Advertisment

সর্দি হলে করোনা কাবু করতে পারবে না, এমনই তথ্য উঠে এসেছে গবেষণায়! জানুন কী ভাবে সর্দি কামাল করছে

Coronavirus Explained: করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে আদাজল খেয়ে মাঠে নামে রাইনোভাইরাস। কোভিডের সংক্রমণ আটকে দিতে পারে সে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
India reports 7,081 new COVID19 cases 19 December 2021

ওমিক্রন আতঙ্কের আবহে দেশের দৈনিক সংক্রমণের ওঠানামা জারি।

Coronavirus: এক ভাইরাসের বিরুদ্ধে ভ্যাকসিন নয়, আরেক ভাইরাসের লড়াই। অবাক হবেন না। এমনও হয়। করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে আদাজল খেয়ে মাঠে নামে রাইনোভাইরাস। কোভিডের সংক্রমণ আটকে দিতে পারে সে। গবেষণায় এমনই তথ্য উঠে এসেছে। গবেষণা প্রবন্ধটি ছাপা হয়েছে এক্সপেরিমেন্টাল মেডিসিন জার্নালে। ইয়েল ইউনিভার্টিসির গবেষকরা এই কাজটি করেছেন।

Advertisment

কী করে রাইনোভাইরাস?


ইয়েল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপকদের দলটি দেখলেন, শ্বাসনালীর কোষে যদি আগে থেকেই রাইনোভাইরাসের সংক্রমণ ঘটে থাকে, তা হলে করোনার কোপ সামলানো যায়।

রাইনোভাইরাস কী?


ভাববেন না রাইনোসরাস বা গণ্ডারের ভাইরাস এটা। আসলে গ্রিক ভাষায় রিস (rhis) মানে নাক, রাইনোস (rhinos) মানে নাক সম্পর্কিত। খাড়ালো নাক-সিংয়ের কারণেই প্রাণীটিকে বলে রাইনোসোরাস (Rhinoceros) । আর নাকে এই ভাইরাস থাকে বলে রাইনোভাইরাস (rhinovirus) নাম। রাইনোভাইরাস সাধারণ সর্দি, ঠান্ডা লাগার কারণ। এর সংক্রমণ ৩৩ থেকে ৩৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডে হয়। এই ধরনের তাপমাত্রা থাকে নাকের ভিতরে।

আরও পড়ুন,  কোভ্যাক্সিনে কি কচি বাছুরের সিরাম থাকে?

কী উঠে এল গবেষণায়?


গবেষকরা দেখলেন, সর্দির ভাইরাসে আক্রান্ত শ্বাসনালীর টিস্যুগুলিতে করোনাভাইরাস হামলা করলে ওই সব কোষের ইন্টারফেরন আটকে দিচ্ছে সার্স কোভ-টু-র ছড়িয়ে পড়া । ইন্টারফেরনের কাজ কী? এটি এক ধরনের প্রোটিন অণু, কোনও কোষ ভাইরাস বা ব্যাক্টেরিয়ায় সংক্রমিত হলে ওই কোষ থেকে ইন্টারফেরন বেরিয়ে আসে, সে আশপাশের কোষগুলিকে হামলার সতর্কবার্তা পৌঁছে দিতে থাকে। কিন্তু অনেকের ক্ষেত্রে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের নির্দিষ্ট সময় পর কোষ থেকে বিপুল পরিমাণে ইন্টারফেরন (সাইটোকাইন) বেরিয়ে আসতে থাকে, এতে হিতে বিপরীত হয়। দেহের কোষগুলির উপরেই তখন ইমিউন সিস্টেমের হামলা শুরু হয়।
সাধারণ সর্দি জ্বরের ভাইরাস ইনফ্লুয়েঞ্জা প্রতিরোধ করে, এমন আগে থেকেই জানা ছিল। দেখা যায়, যে সময় বেশি সর্দি হচ্ছে বা ঠান্ডা লাগছে, সেই সময়টায় ইনফ্লুয়েনঞ্জা কম হচ্ছে। এর ফলে কোভিডের বিরুদ্ধে সর্দির ভাইরাসটি কাজ করে কি না, খতিয়ে দেখতে চাইলেন বিজ্ঞানীরা। ইয়েল স্কুল অফ মেডিসিনের ল্যাবরেটরি মেডিসিন এবং ইমিউনোলজির অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রোফেসর ইলেন ফক্সম্যানের নেতৃত্বে একটি দল এই কাজে হাত লাগালেন। তাঁরা ল্যাবরেটরিতে তৈরি শ্বাসনালীর টিস্যুতে কোভিড-নাইন্টিনের ভাইরাস সংক্রমিত করে দেখলেন, টিস্যুতে ভাইরাল লোড দ্বিগুণ হতে দেখা যাচ্ছে প্রতি ৬ ঘণ্টায়। এবার কিছু টিস্যুতে রাইনোভাইরাসের সংক্রমণ ঘটিয়ে তার পর কোভিড-নাইন্টিন ছেড়ে দেওয়া হল। দেখা গেল, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ সেই সব টিস্যুতে পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বোঝা গেল, রাইনোভাইরাস সংক্রমিত কোষগুলির ইন্টারফেরন প্রথম পর্যায়েই লাগাম দিতে পারছে করোনায়। আসলে, সংক্রমণ শুরুর প্রথম ধাপে একটি নির্দিষ্ট সময়ে (ভাইরাল সুইটস্পট) ভাইরাসের প্রবল সংক্রমণ (এক্সপোনেনশিয়াল গ্রোথ) শুরু হয়ে যায়। তখনও শক্তসমর্থ প্রতিরোধ গড়েই ওঠেনি। রাইনোভাইরাসের ফলে ইন্টারফেরন ওই সুইটস্পটের আগেই সার্স কোভ-টু-এর বিরুদ্ধে কাজ শুরু করে, তার বেড়ে ওঠায় লাগাম দেয়।

আরও পড়ুন, করোনার চিকিৎসায় সুগারের ওষুধ কাজ করে কী ভাবে?

মোদ্দা কথাটা আরেক বার


সার্স কোভ-টু-র সংক্রমণে ওই ভাইরাস-বিরোধী প্রতিরোধ শক্তি (antiviral defenses) কম থাকে, করোনাভাইরাসের লোড বেশি থাকে। ফলে করোনা ছড়ায়। যাঁদের রাইনোভাইরাস সংক্রমণ ঘটে আগে, মানে সর্দি হয়ে থাকে, দেখা যায়, করোনার ভাইরাল লোডের চেয়ে তাদের করোনা-প্রতিরোধ শক্তি বেশি।
তবে ফক্সম্যান জানাচ্ছেন, করোনাভাইরাস ও রাইনোভাইরাসের মধ্যে অন্তর্বর্তী সমীকরণের সবটা এখনও বোঝা যায়নি। এখনও রহস্য রয়েছে। তাই আরও গবেষণার প্রয়োজন।


বাংলা কথাটা হল সাধারণ সর্দি-- ভাল। সাপে বর। সর্দি লাগলে চিন্তিত না হয়ে আশীর্বাদ ভাবুন। সর্দিকে ভালবাসুন বললে অবশ্য বাড়াবাড়ি হয়ে যাবে।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

coronavirus COVID-19
Advertisment