Advertisment

বামিয়ান বুদ্ধ ধ্বংসের ভিলেন থেকে ইউএন স্বীকৃত জঙ্গি! দেখুন ইরানের ধাঁচে আফগান ক্যাবিনেট

Afghanisthan Crisis: আফগানিস্তানের শান্তি, স্থিতি, উন্নয়নের পক্ষে সওয়াল করে বিবৃতি দিয়েছে তালিবান।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Afghan blast At least 100 dead wounded many

আফগানিস্তানের পতাকা

Afghanisthan Crisis: বিস্তর টালবাহানার পর মঙ্গলবার আফগানিস্তানের অন্তর্বর্তী সরকার ঘোষণা করেছে তালিবান। সাংবাদিক বৈঠক করে ঘোষিত হয়েছে মন্ত্রিসভার সদস্যদের নাম। আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইরানের ধাঁচে কাজ করবে আফগান মন্ত্রিসভা। ইরানে যেমন মন্ত্রিসভার মাথায় প্রধান ধর্মযাজক পদে একজন নিযুক্ত। যদিও সরকারি কাজকর্মের সঙ্গে সেই যাজকের কোনও সম্পর্ক নেই। এখানেও মন্ত্রিসভার মাথায় প্রধান ধর্মযাজক হিসেবে কাজ করবেন হিবায়তুল্লা আখুন্দজাদা। ইতিমধ্যে তাঁর পরামর্শ মেনেই আফগানিস্তানের শান্তি, স্থিতি, উন্নয়নের পক্ষে সওয়াল করে বিবৃতি দিয়েছে তালিবান। এমনকি, দেশজুড়ে ইসলামি রীতি ও শরিয়ত আইন মেনেই সরকার চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন আখুন্দজাদা।

Advertisment

এদিকে, ১৫ অগস্ট কাবুল পতনের পরে একাধিকবার সরকার গঠনের উদ্যোগ নিলেও পিছিয়ে এসেছে তালিবান নেতৃত্ব। কিন্তু দিন তিনেক আগে পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল ফৈয়াজ হামিদের কাবুল সফর আফগানিস্তানের সরকার গঠনে তালিবানদের মধ্যে থাকা বিভ্রান্তি এবং কোন্দল দূর করেছে। এমনটাই সূত্রের খবর।   

অপরদিকে, তালিবানের অন্তর্বর্তী সরকার বিশ্লেষণ করে ৭টি প্রধান নির্যাস বের করেছেন আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা। কী সেই ৭ নির্যাস?

  • আফগানিস্তানের অন্তর্বর্তী সরকারে পাকিস্তানের প্রভাব সর্বত্র

আইএসআইয়ের মদতে এই সরকার গঠন হয়েছে। যেখানে পাক ঘনিষ্ঠ সন্ত্রাসবাদী সংগঠন হাক্কানি নেটওয়ার্ক এবং কান্দাহারে থাকা তালিবানি নেতৃত্ব প্রাধান্য পেয়েছে। কাতার থেকে তালিবানের যে অংশ এযাবৎকাল আন্তর্জাতিক দুনিয়া এবং ভারতের সঙ্গে দৌত্য চালিয়েছে, তাদের প্রভাব কমানো হয়েছে নবগঠিত মন্ত্রিসভায়।

  • সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়েছে ইউএস র‍্যাডারে থাকা জঙ্গিগোষ্ঠী হাক্কানি নেটওয়ার্ক

দেশের অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী হয়েছেন সিরাজুদ্দিন হাক্কানি। তার বিরুদ্ধে নোটিস জারি করে মাথার দাম ধার্য করেছে পেন্টাগন। একদা সিআইএ ঘনিষ্ঠ জালালুদ্দিন হাক্কানির ছেলে সিরাজুদ্দিন। ২০১৮ সালে মৃত্যু হয়েছে জালালুদ্দিনের। আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী সংগঠন আল-কায়দার খুব ঘনিষ্ঠ হাক্কানি নেটওয়ার্ক। পাকিস্তানের উত্তর ওয়াজিরিস্তানে ঘাঁটি এই জঙ্গি সংগঠনের। ২০০৮ সালে কাবুলে ভারতীয় দূতাবাসে হামলার ঘটনায় দায় নিয়েছিল হাক্কানি নেটওয়ার্ক। তাই হাক্কানি নেটওয়ার্ককে আফগানিস্তান মন্ত্রিসভায় স্থান দেওয়ার মধ্যে আইএসআইয়ের হাত দেখছে নয়াদিল্লি

  • প্রথম তালিবানি আমলের সদস্যরা এবার ঘুরিয়ে ফিরিয়ে মন্ত্রিসভায় জায়গা পেয়েছে

১৯৯৬-২০০১ প্রথম তালিবানি শাসনে যারা আফগানিস্তান শাসন করেছেন। এবারেও আইএসআই ঘনিষ্ঠ সেই নেতৃত্বর হাতেই ক্ষমতা তুলে দেওয়া হয়েছে। যাদের মধ্যে অনেকেই রাষ্ট্রসঙ্ঘের জঙ্গি তালিকাভুক্ত। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী মোল্লা হাসান আখুন্দ। কট্টরবাদী জঙ্গি নেতা হিসেবে পরিচিত আখুন্দের নেতৃত্বেই ভাঙা হয়েছিল বামিয়ানের বুদ্ধ মূর্তি।

  • প্রভাব কমানো হয়েছে মোল্লা আবদুল ঘানি বরাদরের। তালিবানের আফগানিস্তান দখলের পর থেকেই চর্চায় বরাদরের নাম। তালিবানের প্রতিষ্ঠাতা-সদস্য মোল্লা ওমরের ঘনিষ্ঠ বরাদর ১৯৯৪ থেকেই সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। তাঁর নেতৃত্বেই আমেরিকার সঙ্গে কাতারে দোহা চুক্তি সই করেছে তালিবান। কিন্তু অন্তর্বর্তী মন্ত্রিসভায় তাঁকে দ্বিতীয় গুরুপদে বসানো হয়েছে। আখুন্দের ডেপুটি হিসেবে।
  • প্রথমবার যখন ক্ষমতা দখল করেছিল তালিবান, তখন একাধিক প্রতিশ্রুতি পালনের কথা বলেছিল। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে কোনও প্রতিশ্রুতি পালন হয়নি। যেমন শাসন ক্ষমতায় দেশের সব অংশের প্রতিনিধিত্বের কথা বললে, অন্তর্বর্তী মন্ত্রিসভায় নেই কোনও মহিলা প্রশাসক। এমনকি, সে দেশের সংখ্যালঘু অ-পাশতুন সম্প্রদায়কে গুরত্ব দেওয়া হয়নি ক্যাবিনেটে। মন্ত্রিসভার ৩৩ সদস্যের মধ্যে মাত্র তিন জন অ-পাশতুনকে জায়গা দেওয়া হয়েছে।
  • ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে পারে এমন নেতৃত্বকে সুকৌশলে বাদ দেওয়া হয়েছে মন্ত্রিসভার গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে। শের মহম্মদ আব্বাস স্তানেকজাই। আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে নয়াদিল্লিও ধরে নিয়েছিল তালিবানের এই আমলে বিদেশমন্ত্রী হবেন স্তানেকজাই। সেই সুত্র ধরে স্তানেকজাইয়ের সঙ্গে আগাম বৈঠক সেরে রাখেন কাতারে ভারতের রাষ্ট্রদূত দীপক মিত্তল। স্তানেকজাইয়ের ভারতীয় সম্পর্ক আছে। আফগান সেনার সদস্য হিসেবে দেরাদুনে ইন্ডিয়ান মিলিটারি অ্য়াকাডেমির ছাত্র ছিল স্তানেকজাই। ইতিমধ্যে পশ্চিমী অনেক দেশের সঙ্গে দৌত্য চালিয়েছেন স্তানেকজাই। কিন্তু আমির খান মুত্তাকিকে করা হয়েছে বিদেশমন্ত্রী। স্তানেকজাই ডেপুটি।
  • ২০০১ সালে মার্কিন সেনা বাহিনী তালিবানের সঙ্গে যুদ্ধ করে আফগান দখলের পর একাধিক তালিবান যোদ্ধাকে বন্দি বানিয়েছিল। বিশেষ বিমানে তাদের উড়িয়ে এনে রাখা হয়েছিল গুয়েনতানামো বে’র জেলখানায়। সেই জেলখানার বন্দি কয়েকজন এবারের মন্ত্রিসভার সদস্য। যেমন খৈরউল্লা খৈরখাঁ, আবদুল হক ওয়াজিক প্রমুখ।   

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন   টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

isi Kabul Update Afghanisthan Crisis Taliban interim Government Hakkani Network
Advertisment