Doctors want a central law: চিকিৎসকরা হাসপাতালগুলোতে হওয়া হামলা এবং হিংসা থেকে বাঁচতে বেশ কিছু দাবি তুলেছেন। তার মধ্যে অন্যতম হল কেন্দ্রীয় আইন লাগু করা। কলকাতার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে ৩১ বছর বয়সি এক জুনিয়র আবাসিক চিকিৎসককে ধর্ষণ-হত্যার পর প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে প্রতিবাদ করছেন চিকিৎসকরা। তাঁদের মূল দাবি, কর্তব্যরত অবস্থায় স্বাস্থ্যসেবা ক্ষেত্রের পেশাদাররা হিংসার মুখে পড়েন। তার বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির বিধান-সহ একটি কেন্দ্রীয় আইন লাগু করতে হবে। দিল্লির এইমস (AIIMS)-এর চিকিত্সকরা সুপ্রিম কোর্ট তাঁদের কাজে ফিরে যেতে বলার পরে ২২ আগস্ট বিক্ষোভ প্রত্যাহার করেছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রক যা জানিয়েছে
চিকিৎসকদের মধ্যে আরজি কর-কাণ্ডে গভীর অসন্তোষ রয়েছে। কলকাতার কিছু চিকিৎসক সেই অসন্তোষের কারণে আন্দোলন চালিয়েও যাচ্ছেন। চিকিৎসকরা দীর্ঘদিন ধরেই স্বাস্থ্যসেবা পেশাদারদের সুরক্ষার জন্য একটি পৃথক আইনের দাবি করছেন। দেশব্যাপী প্রতিবাদের পরে ২০১৯ সালে একটি খসড়া আইন তৈরি হয়েছিল। সাম্প্রতিক আন্দোলনের প্রেক্ষিতে, স্বাস্থ্য মন্ত্রকের আধিকারিকরা বলেছেন যে নতুন কেন্দ্রীয় আইন এমন পরিস্থিতিতে কার্যকর হওয়ার সম্ভাবনা কম। কারণ, ইতিমধ্যেই ২৬টির মত রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ওই একই ধরনের রাজ্য আইন চালুর চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু, সেই চেষ্টাগুলো কাজে লাগেনি।
কেন কেন্দ্রীয় আইনের দাবি চিকিৎসকদের?
গোটা দেশ থেকে হামেশাই স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগ ওঠে। ডাক্তাররা সেই কারণেই একটি কঠোর কেন্দ্রীয় আইনের দাবি জানাচ্ছেন। বর্তমান আইনগুলোতে হিংসার শাস্তি দেওয়ার বিধান আছে। কিন্তু, তা স্বাস্থ্যসেবা পেশাদারদের বিরুদ্ধে হোক বা অন্যদের বিরুদ্ধে- সকলের ওপরই প্রয়োগ করা যায়। সেই কারণেই চিকিৎসকরা চাইছেন দীর্ঘ কারাদণ্ড এবং বড় জরিমানা-সহ পৃথক আইন। বিধি সেন্টার ফর লিগ্যাল পলিসির এক রিপোর্টে জানানো হয়েছে, শুধুমাত্র কেন্দ্রীয় বিলের খসড়া তৈরির সময়ই ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত স্বাস্থ্যসেবা পেশাদারদের বিরুদ্ধে অন্তত ৫৬টি হিংসার ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে।
আরও পড়ুন- হঠাৎ কী হল! মোদী সরকার আচমকা পেনশনভোগীদের পাশে, আসল রহস্যটা অন্য?
পদ্ম পুরস্কারপ্রাপ্তদের প্রতিবাদ
আর, এই কারণেই প্রতিবাদী চিকিৎসকদের দাবির প্রতি তাঁদের সমর্থন জানিয়ে ৭০ জন পদ্ম পুরস্কারপ্রাপ্ত চিকিৎসক ১৮ অগাস্ট প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি দিয়ে বলেছিলেন যে একটি কেন্দ্রীয় আইন লাগু করা অত্যন্ত জরুরি। স্বাক্ষরকারীদের অন্যজন ডা. হর্ষ মহাজন বলেছেন, 'চিকিৎসকদের জন্য একটি পৃথক আইনের প্রয়োজন। কারণ, তারা যে পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়, তা অন্যান্য পেশার চেয়ে আলাদা। অনেক সময় চিকিৎসকদের একবারে ৩৬ ঘণ্টা পর্যন্ত কাজ করতে হয়। তবুও তাঁদের ঘুমানোর জন্য ডিউটি রুমে অ্যাক্সেস নাও থাকতে পারে। তাঁদের হোস্টেল অনেকটা দূরে হতে পারে। তাঁদের সেখানে পৌঁছতে গেলে অন্ধকারে হাঁটতে হতে পারে। গত পাঁচ বছরে আমরা এইজাতী বহু ঘটনা দেখেছি। এজন্য কিছু একটা করা দরকার।' সরকার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে একটি কমিটি গঠনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট তাদের সাম্প্রতিক ধর্মঘট তুলে নিতে বলেছে। তারপরও চিকিৎসকরা তা চালিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন, কারণ অতীতে বারবার দেখা গিয়েছে যে বহু প্রতিশ্রুতি পেলেও দীর্ঘদিন তাঁদের দাবি পূরণ হয়নি।