Advertisment

Explained: মহাকাশযান কোনও দেশের ওপর ভেঙে পড়লে, তার ক্ষয়ক্ষতি কীভাবে পূরণ হবে?

অতীতেও এমন বহু নজির আছে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
ISRO Rocket

পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার উপকূলে উদ্ধার হওয়া ইসরোর রকেটের ধ্বংসাবশেষ।

অস্ট্রেলিয়ার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা সোমবার জানিয়েছে, সপ্তাহ দুয়েক আগে পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার উপকূলে পাওয়া একটি বড় বস্তু ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর রকেটের ধ্বংসাবশেষ বলে নিশ্চিত করা গিয়েছে। ইসরোও এই দাবির সঙ্গে একমত হয়েছে। বলেছে যে ধ্বংসাবশেষ তার পোলার স্যাটেলাইট লঞ্চ ভেহিকেল (পিএসএলভি) রকেটগুলোর একটি হতে পারে। অস্ট্রেলিয়ান মহাকাশ সংস্থা জানিয়েছে, তারা ওই ধ্বংসাবশেষ সংরক্ষণ করেছে। এই ব্যাপারে তারা ইসরোর সঙ্গে কাজ করছে। অস্ট্রেলিয়ার মহাকাশ সংস্থার এক আধিকারিক এই প্রসঙ্গে বলেন, 'রাষ্ট্রসংঘের মহাকাশ চুক্তির আওতায় বাধ্যবাধকতা বিবেচনা বিবেচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করা হবে।'

Advertisment

ইসরোর বক্তব্য

একজন ইসরো আধিকারিক বলেছেন যে বস্তুটি সম্ভবত পিএসএলভি রকেটের একটি অংশ। ইসরো দুই মাস আগে আইআরএনএসএস নক্ষত্রের জন্য একটি নেভিগেশন স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছিল। ইসরোর ওই আধিকারিক জানিয়েছেন, 'স্যাটেলাইটটি উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল দক্ষিণ দিকে। সেই সময় এটা হতে পারে যে রকেটের একটি অংশ বায়ুমণ্ডল দিয়ে যাওয়ার সময় পুরোপুরি পুড়ে না-গিয়ে সাগরে পড়েছিল। সেটাই পরে অস্ট্রেলিয়ার উপকূলের দিকে ভেসে গেছে।' ওই বিষয়টি বিস্তারিত খতিয়ে দেখা হবে। তবে, উদ্ধার হওয়া ধ্বংসাবশেষ ইসরোর কি না, তা খতিয়ে দেখার জন্য ইসরোর প্রতিনিধিদের এখনই অস্ট্রেলিয়ায় যাওয়ার ব্যাপারে কোনও কথা হয়নি।

এই ধরনের ঘটনা কি হামেশাই ঘটে?

মহাকাশে পাঠানো বস্তুর পৃথিবীতে আছড়ে পড়া বা আবর্জনা হয়ে ওঠা নতুন কিছু নয়। অতীতেও এমন ধরনের ঘটনা ঘটেছে। রকেটের চেয়ে ছোট কিছু, বায়ুমণ্ডলের ঘর্ষণের পরও পুড়ে না-গিয়ে পৃথিবীতে আছড়ে পড়েছে। তবে, এসব বিষয় সংবাদমাধ্যমে খুব বেশি প্রচার হয় না। আর, বেশিরভাগ সময়, মহাকাশের আবর্জনা সমুদ্রে গিয়ে পড়ে। তাই জনসাধারণ খুব একটা বিপদে পড়েন না।

বড় ঘটনা প্রচার পেয়েছে

তবে, এই সব ক্ষেত্রে বড় কোনও ঘটনা ঘটে থাকলে, তা সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে, ২৫ টন ওজনের একটি চিনা রকেটের বড় অংশ ২০২১ সালের মে মাসে ভারত মহাসাগরে পড়েছিল। এই ধরনের সবচেয়ে বিখ্যাত ঘটনাটি হল স্কাইল্যাব স্পেস স্টেশনের ঘটনা। যা বর্তমানে চালু আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের পূর্বসূরি। বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর ১৯৭৯ সালে এর বিরাট অংশ ভারত মহাসাগরে পড়েছে। কিছু অংশ পড়েছে পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার স্থলভাগে।

এতে ভয়ের কিছু নেই?

মহাকাশ থেকে পতনশীল বর্জ্যের জেরে জীবন এবং সম্পত্তির হুমকি উপেক্ষা করা যায় না। এমনকী এই সব পদার্থ যখন মহাসাগরে এসে পড়ে, তখন বড় সামুদ্রিক প্রাণীর জীবনহানির সম্ভাবনা থাকে। পাশাপাশি, জাহাজ এবং যাত্রীদের জীবনহানিরও সম্ভাবনা থাকে। একইসঙ্গে এই সব ঘটনা দূষণের সংখ্যা বাড়ায়। তারপরও অবশ্য মহাকাশ গবেষণার প্রতি বিশেষ ছাড়ের কারণে এই সব পতনশীল বস্তুগুলোর এবং তার থেকে হওয়া ক্ষতির কোনও নথি রাখা হয়নি। কোনও দেশের সরকারই রাখেনি। প্রশাসনগুলো এটুকু ভেবেই খুশি হয়েছে, যখন মহাকাশের সেই সব বর্জ্য পদার্থ জমির ওপর দিয়ে গিয়েছে, তখন সেটা জনবসতিহীন এলাকার ওপর দিয়ে গিয়েছে। তাতে সাধারণ মানুষের কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।

আরও পড়ুন- আজ শেষ দিন, কারা আয়কর দাখিল করবেন?

এইসব বস্তুর জেরে ক্ষতি হলে কী হবে?

মহাকাশের ধ্বংসাবশেষ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য আন্তর্জাতিক নিয়ম আছে। যার মধ্যে আছে পৃথিবীতে ফিরে আসা আবর্জনার কথাও। স্পেস অবজেক্ট বা মহাকাশের জিনিসপত্রর জেরে হওয়া ক্ষতির জন্য আন্তর্জাতিক দায়বদ্ধতার চুক্তিতে মহাকাশে উপগ্রহ পাঠানো সব দেশেরই স্বাক্ষর আছে। এটি আসলে একটি আন্তর্জাতিক চুক্তি, যা মহাকাশ গবেষণার সঙ্গে যুক্ত দেশগুলোর আচরণকে নিয়ন্ত্রণ করে। এই চুক্তি অনুযায়ী, কোনও দেশ মহাকাশের বস্তুর জেরে ক্ষতিগ্রস্ত হলে তার দায় যে দেশের পাঠানো বস্তুর জেরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তার। সেক্ষেত্রে ক্ষতিগ্রস্ত দেশটিকে যে দেশ মহাকাশে পাঠিয়েছিল, সেই দেশ ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য।

Space Craft ISRO Space
Advertisment