রবিবার, ১৯ জানুয়ারি মহারাষ্ট্রের মন্দিরনগরী শিরডিতে বন্ধ পালিত হয়েছে। ১৯ শতাব্দীতে জন্মগ্রহণ করা সাইবাবার জন্মস্থান নিয়ে বিতর্কের প্রেক্ষিতে এই বনধ। সকালে মন্দির খুলে দেওয়া হয়েছিল ভক্তকুলের জন্য, লম্বা লাইনও পড়েছিল সেখানে। কিন্তু দোকানপাট সবই বন্ধ ছিল, বন্ধ ছিল পরিবহণও।
শিরডির স্থানীয় বাসিন্দারা মহারাষ্ট্র সরকারের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করছেন। সরকার পারভানি জেলার পাথরি শহরে সাই বাবার জন্মস্থান হিসেবে উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করেছে। শিরডির বাসিন্দাদের দাবি পাথরিতে সাইবাবার জন্মগ্রহণের ব্যাপারে কোনও সুনির্দিষ্ট তথ্যপ্রমাণ নেই। এদিকে পাথরির বাসিন্দাদের দাবি, সাইবাবা যে তাঁদের শহরেই জন্মেছিলেন তা প্রমাণ করবার ২৯টি নথি রয়েছে তাঁদের কাছে।
বিষয়টি প্রথম সামনে আসে ২০১৭ সালে, যখন রাষ্ট্রপতি সে বছরের অক্টোবর মাসে বলেন, সাইবাবা পাথরিতে জন্মেছিলেন। বিতর্ক মাথা চাড়া দেয় উদ্ধব ঠাকরে মুখ্যমন্ত্রী হবার পরেই সাইবাবার জন্মস্থল হিসেবে কথিত পাথরিকে ১০০ কোটি টাকা দেবার কথা ঘোষণা করায়।
সাইবাবার জন্মস্থল নিয়ে নানা বিশ্বাস
সাইবাবা একজন আধ্যাত্মিক গুরু। বিভিন্ন রকম বিশ্বাসের লোকজন তাঁর শরণ নিয়েছেন। ভারত তো বটেই, বিদেশনিবাসী বহু ভারতীয়ও তাঁর শিষ্য। সাই শব্দটা পারসি উদ্ভূত। এর অর্থ পবিত্র ব্যক্তি। নিজের জীবৎকালে সাইবাবা কখনও তাঁর আসল নাম, জাতি বা ধর্ম প্রকাশ করেননি।
লোকসত্তায় প্রকাশিত একটি রিপোর্ট অনুসারে সাইবাবার জন্মস্থান নিয়ে যে বিভিন্ন বিশ্বাস রয়েছে, সেগুলি হল-
১. পারভানির পাথরি শহরের বাসিন্দাদের মতে তাঁদের শহরেই জন্মেছিলেন সাইবাবা। সাইবাবার জীবনী শ্রী সাইচরিত-এর অষ্টম সংস্করণে তার উল্লেখ আছে বলে দাবি করছেন তাঁরা।
২. কেউ কেউ দাবি করেন, সাইবাবার জন্ম তামিলনাড়ুতে। এঁদের বক্তব্য অনুসারে সাইবাবার মায়ের নাম ছিল বৈষ্ণবদেবী ও বাবার নাম ছিল আবদুল সাত্তার। পরে তিনি সেখান থেকে শিরডি যান।
শ্রী সাই লীলা ত্রৈমাসিক পত্রের ১৯৫২ অক্টোবর-ডিসেম্বর সংখ্যায় বলা হয়েছিল, সাইবাবার বাবার নাম শাঠে শাস্ত্রী ও মায়ের নাম মহালক্ষ্মী। এর সমর্থনে একটি তামিল গ্রন্থের উল্লেখ করা হয় সেখানে।
৪. গুজরাটি ভাষার পত্রিকা সাই সুধায় দাবি করা হয়েছে সাই বাবা জন্মেছিলেন জেরুজালেমের জাফা গেটে। সেখানে দাবি করা হয়েচে তাঁর বাবা মা দুজনেই ছিলেন গুজরাটি ব্রাহ্মণ।
৫. ১৯৫৯ সালে সুমন সুন্দরের লেখা বই সাই লীলায় বলা হয়েছে বাবা পাথরিতে জন্মগ্রহণ করেন। এই বই অনুসারে তাঁর বাবার নাম গঙ্গাভাউ এবং মায়ের নাম দেবগিরি আম্মা। পাথরি শহরের উল্লেখ এ বইয়ে করা হলেও সেখানে বলা হয়েছে এ পাথরি হায়দরাবাদ রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত।