সময়ে ওবিসি মহিলাদের জন্যও আসন সংরক্ষণের ব্যবস্থা করতে। যাতে ওবিসি মহিলারাও আসন সংরক্ষণের সুবিধা পান।'

Parliament Rajiv Gandhi CONGRESS
Advertisment