Advertisment

ধর্ষণ ও হত্যার পরিমাণ বেড়েছে, বেড়েছে মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধও

পুলিশের রিসার্চ ও ডেভেলপমেন্ট ব্যুরোর এক আধিকারিকের কথায়, "এরকম হতেই পারে যে ধর্ষণের সাজা হিসেবে মৃত্যুদণ্ড ঘোষিত হবার পর অপরাধীরা ধর্ষণের পর হত্যা করছে।"

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
crime against women ncrb

প্রতীকী ছবি

২০১৭ সালে ধর্ষণের পর যতজন মহিলাকে খুন করা হয়েছিল, ২০১৮ সালে সে পরিমাণ বেড়েছে। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো (এনসিআরবি)-র সাম্প্রতিকতম তথ্য অনুসারে, ২০১৭ সালের তুলনায় ২০১৮ সালে ধর্ষণের সঙ্গে হত্যার পরিমাণ বেড়েছে ৩১ শতাংশ। এই প্রথম এনসিআরবি এ ধরনের তথ্য প্রকাশ করল। ধর্ষণ ও হত্যা সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহ শুরু হয়েছিল ২০১৭ সালে। তার আগে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায়, হত্যা হিসেবে নথিবদ্ধ হত।

Advertisment

২০১৭ সালে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা একযোগে ঘটেছে ২২৩টি। ২০১৮ সালে সে সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৯১-তে। সবচেয়ে বেশি এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে আসামে (৬৬)। এর পর রয়েছে মধ্য প্রদেশ (৪৬), উত্তর প্রদেশ (৪১), ও হরিয়ানা (২৬)। ২০১৭ সালে সবচেয়ে বেশি ধর্ষণ-হত্যার ঘটনা ঘটেছিল উত্তর প্রদেশে (৬৪)। এর পরছিল আসাম (২৭), মহারাষ্ট্র (২৬) ও মধ্য প্রদেশ (২১)।

পুলিশের রিসার্চ ও ডেভেলপমেন্ট ব্যুরোর এক আধিকারিকের কথায়, "এরকম কেন ঘটছে তা বলা মুশকিল। এরকম হতেই পারে যে ধর্ষণের সাজা হিসেবে মৃত্যুদণ্ড ঘোষিত হবার পর অপরাধীরা ধর্ষণের পর হত্যা করছে। কিন্তু এ ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়ার জন্য আরও কয়েক বছরের তথ্য লাগবে।"

২০১৮ সালে মহিলাদের ধর্ষণের মোট ৩৩ হাজার মামলা নথিভুক্ত হয়েছে, যে সংখ্যা ২০১৭সালের (৩২,৫৫৯) চেয়ে সামান্য বেশি।

NCRB এনসিআরবি তথ্য

২০১৮ সালের তথ্য থেকে দেখা যাচ্ছে নারী ও শিশুরা সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছেন। যদিও ২০১৮ সালে সব মিলিয়ে অপরাধের হার (প্রতি এক লক্ষ জনসংখ্যায়) কমেছে, কিন্তু মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধ বেড়েছে। ২০১৭ সালে অপরাধের হার ছিল প্রতি লক্ষে ৩৮৮.৬, ২০১৮ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৩৮৩.৫-এ। মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধ ৫৭.৯ থেকে বেড়ে ৫৮.৮-এ দাঁড়িয়েছে। শিশুদের বিরুদ্ধে অপরাধের হার ২৮.৯ থেকে বেড়ে ৩১.৮-এ দাঁড়িয়েছে।

এ বিষয়ে বিবেচনার জন্য অপরাধের হারের দিকে চোখ রাখলে বিষয়টি স্পষ্ট হয়। উত্তর প্রদেশের মত রাজ্যে অপরাধের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি থাকে, কিন্তু জনসংখ্যার হার বেশি হওয়ার সুবাদে, অপরাধের হার কম থাকে সেখানে। অপরাধের হারের উচ্চমাত্রা মানেই আইনশৃঙ্খলার অবস্থা খারাপ এমন নয়। পুলিশ যদি অপরাধ নথিভুক্তি বেশি পরিমাণে করে, তাহলে যেখানে পুলিশ এফআইআর নিতে প্রত্যাখ্যান করে, সেখানকার চেয়ে প্রথমোক্ত জায়গায় অপরাধের হার বেশি পরিদর্শিত হবে।

২০১৮ সালে মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের সংখ্যা ছিল ৩,৭৮,২৭৭টি। ২০১৭ সালের (৩,৫৯,৮৪৯)-এর তুলনায় সে সংখ্যা ৭ শতাংশ বেশি। এ ব্যাপারে সবার প্রথমে উঠে এসেছে উত্তর প্রদেশ (৫৯,৪৪৫)-এর নাম। তার পরেই রয়েছে মহারাষ্ট্র (৩৫,৪৯৭) ও পশ্চিমবঙ্গ (৩০,৩৯৪)। মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের হারে সবার আগে আসছে আসামের নাম (১৬৬)। তার পর রয়েছে দিল্লি (১৪৯)।

মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধ সবচেয়ে বেশি ঘটেছে স্বামী ও তাঁর আত্মীয়ের নিষ্ঠুরতা-র আওতায় (৩১.৯ শতাংশ)। এর পর রয়েছে, শ্লীলতাহানির উদ্দেশ্যে মহিলাদের উপর আক্রমণ (২৭.৬ শতাংশ), মহিলাদের অপহরণ (২২.৫ শতাংশ), ও ধর্ষণ (১০.৩ শতাংশ)। রিপোর্টেবলা হয়েছে, প্রতি লক্ষ নারী জনস্খ্যায় অপরাধের হার ২০১৮ সালে ছিল ৫৮.৮ শতাংশ। ২০১৭ সালে এই হার ছিল ৫৭.৯ শতাংশ।

শিশুদের ক্ষেত্রে রিপোর্টে বলা হয়েছে, শতকরা হিসেবে শিশুদের বিরুদ্ধে অপরাধ ২০১৮ সালে সবচেয়ে বেশি হয়েছে অপহরণ (৪৪.২ শতাংশ) ও পকসো আইন, ২০১২-র (৩৪.৭ শতাংশ) আওতায়। এর মধ্যে রয়েছে শিশু ধর্ষণও। প্রতি লক্ষ শিশুতে অপরাধের হার ২০১৮ সালে ছিল ৩১.৮, ২০১৭ সালে এই হার ছিল ২৮.৯।

Advertisment