গত ১৮ দিন ধরে, দক্ষিণ মণিপুরে মোতায়েন অসম রাইফেলসের প্রায় সাতটি ব্যাটালিয়ন। এই এলাকায় মেইতেইসরা সংখ্যাগরিষ্ঠ। অসম রাইফেলসের জওয়ানদের অভিযোগ, তাঁরা টাটকা রেশন পাননি। কারণ, স্থানীয় বাসিন্দারা অসম রাইফেলসের ক্যাম্পে রেশন পৌঁছনোয় বাধা দিচ্ছেন। ভারতে সবচেয়ে দীর্ঘসময় ধরে সেবাকার্যে নিযুক্ত আধাসামরিক বাহিনী অসম রাইফেলস পক্ষপাতিত্বমূলক আচরণ করছে। তারা কুকিদের সহযোগিতা করছে। এমনই অভিযোগ মেইতেইসদের। সেই কারণেই তারা রেশন পৌঁছনোয় বাধাদান করছেন।
অসম রাইফেলসের অভিযোগ
অসম রাইফেলসের এক আধিকারিক এই প্রসঙ্গে দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, 'মেইতেইসরা আমাদের বিরুদ্ধে কুকিদের প্রতি পক্ষপাতমূলক আচরণ করার অভিযোগ করেছে। হুমকি দিয়েছে যে আমাদের রেশনবোঝাই ট্রাকগুলোকে এলাকা পার হতে দেবে না। আমরা ওই সব ব্যারিকেডগুলো ভেঙে ফেলেছি। কিন্তু, আমাদের রেশনের বেশিটা ট্রাকেই পচে গেছে।'
অসম রাইফেলস
অসম রাইফেলস স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের (MHA) প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণাধীন ছয়টি কেন্দ্রীয় সশস্ত্র পুলিশ বাহিনীর (CAPFs) মধ্যে একটি। অন্যান্য বাহিনীগুলো হল সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্স (সিআরপিএফ), বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (বিএসএফ), ইন্দো-তিব্বত বর্ডার পুলিশ (আইটিবিপি), সেন্ট্রাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিকিউরিটি ফোর্স (সিআইএসএফ) এবং সশস্ত্র সীমা বল (এসএসবি)। অসম রাইফেলস ভারতীয় সেনার সঙ্গে দেশের উত্তর-পূর্বে আইনশৃঙ্খলা রক্ষণাবেক্ষণে দায়িত্বপ্রাপ্ত। এই অঞ্চলে ভারত-মায়ানমার সীমান্ত পাহারা দেয়। এর জওয়ানের সংখ্যা ৬৩,০০০-এর বেশি। ৪৬টি ব্যাটালিয়ন আছে। এছাড়াও আছে প্রশাসনিক এবং প্রশিক্ষণের সঙ্গে যুক্ত কর্মীরা।
আরও পড়ুন- ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়: ল্যান্ডফল কাকে বলে, কখন হয় এবং এর কী প্রভাব পড়ে জনজীবনে?
এর বৈশিষ্ট্য
দ্বৈত নিয়ন্ত্রণ কাঠামো এর বৈশিষ্ট্য। অসম রাইফেলসের প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। অপারেশনাল নিয়ন্ত্রণ প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। বেতন এবং পরিকাঠামো সরবরাহ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। তবে, কর্মী মোতায়েন, পোস্টিং, বদলি, ডেপুটেশনের দায়িত্বে সেনাবাহিনী। অসম রাইফেলসের ডিজি, আইজ, হেডকোয়ার্টার সেনাবাহিনীর মাধ্যমে পরিচালিত হয়। ভারতীয় সেনার এক লেফটেন্যান্ট জেনারেল এই বিষয়গুলো দেখেন। এসব নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের বিবাদও রয়েছে। উভয়পক্ষই এই বাহিনীর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ চায়। তবে, এখনও কোনও মীমাংসা হয়নি।