Rationalist Narendra Dabholkhar’s murder case: যুক্তিবাদী ড. নরেন্দ্র অচ্যুত দাভোলকর হত্যার ঘটনার পর, প্রায় একদশক হতে চলল। শুক্রবার (১০ মে), পুনের ইউএপিএ (বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইন) আদালত সাজা শোনাল। অভিযুক্ত শচীন আন্দুরে ও শরদ কলসকরকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। অভিযুক্ত বাকি তিনজন- ড. বীরেন্দ্রসিং তাওড়ে, সঞ্জীব পুনালেকর ও তাঁর সঙ্গী বিক্রম ভাবেকে প্রমাণের অভাবে আদালত বেকসুর খালাস ঘোষণা করেছে।
পরপর বুদ্ধিজীবীদের হত্যা
দাভোলকরের হত্যা ও তিনটি প্রায় একই কায়দায় হত্যাকাণ্ড- কমিউনিস্ট নেতা গোবিন্দ পানসারে (২০১৫, ফেব্রুয়ারি), কন্নড় বুদ্ধিজীবী এমএম কালবুর্গি (২০১৫, আগস্ট) ও বেঙ্গালুরুর সাংবাদিক গৌরী লঙ্কেশ (২০১৭, সেপ্টেম্বর)-এর হত্যাকাণ্ড দেশজুড়ে বিক্ষোভের জন্ম দিয়েছিল। অভিযোগ ওঠে, নানা ধরনের উগ্রপন্থা সুস্থ ভাবনাচিন্তা এবং বক্তব্যের স্বাধীনতাকে খর্ব করছে। পরবর্তী কয়েক বছরে তদন্তকারীরা এই সব খুনের আদ্যপান্ত খতিয়ে দেখেন। প্রত্যেকটি খুনের মধ্যে মিল খুঁজে পান। তদন্তকারীদের সন্দেহ হয়, খুনগুলোর পিছনে একই চক্র এবং একই উদ্দেশ্য কাজ করেছে।
কে এই নরেন্দ্র দাভোলকর
৮০-র দশকে কুসংস্কার দূরীকরণের লক্ষ্যে দাভোলকর, 'মহারাষ্ট্র অন্ধ্রশ্রদ্ধা নির্মূলন সমিতি (মানস/MANS)' গড়ে তোলেন। তার আগে একদশক ধরে তিনি চিকিৎসক হিসেবে সুনাম অর্জন করেছিলেন। কিন্তু, জনসচেতনতামূলক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন গড়ে তুলে সেই চিকিৎসা পেশা দাভোলকর ছেড়ে দেন। তারপর থেকেই তাঁকে কুসংস্কারের বিরুদ্ধে লাগাতার সোচ্চার হতে দেখা যায়। এই সময় তিনি কুসংস্কার-বিরোধী বেশ কিছু আইন তৈরির জন্য রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে ওঠাবসা শুরু করেন। এজন্য অবশ্য তাঁকে কম বাধার মুখে পড়তে হয়নি। বিভিন্ন সংগঠন এবং রাজনৈতিক দল দাভোলকরের বিরোধিতা শুরু করে। যাতে দাভোলকরের চেষ্টা বাধা পায়। কুসংস্কার-বিরোধী আইন তৈরি প্রক্রিয়াও ধাক্কা খায়।
আরও পড়ুন- চিনের চরম উসকানি! ভারতের অঞ্চল ‘কেড়ে’ তীব্র সীমান্ত বিবাদ বাড়াল প্রতিবেশী নেপাল
দাভোলকর হত্যা
কাকতালীয় হলেও, দাভোলকরের হত্যাকাণ্ডের কয়েকদিন পরে মহারাষ্ট্র সরকার দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে থাকা কুসংস্কার-বিরোধী আইন এবং কালাজাদু-বিরোধী বিল পাশ করায়। ২০১৩ সালে এই বিল আইনে পরিণত হয়। মারাঠি সাপ্তাহিক এবং যুক্তিবাদী সংবাদপত্র, 'সাধনা'র সম্পাদক হিসেবে দাভালকর সামাজিক বৈষম্য দূরীকরণে জোর দিয়েছিলেন। ২০১৩ সালের ২০ আগস্ট, দাভালকর অন্যদিনের মতই মর্নিং ওয়াকে বের হয়েছিলেন। সেই সময় পুণের ওঙ্কারেশ্বর মন্দিরের কাছে একটি সেতুর ওপর সকাল ৭টা ২০ নাগাদ তিনি গুলিবিদ্ধ হন। আততায়ীদের সংখ্যা ছিল দুই।