Sanjay Gandhi led Emergency-era nasbandi campaign: জরুরি অবস্থার সময় পুরুষ নির্বীজকরণ বা নাসবন্দি বা বন্ধ্যাত্মকরণ অভিযানে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন সঞ্জয় গান্ধী। তাঁর এই জোর করে বন্ধ্যাত্বকরণের চেষ্টা বেশ নিন্দা কুড়োয়। আজও ৪৯ বছর আগে জারি হওয়া জরুরি অবস্থার কথা বললে, তার সঙ্গেই উঠে আসে সঞ্জয় গান্ধীর এই বন্ধ্যাত্মকরণের চেষ্টার কথা।
জরুরি অবস্থার সময় বন্ধ্যাত্মকরণের চেষ্টা
জরুরি অবস্থার সময় তাঁর মা ইন্দিরা গান্ধীর প্রশ্রয়ে সঞ্জয় গান্ধী অত্যন্ত ক্ষমতাশালী হয়ে উঠেছিলেন। যার প্রবীণ মানুষ, তাঁদের অনেকেরই সেসব দিনগুলো মনে আছে। তেমনই একজন হলেন খান্ডু গেনু কাম্বলে। ২০১৫ সালে তিনি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সঙ্গে কথা বলার সময় জানিয়েছিলেন, কীভাবে জরুরি অবস্থার সময় জোর করে বন্ধ্যাত্মকরণের চেষ্টা হয়েছিল। মহারাষ্ট্রের বার্শির বাসিন্দা কাম্বলেকে ১৯৭৬ সালে বন্ধ্যাত্মকরণ করতে বাধ্য করা হয়েছিল। ঠিক ৪৯ বছর আগে ২৪-২৫ জুন মধ্যরাতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছিল। এরপরের ২১ মাস ইন্দিরা গান্ধী একনায়কের মত দেশ চালান। সেই সময়ে প্রশাসন এবং শাসক দলের বিরুদ্ধে নানা বাড়াবাড়ির অভিযোগ উঠেছিল। যার মধ্যে ছিল, সঞ্জয় গান্ধীর নেতৃত্বে জোর করে বন্ধ্যাত্মকরণের চেষ্টার ঘটনাও।
ভারতে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ
ভারতে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের কথা বললেই রীতিমতো আনন্দে লাফিয়ে ওঠেন বুদ্ধিজীবীদের একাংশ। এঁরা অর্থনৈতিক অনুন্নয়নের জন্য জনসংখ্যার মাত্রাতিরিক্ত বৃদ্ধিকেই দায়ী করেন। যা পশ্চিমী কিছু শিক্ষাবিদের ভারত সম্পর্কে ধারণার সঙ্গে হুবহু মিলে যায়। ১৯৫১ সালে ভারতের জনসংখ্যা ছিল আনুমানিক ৩৬ কোটি ১০ লক্ষ। সেই সময় জনসংখ্যাবিদ আরএ গোপালস্বামী দাবি করেছিলেন যে ভারতের জনসংখ্যা প্রতিবছর প্রায় ৫০০,০০০ করে বাড়বে। এই হার দেখে গোপালস্বামী বিশ্বাস করতেন যে লক্ষ লক্ষ টন খাদ্যশস্য আমদানি করলেও জনসংখ্যার জন্য ভারত তার খাদ্যের চাহিদা মেটাতে চিরকাল ব্যর্থই থাকবে। এই সব তত্ত্ব আউড়ে গোপালস্বামী সমাধানসূত্র হিসেবে গণবন্ধ্যাত্মকরণের কথা বলেছিলেন। যা আজ পর্যন্ত বিশ্বের কোনও দেশে লাগু হয়নি।
আরও পড়ুন- নিষিদ্ধ হয়ে গেল হিজাব! এবার কতটা চাপ বাড়তে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকারের ওপর?
সঞ্জয় গান্ধীর ভূমিকা
অভিযোগ ওঠে, এই বন্ধ্যাত্মকরণ করার সময় অনেকেরই যৌনাঙ্গ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গুজব ছড়ায় যে বন্ধ্যাত্মকরণ করাতে গিয়ে অনেকের অপারেশন টেবিলেই মৃত্যু হয়েছে। জরুরি অবস্থার আগের বছরগুলোয় ভারতে গড় বৃষ্টিপাতে ঘাটতি দেখা দিয়েছিল। যার ফলে, দেশের আর্থিক সংকট চরমে ওঠে। খনিজ তেলের সংকট কাটাতে গিয়ে ভারতের সঞ্চিত বিদেশি মুদ্রার পরিমাণ কমে যায়। শিল্পের উৎপাদন হ্রাস পায়। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণকেই প্রধান উপায় বলে দাবি করে দেশের শাসক দল কংগ্রেস। যার পিছনে ছিলেন, সরকারি পদে না থেকেও প্রভাবশালী হয়ে ওঠা সঞ্জয় গান্ধী। প্রত্যেক রাজ্যকে কতগুলো করে বন্ধ্যাত্মকরণ করাতে হবে, তিনি প্রতিটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সেই সংখ্যা জানিয়ে দিয়েছিলেন। সেই লক্ষ্যপূরণ করতে গিয়ে জেলা এবং তার নীচুস্তরে ব্যাপারটা জবরদস্তির পর্যায়ে পৌঁছে যায়।