Sheikh Hasina India and Bangladesh: বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেদেশে একাধিক ফৌজদারি মামলার মুখোমুখি হয়েছেন। তার জেরে, বাংলাদেশের বর্তমান সরকার তাঁকে প্রত্যর্পণের জন্য ভারতের ওপর চাপ দিতে পারে। বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের বর্তমান বিদেশমন্ত্রী তৌহিদ হোসেন একথা জানান। তিনি বলেছেন যে, হাসিনার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে তাঁর বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র এবং আইন মন্ত্রক যদি সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে বাংলাদেশে তাঁকে 'ফিরে আসতে' হবে। একইসঙ্গে তৌহিদ হাসান জানিয়েছেন যে, এই ধরনের পরিস্থিতি কূটনৈতিকভাবে ভারতকে বিব্রত করতে পারে। তৌহিদের আশা, ভারত বিষয়টির প্রতি 'নজর দেবে।'
ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে কি প্রত্যর্পণ চুক্তি আছে?
ভারত এবং বাংলাদেশ ২০১৩ সালে একটি প্রত্যর্পণ চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল। ২০১৬ সালে সেই চুক্তি সংশোধন করা হয়েছিল। যাতে দুই দেশের মধ্যে পলাতক বন্দিদের বিনিময় সহজ এবং দ্রুত হয়। এই চুক্তিটি বেশ কিছু ভারতীয় পলাতক, বিশেষ করে উত্তর পূর্বের বিদ্রোহী গোষ্ঠীকে চাপে ফেলেছিল। ওই বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো তার আগে বাংলাদেশে লুকিয়ে ভারতের বিরুদ্ধে কাজ করত। একই সময়ে, বাংলাদেশও জামাত-উল-মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি)-এর মতো সংগঠনগুলোর জেরে সমস্যায় পড়েছিল। জেএমবির অপারেটিভরা ভারতের পশ্চিমবঙ্গ এবং অসমের মত রাজ্যে লুকিয়ে থাকত। ভারত এবং বাংলাদেশের সেই চুক্তির জেরে ২০১৫ সালে ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অফ অসম (উলফা)-এর শীর্ষনেতা অনুপ চেটিয়াকে সফলভাবে বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রত্যর্পণ করা সহজ হয়। তারপর থেকে, প্রত্যর্পণের চুক্তির ভিত্তিতে বাংলাদেশ আরও একজন পলাতককে ভারতের কাছে হস্তান্তর করেছে। সূত্রের খবর, ভারতও এই চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশের পলাতক কয়েকজনকে সেদেশের কাছে হস্তান্তর করেছে।
চুক্তিটিতে কী বলা আছে?
চুক্তিটিতে বলা আছে, ভারত ও বাংলাদেশ এমন ব্যক্তিদের প্রত্যর্পণ করবে, যাদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট দেশে, 'মামলা রয়েছে… বা যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে বা যাদের সংশ্লিষ্ট দেশের আদালত দোষী সাব্যস্ত করেছে।' প্রত্যর্পণযোগ্য অপরাধ চুক্তিতে বলা হয়েছে, এই ক্ষেত্রে যাদের ফেরানো হবে, তাদের অপরাধ সর্বনিম্ন একবছরের কারাদণ্ডের যোগ্য। এর মধ্যে আর্থিক অপরাধও রয়েছে। গুরুত্বপূর্ণভাবে, একটি অপরাধ প্রত্যর্পণযোগ্য হওয়ার জন্য, দ্বৈত অপরাধের নীতি অবশ্যই প্রযোজ্য হবে। যার অর্থ সংশ্লিষ্ট অপরাধটি অবশ্যই উভয় দেশেই শাস্তিযোগ্য হতে হবে।
আরও পড়ুন- জেনারেল জিয়ার মৃত্যু ষড়যন্ত্র! কীভাবে হয়েছিল, জানলে হাত-পা কাঁপবে
এই নিয়মের ব্যতিক্রম আছে কি?
এই নিয়মের ব্যতিক্রম আছে। চুক্তিতে বলা হয়েছে যে অপরাধটি 'রাজনৈতিক প্রকৃতির' হলে প্রত্যর্পণ প্রত্যাখ্যান করা হতে পারে। তবে এটি অপরাধের প্রকৃতি দ্বারা সীমাবদ্ধ। অপরাধের তালিকা যেগুলোকে 'রাজনৈতিক' হিসেবে গণ্য করা যায় না, সেগুলো হল- হত্যা। তা সে নরহত্যা বা অপরাধমূলক হত্যা, যাই হোক না কেন। আক্রমণ অথবা বিস্ফোরণের মাধ্যমে জীবন বিপন্ন করা। বিস্ফোরক পদার্থ বা অস্ত্র তৈরি বা দখলে রাখা। গ্রেফতার রুখতে বা গ্রেফতার প্রতিরোধ করতে আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার। জীবন বিপন্ন করার অভিপ্রায়-সহ সম্পত্তির ক্ষতি করা। অপহরণ বা পণবন্দি করা। হত্যার প্ররোচনা দেওয়া। সন্ত্রাস সম্পর্কিত অন্য কোনও অপরাধ।