'হিন্দি হার্টল্যান্ড'-এ রবিবার (৩ ডিসেম্বর) গেরুয়ার বিজয় নিশ্চিত হয়েছে। রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড় এবং তেলেঙ্গানায় বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল রবিবার প্রকাশিত হয়েছে। তার মধ্যে তেলেঙ্গানা ছাড়া বাকি তিন রাজ্য হিন্দিবলয়ের অংশ। আর, তিন রাজ্যই এসেছে বিজেপির দখলে। যা দেখে গেরুয়া শিবিরের নেতারা 'দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস'কে বলেছেন, এই ফলাফল তাঁদের প্রত্যাশার অতীত। এক্সিট পোল জানিয়েছিল, মধ্যপ্রদেশ এবং রাজস্থানে বিজেপি জয়ী হবে। ফলে, বিজেপি নেতাদের সেটা প্রত্যাশাতেই ছিল। কিন্ত, ছত্তিশগড়ের প্রচারে কংগ্রেসের তুলনায় বিজেপি পিছিয়ে ছিল। কিন্তু, ফলাফল সেখানেও দেখিয়েছে যে বিজেপি নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছে। শুভেন্দু অধিকারী বা বঙ্গ বিজেপির নেতারা যাই বলুন না-কেন, গোবলয়ের তিন রাজ্যে সাফল্যের পিছনে যে কারণগুলোকে বিজেপি নেতৃত্ব কৃতিত্ব দিচ্ছেন, তা হল-
১) মোদী ফ্যাক্টর
বিজেপির প্রচারের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। যেখানেই বিজেপির প্রার্থীদের দুর্বল মনে হয়েছে, সেখানেই দল প্রচারে মোদীকে এগিয়ে দিয়েছে। ভোটে যার প্রভাব পড়েছে বলেই মনে করছে দল। মধ্যপ্রদেশে তো ভোটের ফলাফলের ইঙ্গিত মিলতেই কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমর বলতে শুরু করেছিলেন মোদীর জন্য এই সাফল্য। পাশাপাশি, শিবরাজ সিং চৌহানর জনকল্যাণমূলক প্রকল্প এবং কেন্দ্রীয় সরকারের জনকল্যাণমূলক প্রকল্পের জন্যই বিজেপির এই সফলতা বলেও দাবি করেছেন বিজেপি নেতৃত্ব।
২) মহিলা ফ্যাক্টর
বিজেপি নেতাদের দাবি, মধ্যপ্রদেশ এবং ছত্তিশগড়ে মহিলা ফ্যাক্টর বিজেপির জয়ের পিছনে কাজ করেছে। এই কথা বলার কারণ, মহিলা ভোটারদের কথা মাথায় রেখে বিজেপি ইশতেহারে বিশেষ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিল। মধ্যপ্রদেশে মহিলা ভোটারের সংখ্যা ২ কোটি ৬০ লক্ষ। তার ওপর এই নির্বাচনে ভোট দেওয়া মহিলাদের সংখ্যা ২ শতাংশ বেড়েছে। যাঁদের জন্য গৃহীত মধ্যপ্রদেশ সরকারের বিভিন্ন কল্যাণমূলক প্রকল্প শিবরাজ সিং চৌহানের জনভিত্তি বাড়িয়েছে বলেই বিজেপি নেতৃত্বের বিশ্বাস। তার ওপর ৭ নভেম্বর, ভোটের চার দিন আগে দরিদ্র পরিবারের জন্য ৫০০ টাকায় রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডার, বিবাহিত মহিলাদের প্রতিবছর ১২ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তার প্রতিশ্রুতিও মধ্যপ্রদেশে বিজেপির পক্ষে গিয়েছে। এমনটাই বিশ্বাস বিজেপি নেতৃত্বের।
৩) বিজেপির সাংগঠনিক শক্তি
মধ্যপ্রদেশে বিজেপির দায়িত্বপ্রাপ্ত পি মুরলীধর রাও দলের এই সাফল্যের পিছনে বিজেপি কর্মীদের অবদানের কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, 'গত তিন বছরে সবসময়ই দল এবং সরকারের মধ্যে সমন্বয় বাড়ানোর চেষ্টা হয়েছে। ছত্তিশগড়ে, রাজ্য সংগঠনের দুর্বলতা সত্ত্বেও বুথস্তরের ব্যবস্থাপনায় নজর দেওয়া দলকে (বিজেপি) ইতিবাচক ফলাফল দিয়েছে। আমরা কখনও কর্মীদের মধ্যে হতাশা আসতে দিইনি।'
আরও পড়ুন- পিছন থেকে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে কলকাঠি নাড়ার অভিযোগ, পাকিস্তানে কি আদৌ ভোট হবে?
৪) হোর্ডিং এবং ব্যানারের মাধ্যমে জনগণকে বার্তা
নির্বাচনী প্রচারে কেন্দ্রীয় উন্নয়নমূলক প্রকল্পের সঙ্গে হোর্ডিং বা ব্যানারে বিশেষ বার্তা দিয়েছে বিজেপি। যেখানে লেখা হয়েছে, 'মোদী কি গ্যারান্টি'। পাশাপাশি, কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে হোর্ডিং বা ব্যানারে লেখা হয়েছে, 'রোজগার পায়েঙ্গে, বিজেপি কো লেঙ্গে' অথবা 'গুন্ডাগর্দি হটেঙ্গে, বিজেপি কো লেঙ্গে'। যা ভোটারদের মধ্যে বিশেষ প্রভাব ফেলেছে বলেই বিজেপি নেতৃত্বের ধারণা।