সোমবার রাজ্যসভার মার্শালদের দেখা যায় নতুন পোশাকে। তাঁদের পরনে ছিল ঘন রঙের স্যুট এবং উঁচু টুপি। এ নিয়ে সমালোচনা উঠেছে সেনা আধিকারিকদের মধ্যে থেকে। বিরোধীরা তো সরব হয়েইছেন। এই পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যসভার চেয়ারম্যান এম বেঙ্কাইয়া নাইডু নতুন পোশাক নিয়ে পর্যালোচনার নির্দেশ দিয়েছেন।
যা ছিল- এতদিন পর্যন্ত রাজ্যসভার মার্শালরা সাদা রঙের সাফারি স্যুট ও পাগড়ি পরতেন। পুরনো সাংসদরা বলছেন, অন্তত ১৯৬৫ সালের পর থেকে এ পোশাকে বদল হয়নি- অর্থাৎ ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে এই পোশাকেরই চলন রয়েছে। সোমবার এই নতুন পোশাক সর্বসমক্ষে এলেও আগের দিন রাজ্যসভার সাংসদদের বিষয়টি নিয়ে জানিয়েছিলেন বেঙ্কাইয়া নাইডু।
সভার কাজ যথাযথ ভাবে চালানোর জন্য জনা ছয়েক মার্শাল চেয়ারম্যান, ডেপুটি চেয়ারম্যান এবং ভাইস চেয়ারম্যানকে সাহায্য করে থাকে। এঁদের নিয়োগ এবং চাকরির শর্তাবলী স্থির করার দায়িত্বে থাকেন চেয়ারম্যান।
বদল কেন- রাজ্যসভার সূত্র ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছে মার্শালরা নিজেদের সুবিধের জন্য পোশাক বদলের আবেদন জানিয়েছিলেন, তাঁরা একটু আধুনিক দর্শনও হতে চেয়েছিলেন। সূত্র মোতাবেক কর্মক্ষেত্রে তাঁদের জুনিয়র, যাঁরা সাংসদদের সাহায্য করে থাকেন, তাঁদের সঙ্গে একই রকম পোশাকে সজ্জিত হওয়া নিয়েও ক্ষোভ ছিল রাজ্যসভার মার্শালদের মনে।
এক আধিকারিক জানিয়েছেন, মার্শালরা দীর্ঘদিন ধরে তাঁদের পোশাক পরিবর্তনের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। তাঁদের বক্তব্য মার্শালরা অফিসার গোত্রের, কিন্তু এই পোশাক নন-গেজেটেড অফিসাররাও পরিধান করে থাকেন। এ ছাড়া অনেকেই বলেছিলেন পাগড়ি পরাটা বড়ই সময়সাধ্য ব্যাপার।
পোশাকের নতুন ডিজাইন নিয়ে বহুস্তরীয় আলোচনা হয় দফতরে। সূত্র জানিয়েছে, বাইরের কোনও বিশেষজ্ঞের সঙ্গে এ বিষয়ে আলাপ-আলোচনা হয়নি, যা হয়েছে তা আভ্যন্তরীণ আলোচনার ভিত্তিতেই।
এত বিক্ষোভ কেন- মার্শালদের নতুন পোশাক আর সেনা অফিসারদের পোশাক একই রকম। সেনাবাহিনীর প্রাক্তন প্রধান ভিপি মালিক টুইট করে বলেছেন, অসামরিক ব্যক্তিদের সামরিক পোশাক নকল করা বেআইনি এবং নিরাপত্তার দিক থেকেও ঠিক নয়। আশা করি এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে ভিপি মালিক বলেন, একটা আইন রয়েছে, সেটা সর্বদা মান্য করা উচিত। সম্প্রতিই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক এক নির্দেশ জারি করে বলেছে সেনাবাহিনীর বাইরের কেউ সামরিক পোশাক নকল করতে পারবে না। এ ধরনের কাজ করলে নিরাপত্তার সংকট দেখা দেয়। আমি বিষয়টা নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের কাছে গিয়েছিস দফতরও অনেকবার তা করেছে। বিশেষ করে সংসদ অতীতে একাধিক হামলার মুখে পড়েছে।
হাউসের প্রাক্তন এক প্রিসাইডিং অফিসার নাম গোপন রাখার শর্তে বলেছেন, এখন ওঁদের দেখলে মনে হচ্ছে ঠিক যেন রাজ্যপালের এডিসি বা রাষ্ট্রপতির সামরিক সচিব। আগের পোশাকটায় একটু পুরনো ধরনের গ্ল্যামার ছিল, রাজ্যসভার পরিচয়ের সঙ্গে জুড়েও গিয়েছিল। ভাগ্যিস লোকসভাতেও এরকম বদল হয়নি।
রাজ্যসভার মহাসচিব দেশ দীপক ভার্মার বক্তব্য জানা যায়নি।