এখনও স্থলপথে আক্রমণ করেনি
ইজরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট ১০ অক্টোবর গাজার কাছে তাঁর সৈন্যদের সঙ্গে কথা বলার সময় রয়টার্সকে উদ্ধৃত করে বলেন, 'আমরা আকাশ থেকে আক্রমণ শুরু করেছি। পরে, আমরা স্থলপথেও হামলা শুরু করব।' এরপর দুই সপ্তাহ পেরিয়ে গেছে। তারও আগে, কট্টর প্যালেস্তাইনি ইসলামি সংগঠন হামাস কয়েক দশকের মধ্যে ইজরায়েলে সবচেয়ে মারাত্মক হামলা চালিয়েছে। কিন্তু, এখনও বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) ইজরায়েলি স্থলবাহিনী হামাসের ঘাঁটিতে স্থল আক্রমণ করেনি। ইজরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) এই অবস্থানকে জানিয়ে বুধবার সেদেশের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেছেন যে ইজরায়েল গাজায় স্থল আক্রমণের প্রস্তুতি নিচ্ছে। তবে, অভিযান কখন হবে, সেনিয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে, আইডিএফ হামলার জন্য প্রস্তুত। এর ট্যাংক প্রস্তুত এবং অপেক্ষা করছে। এতই যদি প্রস্তুতি, তখন ইজরায়েল গাজায় স্থল আক্রমণে যাচ্ছে না কেন?
আমেরিকান ফ্যাক্টর
এমন খবর রয়েছে যে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন ইজরায়েলকে গাজায় স্থল আক্রমণ বিলম্বিত করার পরামর্শ দিয়েছে। আমেরিকা এবং ইজরায়েল, উভয়েই পণবন্দিদের নিয়ে আলোচনার জন্য আরও সময় চান। অভিযান চালালে পণবন্দিদের ক্ষতি হতে পারে। সেই কারণে, তাঁরা সময় নষ্ট করছেন। ইজরায়েলি ইনস্টিটিউট ফর রিজিওনাল অ্যান্ড ফরেন পলিসিস, মিটভিমের বোর্ড মেম্বার ইয়োনাটান টুভাল সোশ্যাল মিডিয়া সাইট এক্স-এ পোস্ট করেছেন, 'মার্কিন আধিকারিকরা আমাকে নিশ্চিত করেছেন যে আইডিএফ স্থল আক্রমণের বড়সড় প্রস্তুতি নিচ্ছে। সেই জন্যই বিলম্ব করছে। উপসাগরে (সম্ভবত জর্ডান এবং উত্তর ইরাকে) থাড এবং প্যাট্রিয়ট এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমের মোতায়েন-সহ প্রস্তুতি, ইউএসএস আইকে (এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার ইউএসএস ডোয়াইট ডি আইজেনহাওয়ার) ও মেরিনের আসার জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছে।'
পণবন্দিদের মুক্তি
এছাড়াও, গাজার অজানা স্থানে ২০০ জনেরও বেশি পণবন্দিকে রাখা হয়েছে। ইজরায়েল তাদের সবাইকে বলপ্রয়োগে উদ্ধার করতে পারবে কি না, তা স্পষ্ট নয়। পণবন্দিদের উদ্ধারের ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষেত্রে ইজরায়েলিদের একটি বিশ্বব্যাপী খ্যাতি আছে। তবে তারা একই সময়ে এত বড়সংখ্যক পণবন্দির উদ্ধারের পরিস্থিতি সামলায়নি। কাতারের মধ্যস্থতায় হামাসের সাহায্যে চার পণবন্দিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। যা পণবন্দিদের মুক্তির নতুন সম্ভাবনা তৈরি করেছে। সেটাও এই যুদ্ধে স্থলপথে হামলায় বিলম্বের অন্যতম কারণ।
আরও পড়ুন- আইনের মাত্রতিরিক্ত প্রয়োগ, আদালতে সমালোচনার মুখে তেলেঙ্গানা সরকার, প্রতিরোধমূলক আটক কী?
হামাসের সুড়ঙ্গ
আরেকটি বড় সমস্যা হল হামাসের ভূগর্ভস্থ বিরাট টানেল। ওই টানেল গাজা স্ট্রিপকে অতিক্রম করেও বিস্তৃত। তা কতদূর ছড়ানো রয়েছে, তা বুঝে নেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে ইজরায়েলের বাহিনী। এমনিতে ইজরায়েলের পণবন্দি উদ্ধারে ব্যাপক দক্ষতা রয়েছে। ইজরায়েলের এই ব্যাপারে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বাহিনী আছে। যাদের নাম জেনারেল স্টাফ রিকনেসেন্স ইউনিট (আগে যাকে ২৬৯ বলা হত)। এখন এছাড়াও আরও বেশ কিছু বাহিনী আছে। কিন্তু, সেই বিশেষ বাহিনীও হামাসের এই টানেলের জন্য অভিযান চালানোর আগে রীতিমতো সতর্কতা বজায় রাখছে।