/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2023/05/Rayyanah-Barnawi.jpg)
অ্যাক্সিওন স্পেস-এর ব্যক্তিগত মিশনের অংশ হিসেবে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (আইএসএস)-এ ২১ মে রওনা হয়েছেন রায়নাহ বারনবি। তিনিই প্রথম আরব মহিলা মহাকাশচারী। সৌদি আরবের নাগরিক বারনবি তাঁর সহকর্মী সৌদি নাগরিক ফাইটার পাইলট আলি আল-কারনিকে নিয়ে রওনা হওয়ার পরের দিন আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে পৌঁছেছেন।
কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে
ফ্লোরিডার দক্ষিণ অংশের কেপ ক্যানাভেরালের কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে স্পেস এক্স ফ্যালকন ৯ রকেটে তিনি আইএসএসে পাড়ি দিয়েছেন। তাঁর দলে আছেন প্রাক্তন নাসা মহাকাশচারী পেগি হুইটসন। এই নিয়ে চতুর্থবার আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে পাড়ি জমালেন হুইটসন। এছাড়াও আছেন টেনেসির ব্যবসায়ী জন শফনার। তাঁরা বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাতে প্রায় আট দিন মহাকাশ স্টেশনে থাকবেন। আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে পৌঁছনোর আগে মহাকাশে রেকর্ড করা এক ভিডিওয় বারনবি বলেছেন, বিশ্বজুড়ে মানবজাতির ভবিষ্যৎ খুব উজ্জ্বল। আমি চাই মানবজাতি বড় স্বপ্ন দেখুক। নিজেকে বিশ্বাস করুক। আর, মানবতায় বিশ্বাস রাখুক।
/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2023/05/Rayyanah-Barnawi-1.jpg)
রায়নাহ বারনবি কে?
রায়নাহ বারনবির জন্ম ১৯৮৮ সালের সেপ্টেম্বরে, সৌদি আরবের জেড্ডায়। ক্যানসার স্টেম-সেল গবেষণায় প্রায় এক দশকের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন এই নভোচর একজন বায়োমেডিকাল গবেষক। অ্যাক্সিওম স্পেস-এর ওয়েবসাইট অনুসারে, সৌদি আরবের আলফাইজাল ইউনিভার্সিটি থেকে বায়োমেডিকেল সায়েন্সে মাস্টার এবং নিউজিল্যান্ডের ওটাগো ইউনিভার্সিটি থেকে বায়োমেডিকেল সায়েন্সে স্নাতক-সহ বায়োমেডিকেল সায়েন্সে বারনবীর একাধিক ডিগ্রি আছে।
বিস্তর অভিজ্ঞতা
তাতে বলা আছে, 'বারনবি সৌদি আরবের রিয়াদের কিং ফয়জল স্পেশালিস্ট হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারে স্টেম সেল এবং টিস্যু রি-ইঞ্জিনিয়ারিং প্রোগ্রামের গবেষণা ল্যাব টেকনিশিয়ান হিসেবে নয় বছরেরও বেশি সময় কাটিয়েছেন। তার বিভিন্ন প্রযুক্তিগত ও গবেষণার দায়িত্ব ছিল।' এছাড়াও, গবেষক স্কুবা ডাইভিং, হ্যাং গ্লাইডিং, লেজ সুইংগিং, হাইকিং আর রাফটিং-এর মত অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসেও তিনি আগ্রহী।
অ্যাক্সিওন স্পেস-এর ব্যক্তিগত মিশন কী?
এই মিশনকে অ্যাক্সিওন মিশন ২ বা এএক্স-২ বলা হচ্ছে। এটি অ্যাক্সিওন স্পেসের দ্বিতীয় ব্যক্তিগত মিশন। এটি হল এক বেসরকারি অর্থে তৈরি মার্কিন মহাকাশ সংস্থা। সহ-প্রতিষ্ঠাতা মাইকেল সাফ্রেডিনি। এই সাফ্রেডিনি ২০০৫ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত নাসার আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে প্রোগ্রাম ম্যানেজার ছিলেন। এবারের অভিযানে বারনবি ও তাঁর সহযোগী অন্যান্য সদস্যরা প্রায় ২০টি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত পরীক্ষা চালাবে। যার মধ্যে রয়েছে মানব দেহবিদ্যা, কোষ জীববিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি উন্নয়নের মতো বিভিন্ন ক্ষেত্র। অক্সিওন স্পেস তার ওয়েবসাইটে জানিয়েছে, সংগৃহীত ডেটা নানা ক্ষেত্রে কাজে লাগবে। কক্ষপথে মানুষের শারীরবৃত্তি বোঝার ওপর প্রভাব ফেলবে। অভিনব প্রযুক্তিগত উপযোগিতা বোঝাবে। ভবিষ্যতে মহাকাশযান এবং পৃথিবীর স্বার্থেও তা ব্যবহার করা যাবে। চলতি বছরের গোড়ায় সৌদি স্পেস কমিশন বারনবির নাম এই অভিযানের জন্য ঘোষণা করেছিল। বারনবি ভবিষ্যতে স্টেম সেল ও স্তন ক্যানসার গবেষণায় কাজ করবেন।
আরও পড়ুন- ইউপিএসসি সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার ফলপ্রকাশ, কীভাবে তৈরি হয়েছিল ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশন
সৌদি আরব এবং মহাকাশ অনুসন্ধান
বারনবিই প্রথম সৌদি নারী, যিনি মহাকাশে পৌঁছলেন। অবশ্য তিনি মহাকাশে পৌঁছনো প্রথম সৌদি নাগরিক নন। মহাকাশে পা রাখা প্রথম সৌদি নাগরিক ছিলেন যুবরাজ সুলতান ইবনে সালমান আবদ আল-আজিজ আল সৌদ। তিনি ১৯৮৫ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ ভ্রমণের অংশ ছিলেন। ২০১৮ সালে সৌদ আরব তার প্রথম মহাকাশ সংস্থা সৌদি স্পেস কমিশন তৈরি করে। মহাকাশ স্টেশনে বারনবির যাত্রা নানা দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ। এটা প্রমাণ যে সৌদি আরব মহাকাশ বিজ্ঞান এবং শিক্ষাক্ষেত্রে অগ্রগতি ঘটাতে চায়। পাশাপাশি, বারনবির মহাকাশ অভিযানেই প্রমাণ যে সৌদি আরব নারী-পুরুষের ভেদাভেদ নিয়ে তার কলঙ্ক ঘোচাতেও তৎপর।