Advertisment

Explained: যেন মামাবাড়ির আবদার! প্রতীক দিচ্ছিল না কমিশন, কীভাবে আদায় করল তৃণমূলের জোটসঙ্গী?

ন্যাশনাল কনফারেন্সের নেতা ওমর আবদুল্লার ভোটপ্রচারের সভায় লাঙল প্রতীকের পতাকা।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
MAMATA_OMAR

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (বামদিকে), ওমর আবদুল্লা (ডানদিকে)।

লাদাখ প্রশাসন কার্গিলে লাদাখ স্বায়ত্তশাসিত পার্বত্য উন্নয়ন পরিষদের (এলএএইচডিসি) আসন্ন নির্বাচনের জন্য দলের প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ করতে অস্বীকার করার পরে বুধবার সুপ্রিম কোর্ট ন্যাশনাল কনফারেন্সকে তার দলীয় প্রতীক 'লাঙল' ফিরিয়ে দিল। লাদাখ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের নির্বাচনের জন্য প্রতীক বরাদ্দ ইস্যুতে জম্মু-কাশ্মীর এবং লাদাখের হাইকোর্টের ১৪ আগস্টের নির্দেশকে সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ করেছিল লাদাখ প্রশাসন। গত ১ সেপ্টেম্বর, শীর্ষ আদালত এই মামলায় তার রায়দান স্থগিত রেখেছিল। ৬ সেপ্টেম্বর, বিচারপতি বিক্রম নাথ ও আহসানউদ্দিন আমানুল্লাহর বেঞ্চ তার নির্দেশ দিয়েছে। পাশাপাশি, অযথা সুপ্রিম কোর্টে আবেদনের করায় লাদাখ প্রশাসনকে মামলার খরচ হিসেবে একলক্ষ টাকা জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছে।

Advertisment

ন্যাশনাল কনফারেন্স প্রার্থীদের প্রতীকের বিষয়টি আদালতে পৌঁছল কীভাবে?

কার্গিলের জন্য এলএএইচডিসি নির্বাচনের ঘোষণার সঙ্গেই, লাদাখ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের নির্বাচন কমিশনার সর্বভারতীয় রাজনীতিতে তৃণমূল কংগ্রেসের জোটসঙ্গী এনসিকে লাঙল প্রতীক দিতে অস্বীকার করেছিল। এই ব্যাপারে কমিশনের যুক্তি ছিল, এনসি-সহ কোনও রাষ্ট্রীয় দল লাদাখে স্বীকৃত নয়। তাই এনসি লাদাখে তার লাঙল প্রতীক দাবি করতে পারে না। কমিশনের সেই সিদ্ধান্তকে এনসি জম্মু-কাশ্মীর এবং লাদাখ হাইকোর্টে চ্যালেঞ্জ করেছিল। আদালত এনসির পক্ষেই রায় দিয়েছিল। সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিল লাদাখ প্রশাসন। এলএএইচডিসির ২৬টি আসনের আসন্ন নির্বাচনের জন্য এনসি এবং কংগ্রেসের মধ্যে একটি আসন ভাগাভাগি চুক্তি আছে। আগামী ১০ সেপ্টেম্বর পরিষদের নির্বাচন হওয়ার কথা। কিন্তু, ৬ সেপ্টেম্বর দেওয়া সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ এই নির্বাচনকে আরও পিছনে ঠেলে দেবে।

কেন এই নির্বাচন তাৎপর্যপূর্ণ?

কার্গিলের পার্বত্য পরিষদ নির্বাচনগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, ২০১৯ সালের আগস্টে জম্মু-কাশ্মীর থেকে লাদাখ বিভক্ত হওয়ার পর এই অঞ্চলে এটাই প্রথম স্থানীয় নির্বাচন। পুনর্গঠনের পরে, লাদাখ তার ভাষা ও সংস্কৃতির পাশাপাশি জমি এবং চাকরির সুরক্ষার জন্য লাগাতার বিক্ষোভের সাক্ষী হয়েছে। সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলের অধীনে লাদাখ অঞ্চল অন্তর্ভুক্ত। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে লাদাখের উভয় জেলার নাগরিকরাই ক্ষুব্ধ। এই পার্বত্য ভূমির কার্গিল জেলায় মুসলিমরা সংখ্যাগরিষ্ঠ। আর, লেহতে সংখ্যাগরিষ্ঠ বৌদ্ধরা।

এলএএইচডিসি কী?

লাদাখ স্বায়ত্তশাসিত পার্বত্য উন্নয়ন কাউন্সিলগুলি লাদাখ স্বায়ত্তশাসিত পার্বত্য উন্নয়ন পরিষদ আইন, ১৯৯৭-এর অধীনে গঠিত হয়েছিল। লাদাখ – লেহ এবং কার্গিল-এর অন্তর্ভুক্ত জেলাগুলিতে কার্যকর শাসনের জন্য ১৯৯৫ (এলএএইচডিসি, লেহ) এবং ২০০৩ (এলএএইচডিসি, কারগিল) এ দুটি কাউন্সিল গঠিত হয়েছিল। . আইনটি ১৯৯৫ সালের জুন থেকে কার্যকর বলে মনে করা হয়েছিল।

এলএএইচডিসি-এর ক্ষমতা কী?

উভয় পরিষদের ক্ষমতার মধ্যে রয়েছে অঞ্চলের জন্য উন্নয়ন পরিকল্পনার খসড়া তৈরি, উভয় জেলার জন্য বাজেট তৈরি, আন্দোলনের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন, ভাষা ও সংস্কৃতির প্রচার, জনস্বাস্থ্য, শিক্ষা, স্থানীয় সড়ক পরিবহণ এবং উন্নয়ন। ক্ষুদ্র শিল্প, অপ্রচলিত শক্তি এবং পর্যটনও লাদাখ অঞ্চলে এলএএইচডিসির পরিধির অধীনে থাকা ২৮টি বিষয়ের অংশ। পাশাপাশি, পার্বত্য পরিষদের এক্তিয়ারে কর ও অন্যান্য ফি ধার্য এবং আদায়ের ক্ষমতা রয়েছে।

পরিষদের গঠন কী?

লাদাখ স্বায়ত্তশাসিত পার্বত্য উন্নয়ন পরিষদ- কারগিল এবং লেহ, প্রতিটির ৩০ জন করে কাউন্সিলর নিয়ে তৈরি। যার মধ্যে ২৬ জন কাউন্সিলর নির্বাচিত এবং চারজন মনোনীত। এর মধ্যে একজন চেয়ারপার্সন নির্বাচিত হন। যিনি কাউন্সিলের প্রধান নির্বাহী কাউন্সিলর হিসেবেও কাজ করেন। প্রধান নির্বাহী কাউন্সিলর একজন ক্যাবিনেট মন্ত্রীর পদমর্যাদা ও ক্ষমতার অধিকারী। আর, চারজন নির্বাহী কাউন্সিলর উপমন্ত্রীর পদমর্যাদার অধিকারী। জেলার ডেপুটি কমিশনারকে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসাবে মনোনীত করা হয়। এলএএইচডিসি সামগ্রিক জেলা প্রশাসনের ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখে। কাজ সম্পাদন এবং আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার দায়িত্বও পালন করে।

লাদাখ কেন্দ্রশাসিত হওয়ার পর থেকে লাদাখে রাজনৈতিক প্রতিনিধিত্ব কীভাবে পরিবর্তিত হয়েছে?

পার্বত্য পরিষদগুলো ছাড়াও, ২০১৯ সালের আগস্টের আগে, লাদাখ অঞ্চল লেহ এবং কার্গিল থেকে জম্মু-কাশ্মীর বিধানসভায় দু'জন সদস্য এবং সংসদে একজন প্রতিনিধিকে নির্বাচিত করেছিল। যাই হোক, রাজ্যভাগের পরে লাদাখ বিধানসভা ছাড়া অর্থাৎ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত হয়েছে। যার ফলে পার্বত্য পরিষদগুলোতে রাজনৈতিক কর্তৃত্ব কেন্দ্রীভূত হয়েছে। আর এখানকার সাংসদ একজন। পার্বত্য পরিষদগুলো এই অঞ্চলের রাজনৈতিক পটভূমিকে রূপ দিয়েছে এবং অনেক প্রাক্তন সাংসদও কাউন্সিলে দায়িত্ব পালন করছেন।

আরও পড়ুন- ভারতের নাম হোক ‘ইন্ডিয়া’, চাননি পাকিস্তানের জনক জিন্নাও, কেন?

পরিষদের নির্বাচন কবে?

এলএএইচডিসি-কারগিল নির্বাচন, ১০ সেপ্টেম্বর হওয়ার কথা ছিল। তবে, আদালতের আদেশের কারণে এটি পিছিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। কাউন্সিলের ২৬টি আসনে ৮৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে বিজেপির ১৭ জন, আম আদমি পার্টির (আপ) ৪ জন, কংগ্রেসের ২১ জন এবং ৪৭ জন নির্দল প্রার্থী।

Omar Abdullah Supreme Court of India election commission Jammu & Kashmir
Advertisment