২৯ অক্টোবর, মঙ্গলবার, ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ সরকারিভাবে দেশের পরবর্তী প্রধান বিচারপতি হিসেবে শরদ অরবিন্দ বোবদের নাম ঘোষণা করলেন। আগামী ১৮ নভেম্বর বিদায়ী প্রধান বিচারপতি অবসরগ্রহণের পর বোবদে শপথগ্রহণ করবেন।
বিচারপতি বোবদেকে সিনিয়রিটির নিয়ম মেনে বাছাই করা হয়েছে। প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ কেন্দ্রকে লেখা এক চিঠিতে তাঁর নাম প্রস্তাব করেছেন।
বোবদে হবেন ভারতের ৪৭ তম প্রধান বিচারপতি। মহারাষ্ট্রের নাগপুর অঞ্চল থেকে মহম্মদ হিদায়েতুল্লার পর তিনি দ্বিতীয় প্রধান বিচারপতি হতে চলেছেন। বোবদের কার্যকালের মেয়াদ হবে ১৭ মাস। ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে তিনি অবসর নেবেন।
কে এই বিচাপপতি এস এ বোবদে?
১৯৫৬ সালে নাগপুরে এক আইনজীবী পরিবারে বোবদের জন্ম। তাঁর বাবা অরবিন্দ শ্রীনিবাস বোবদে মহারাষ্ট্র সরকারের দুবারের অ্যাডভোকেট জেনারেল। প্রথমবারে ১৯৮০ সালে কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রী এ আর আন্তুলের সময়কালে তিনি অ্যাডভোকেট জেনারেল হন, পরবর্তী ১৯৮৫ সালের কংগ্রেস সরকারের সময়েও তিনি ওই পদে ফের অধিষ্ঠিত হন।
বিচারপতি বোবদের ভাই বিনোদ বোবদেও সাংবিধানিক আইনজীবী ছিলেন।
বিচারপতি বোবদের কর্মজীবন:
১৯৯৮ সালে তিনি সিনিয়র অ্যাডভোকেট হন। ২০০০ সালে তিনি বম্বে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি নিযুক্ত হন। ২১ বছরের কর্মজীবনে তিনি আদর্শ হাউজিং কেলেঙ্কারি এবং লাভাসা কর্পোরেশন লিমিটেডের বিরুদ্ধে জনস্বার্থ মামলার মত বড় সড় মামলার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি।
২০১২ সালে তিনি মধ্য প্রদেশ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন।
২০১৩ সালে তিনি সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হন।
সুপ্রিম কোর্টে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ মামলার বিচারপতি ছিলেন বোবদে। এর মধ্যে রয়েছে গোপনীয়তাকে মৌলিক অধিকার হিসেবে ঘোষণা করা ৯ বিচারপতির বেঞ্চের সদস্য ছিলেন তিনি। রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বাধীন যে বেঞ্চ অযোধ্যা জন্মভূমি মামলার রায় দেবে, সে বেঞ্চেরও সদস্য তিনি।
এনআরসি মামলার শুনানি প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বাধীন যে তিন সদস্যের বেঞ্চে চলছে, তার অন্য দুই সদস্য হলেন রোহিংটন ফলি নরিম্যান এবং বিচারপতি বোবদে।
ভগবান বাসবান্নার অনুগামীদের ধার্মিক অনুভূতিতে আঘাত করার জন্য কর্নাটক সরকার একটি বই নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে যে মামলায় দুই সদস্যের বেঞ্চ ওই সিদ্ধান্ত বহাল রাখতে বলে তার সদস্য ছিলেন বোবদে।
প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের সঙ্গে ২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্টের সবচেয়ে সিনিয়র চারজন বিচারপতি, রঞ্জন গগৈ, চেলেমেশ্বর, লোকুর ও জোসেফের মতপার্থক্যের সময়ে বোবদে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগের সময়ে বিষয়টি দেখার জন্য বিচারপতি ইন্দিরা ব্যানার্জি এনং ইন্দু মালহোত্রার সঙ্গে তাঁকেও মনোনীত করা হয়েছিল।
Read the Full Story in English