ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আদিবাসীদের আত্মত্যাগকে স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৩০ জুন হুল দিবস সম্পর্কে টুইট করেছেন। সাঁওতাল বিদ্রোহ বা 'হুল' হল আক্ষরিক অর্থে বিপ্লব। যা ১৮৫৫ সালে শুরু হয়েছিল। ১৮৫৭ সালে বিদ্রোহের দুই বছর আগে তার সমাপ্তি ঘটে। একে অনেক ইতিহাসবিদ 'ভারতীয় স্বাধীনতার প্রথম যুদ্ধ' হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
সাঁওতালদের নেতৃত্বে 'উপনিবেশবাদের বিরুদ্ধে সংগঠিত যুদ্ধ
এটি ছিল সাঁওতালদের নেতৃত্বে 'উপনিবেশবাদের বিরুদ্ধে সংগঠিত যুদ্ধ'। অগণিত নিপীড়নের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো। কারণ, সাঁওতালরা অর্থনৈতিক-সহ বিভিন্ন দিক থেকে ব্রিটিশ এবং তাদের সহযোগীদের দ্বারা বঞ্চনার শিকার হয়েছিলেন। এই বিদ্রোহের নেতৃত্বে ছিলেন দুই ভাই সিধু এবং কানহু। তাদের নেতৃত্বে ৩২টি আদিবাসী জাতি এবং সম্প্রদায় এই বিদ্রোহে অংশ নিয়েছিল।
যে অঞ্চলে বিদ্রোহ হয়েছিল
দামিন-ই-কোহ অঞ্চলে বিদ্রোহ হয়েছিল। 'দামিন-ই-কোহ'-র অর্থ হল 'পাহাড়ের স্কার্ট'। আর, এই বিদ্রোহ ব্রিটিশদের সম্পূর্ণ বিস্মিত করেছিল। 'দামিন-ই-কোহ' অঞ্চলটি বর্তমান ঝাড়খণ্ডে পড়ে। আরও নির্দিষ্টভাবে বললে, পূর্ব ঝাড়খণ্ডের সাহেবগঞ্জ জেলার রাজমহল পাহাড়ের চারপাশের এলাকা। প্রতিবছর, ঝাড়খণ্ড রাজ্য ৩০ জুনকে 'হুল দিবস' হিসেবে উদযাপন করে। কারণ, এই দিনটিই হুল বিদ্রোহের সূচনাকে চিহ্নিত করে থাকে।
বিদ্রোহের সূচনার তারিখ নিয়ে মতান্তর
যদিও কিছু ঐতিহাসিকের বিবরণ অনুযায়ী ৩০ জুন নয়। হুল বিদ্রোহের সূচনা হয়েছিল জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে। 'সাঁওতাল'-এই অতিপরিচিত শব্দটি আজ ব্রিটিশরাও ব্যবহার করে থাকে। বিশেষজ্ঞদের দাবি, হুল বিদ্রোহের মাধ্যমেই 'সাঁওতাল' শব্দটি ব্রিটিশদের কাছে বিশেষভাবে পরিচিত হয়ে উঠেছিল। আর, ব্রিটিশরা এই সম্প্রদায়কে চিহ্নিত করতে সেদিন থেকেই শিখে গিয়েছে।
আরও পড়ুন- ফের বিরোধী শিবিরে বড় আঘাতের সম্ভাবনা, জয়ন্ত চৌধুরিদের এনডিএতে যোগদান নিয়ে জল্পনা
সাঁওতাল কারা?
সাঁওতাল জনগণ বা সাঁওতালিরা আধুনিককালের সাঁওতাল পরগনার আদি বাসিন্দা। এই সাঁওতাল পরগনা অঞ্চল ছয়টি জেলা দুমকা, পাকুর, গোড্ডা, সাহেবগঞ্জ, দেওঘর এবং জামতারার কিছু অংশ নিয়ে তৈরি। সাঁওতালরা বীরভূম এবং মানভূম অঞ্চল (বর্তমান বাংলা) থেকে স্থানান্তরিত হয়েছিল ১৮ শতকের শেষের দিকে।