সুপ্রিম কোর্ট বৃহস্পতিবার অল ইন্ডিয়া কংগ্রেস কমিটির মিডিয়া ও প্রচার বিভাগের চেয়ারম্যান পবন খেরার অন্তর্বর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করেছে। তাঁকে অসম পুলিশ ঘৃণাসূচক বক্তব্যের অভিযোগে গ্রেফতার করেছিল। বিভিন্ন রাজ্যে খেরার বিরুদ্ধে নথিভুক্ত একাধিক এফআইআরে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, মিথ্যে অভিযোগ আরোপ, ধর্মের মধ্যে শত্রুতা বৃদ্ধি, জাতীয়-সংহতি নষ্টের চেষ্টার মত বিভিন্ন অপরাধের উল্লেখ করা হয়েছে। যে সব ধারায় খেরার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে, এই সব ধারা অতীতে বারবার রাজনৈতিক প্রয়োজনে ব্যবহার হয়েছে। বাকস্বাধীনতার কণ্ঠরোধের চেষ্টা হিসেবে ওই সব ধারা প্রয়োগ করা হয়েছে অতীতে।
ধারা ১৫৩এ: আইন কী বলে?
ভারতীয় দণ্ডবিধির (আইপিসি) ধারা ১৫৩এ, 'ধর্ম, জাতি, জন্মস্থান, বাসস্থান, ভাষা ইত্যাদির ভিত্তিতে বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে শত্রুতা প্রচার করা এবং সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য ক্ষতিকর কাজ করা'কে শাস্তিমূলক হিসেবে বিবেচনা করে। এতে তিন বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড অথবা জরিমানা বা উভয় দণ্ডই হতে পারে। এই বিধান ১৮৯৮ সালে তৈরি হয়েছিল। মূল দণ্ডবিধিতে এটি ছিল না।
স্বাধীনতার আগে
স্বাধীনতা পূর্বে সংশোধনের সময়, শ্রেণিবিদ্বেষ প্রচার করার বিরুদ্ধে সাজা রাষ্ট্রদ্রোহের ব্রিটিশ আইনের অংশ ছিল। কিন্তু, ভারতীয় আইনে তা অন্তর্ভুক্ত ছিল না। প্রাক-স্বাধীনতা আমলে রঙ্গিলা রসুল মামলায়, পঞ্জাব হাইকোর্ট এক আঞ্চলিক হিন্দু প্রকাশককে খালাস করে দিয়েছিল। তাঁর বিরুদ্ধে নবির ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্যের অভিযোগ ছিল। আর, সেই কারণে ১৫৩এ ধারার অধীনে তাকে অভিযুক্ত করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন- পাঞ্জাবে অশান্তির নেপথ্যে ‘ওয়ারিস পাঞ্জাব দে’, কেন শিরোনামে এই খালিস্তানপন্থী সংগঠন?
আইনটির গুরুত্ব
এই আইনের গুরুত্ব বুঝিয়ে তাঁর বই, 'অফেন্ড, শক অর ডিস্টার্ব: ফ্রি স্পিচ আন্ডার দ্য ইন্ডিয়ান কনস্টিটিউশন'-এ, আইনজীবী গৌতম ভাটিয়া লিখেছেন যে হাইকোর্ট একটি সম্প্রদায়ের ওপর আক্রমণ এবং সেই সম্প্রদায়ের একজন মৃত নেতার ওপর আক্রমণের মধ্যে পার্থক্য করেছে। যখন একই ধরনের একটি অংশ একাধিকবার প্রকাশিত হয়, তখন হাইকোর্ট বলে যে, 'একজন ধর্মীয় নেতার ওপর একটি কুরুচিপূর্ণ এবং নোংরা আক্রমণ প্রাথমিকভাবে ১৫৩এ ধারার আওতায় পড়বে। তবে, প্রতিটি সমালোচনা সেই আওতায় পড়বে না।'