Kazakhstan Methane Leak: দ্বিতীয় বৃহত্তম মানবসৃষ্ট মিথেন গ্যাস লিকের বিরাট প্রভাব পড়েছে পরিবেশে। সতর্ক করে এমনটাই জানিয়েছেন পরিবেশবিদরা। তাঁরা জানিয়েছেন, কাজাখস্তানে অনুসন্ধান চালাতে গিয়ে কূপ খননের সময় মিথেন গ্যাস লিক করেছিল। ঘটনাটি ঘটেছিল দক্ষিণ-পশ্চিম কাজাখস্তানের মাঙ্গিস্তাউ অঞ্চলে। গত বছর, ২০২৩ সালের জুন থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে ওই গ্যাস বায়ুমণ্ডলে ছড়িয়ে পড়ে। মোট ১২৭,০০০ টন মিথেন গ্যাস বায়ুমণ্ডলে ওই ঘটনায় ছড়িয়ে পড়েছিল। আর, তার জেরে প্রভাবিত হয়েছিল পরিবেশ। এমনটাই জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
- গত বছর, ২০২৩ সালের জুন থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে ওই গ্যাস বায়ুমণ্ডলে ছড়িয়ে পড়ে।
- কাজাখস্তানের বুজাচি নেফটকে কমপক্ষে ৩৫ কোটি টেঙ্গের বা ৭৭৪,০০০ মার্কিন ডলার জরিমানা করা হবে।
- মিথেনের ঘনত্ব প্রতি বিলিয়ন (পিপিবি)-এ ১১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
মিথেন গ্যাস কী?
মিথেন একটি শক্তিশালী গ্রিনহাউস গ্যাস। এই গ্যাস বায়ুমণ্ডলে তাপকে আটকে রাখে। ফলে, গ্লোবাল ওয়ার্মিং বাড়ে। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে মিথেন বাতাসে নির্গত হয়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বাতাসে মিথেন গ্যাস নির্গমন, বায়ুমণ্ডলে মিথেন গ্যাস ছড়িয়ে পড়ার অন্যতম কারণ। মানব সৃষ্ট মিথেন গ্যাস নির্গমনের প্রায় ৪০% জীবাশ্ম জ্বালানি থেকেই বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে।
কী ঘটেছে?
অনুসন্ধানের জন্য কূপ খুঁড়তে গিয়ে আগুন লেগে যায়। ঘটনাটি ঘটেছিল ২০২৩ সালের জুন থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে। এর জেরে বায়ুমণ্ডলে ১২৭,০০০ টন মিথেন গ্যাস ছড়িয়ে পড়ে। তার ধোঁয়া মহাকাশ থেকে পর্যন্ত দেখা গিয়েছে। পাঁচটি স্যাটেলাইট যন্ত্রের মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা ছয় মাসে ১১৫ বার এই গ্যাস নির্গমন শনাক্ত করেছেন। সেই নির্গমন এখন বন্ধ করা গেছে। অনুসন্ধানের জন্য ব্যবহৃত কূপটিকে বর্তমানে সিমেন্ট দিয়ে সিল করে দেওয়া হচ্ছে।
রাষ্ট্রসংঘের বক্তব্য
এই ব্যাপারে রাষ্ট্রসংঘের ইন্টারন্যাশনাল মিথেন এমিশন অবজারভেটরির প্রধান মানফ্রেডি ক্যালটাগিরোন বলেছেন, এই ঘটনায় মিথেন নির্গমনের মাত্রা এবং সময়কাল অস্বাভাবিকরকম বেশি ছিল। ফরাসি ভূ-বিশ্লেষণ সংস্থা কায়রোস ঘটনার তদন্ত করেছে। গত মাসে তার ফলাফলও প্রকাশ করেছে। কায়রোসের তদন্তের ফলাফল- লিডেনের নেদারল্যান্ডস ইনস্টিটিউট ফর স্পেস রিসার্চ এবং স্পেনের পলিটেকনিক ইউনিভার্সিটি অফ ভ্যালেন্সিয়াও পর্যালোচনা করে দেখেছে। কূপের মালিক, কাজাখস্তানের বুজাচি নেফটকে কমপক্ষে ৩৫ কোটি টেঙ্গের বা ৭৭৪,০০০ মার্কিন ডলার জরিমানা করা হবে।
আরও পড়ুন- তহবিল ‘ছিনতাই’! এবার বিপাকে সলমন, কেন্দ্রীয় এজেন্সির নজরে খুরশিদ ভাইয়ের স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা
পরিবেশগত প্রভাব
আমেরিকার এনভায়রনমেন্টাল প্রোটেকশন এজেন্সির গ্রিনহাউস গ্যাস ইকুইভ্যালেন্সি ক্যালকুলেটর অনুযায়ী, 'এই ধরনের গ্যাস নির্গমনের পরিবেশগত প্রভাব এক বছরে ৭১৭,০০০টিরও বেশি পেট্রোল গাড়ি চালানোর সঙ্গে তুলনীয়। মিথেন জলবায়ু পরিবর্তনের অন্যতম প্রধান চালক। এই ব্যাপারে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরেই, দ্বিতীয় স্থানে আছে এই গ্যাস। বায়ুমণ্ডলে মিথেনের ঘনত্ব গত কয়েক শতাব্দীতে দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে। শিল্প বিপ্লবের পর থেকে বিশ্বের তাপমাত্রা বৃদ্ধির প্রায় ৩০ শতাংশের জন্য মিথেনই দায়ী। ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি (আইইএ) জানিয়েছে, বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতা কমাতে আর বায়ুর গুণমান বাড়াতে মিথেন নির্গমন দ্রুত এবং ধারাবাহিকভাবে কমাতেই হবে। আশঙ্কার কথা হল, বিশ্বের গড় তাপমাত্রা ইতিমধ্যে শিল্পবিপ্লবের আগের সময়ের চেয়ে কমপক্ষে ১.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়েছে। তার মধ্যে আবার, ২০২৩ সালে বায়ুমণ্ডলে গ্রিনহাউস গ্যাসের ঘনত্ব সবচেয়ে বেড়েছে। মিথেনের ঘনত্ব প্রতি বিলিয়ন (পিপিবি)-এ ১১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।