Advertisment

Explained: নাগরিকত্ব আইন ৬এ-র সাংবিধানিক বৈধতা খতিয়ে দেখবে সুপ্রিম কোর্ট, কী এই ধারা?

এনআরসির যাবতীয় ধারণা অসম চুক্তির ওপরই তৈরি হয়েছে।

author-image
Chinmoy Bhattacharjee
New Update
Citizenship Act

অসমে এনআরসির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ।

সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চ, নাগরিকত্ব আইনের ধারা ৬এ-কে চ্যালেঞ্জ করে আবেদনের শুনানিতে মঙ্গলবার বলেছে যে আবেদনে উত্থাপিত অন্যান্য বিষয়গুলোতে এগিয়ে যাওয়ার আগে আইনটি সাংবিধানিকভাবে বৈধ কি না, আদালত সেই ব্যাপারে প্রথমে সিদ্ধান্ত নেবে। ব্যাপারটি কি? আসলে ৬এ আইনটা অসম চুক্তিকে কেন্দ্র করে তৈরি।

Advertisment

অসম চুক্তি

অসম চুক্তি ১৯৮৫ সালে হয়েছিল। সেই সময় কেন্দ্রে ছিল রাজীব গান্ধীর সরকার। বাংলাদেশ থেকে অসমে অনুপ্রবেশ হচ্ছে। বাংলাদেশ থেকে আসা লোকজন অসমে নাগরিকত্ব নিয়ে বাস করছে। এই অভিযোগ তুলে আন্দোলন করছিলেন অল আসাম স্টুডেন্টস ইউনিয়নের আন্দোলনকারীরা। তাঁদের দাবি ছিল বাংলাদেশ থেকে আসা লোকজনকে 'অবৈধ অভিবাসী' ঘোষণা করতে হবে। আর, অহমিয়াদের 'অসমের আদিবাসী'র মর্যাদা দিতে হবে। এই নিয়েই দীর্ঘ ছয় বছরের আন্দোলন শেষে অল আসাম স্টুডেন্টস ইউনিয়নের সঙ্গে রাজীব গান্ধীর নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

আইনে যা আছে

এই আইনের একটি প্রধান বিষয়কেই সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চের সামনে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। সেটা হল- রাজ্যে বিদেশি চিহ্নিতকরণের উপায়। আর, তার ভিত্তিতে ২০১৯ সালে প্রকাশিত অসমের চূড়ান্ত নাগরিকপঞ্জী। অসম চুক্তির পঞ্চম ধারায় বলা হয়েছে, ১৯৬৬ সালের ১ জানুয়ারির পরবর্তীতে যাঁরা অসমে এসেছেন, তাঁদের বিদেশি হিসেবে শনাক্ত করা হবে। তবে তাঁরা নাগরিকত্ব পেতে পারেন। যদি, তাঁরা ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চের মধ্যে (বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা থেকে হলেও) অসমে আসেন, তবে। এর অর্থ হল, ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চের পর যাঁরা অসমে প্রবেশ করেছেন, তাঁরা অবৈধ বাসিন্দা।

কীভাবে মিলবে নাগরিকত্ব

চুক্তিতে আরও বলা হয়েছে যে ১৯৬৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পর্যন্ত যাঁরা অসমে এসেছেন, তাঁদের বিদেশি হিসেবে শনাক্ত করা হবে। তাঁদের প্রথমে কেন্দ্রীয় সরকারি আইন অনুযায়ী নিজেদের নাম নথিবদ্ধ করতে হবে। বিদেশি হিসেবে শনাক্ত হওয়ার তারিখ থেকে ১০ বছর পর্যন্ত যে কোনও বিধানসভা বা সংসদীয় আসনের ভোটার তালিকায় তাঁরা স্থান পাবেন না। তবে, তাঁদের ভারতীয় নাগরিকদের মতো একই অধিকার এবং বাধ্যবাধকতা থাকবে। ১০ বছরের মেয়াদ শেষে তাঁদের নাগরিক হিসেবে গণ্য করা হবে।অসমে নাগরিকদের চূড়ান্ত জাতীয় পঞ্জী, যা ২০১৯ সালে প্রকাশিত হয়েছে, তা এই নিয়মেই তৈরি হয়েছে।

আরও পড়ুন- ভারতীয় রেলের এত বিপুল জমি কেন? কীভাবে বেদখল হওয়া আটকায় রেল?

কী আবেদন করা হয়েছে?

সাংবিধানিক বেঞ্চের সামনে আবেদনে বলা হয়েছে, ৬এ ধারা অনুযায়ী নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য শেষ সময়সীমা ১৯৭১ সাল ধরা হয়েছে। তার বদলে এই সময়সীমা ১৯৫১ সাল ধরা হোক। অসম সম্মিলিত মহাসংঘ (এএসএম) অহমিয়াদের হয়ে কথা বলে। তারা আবেদনে বলেছে যে ভারতীয় নাগরিকত্বের জন্য ১৯৪৮ সালের জুলাইয়ে আলাদা আইন আছে। তাই শুধুমাত্র অসমের জন্য আলাদা তারিখ নির্ধারণ বাকি ভারতের থেকে অসমকে বিচ্ছিন্ন করছে। সেই কারণে ৬এ ধারা 'বৈষম্যমূলক, স্বেচ্ছাচারী, অবৈধ ও অহমিয়াদের অধিকার লঙ্ঘন করছে।'

Read full story in English

Constituition of India Assam Accord Supreme Court of India nrc
Advertisment