ভাইরাস একটাই, কিন্তু ক্ষমতায় এই মুহুর্তে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিধর সে। মহামারীকে ছাপিয়ে অতিমারী হতে হাতে গোনা সময় লেগেছে করোনা ভাইরাসের। ভ্যাকসিন ছাড়া এই জীবাণুকে আটকানোর সামর্থ্য আমাদের কারুর নেই। কিন্তু এরই মধ্যে করোনা পরীক্ষা নিয়ে তৈরি হয়েছে একাধিক বিতর্ক। টেস্টের রিপোর্ট ঘিরেও জনসাধারণের মধ্যে তৈরি হচ্ছে একরাশ ধোঁয়াশা। ভুল রিপোর্টই ডেকে আনছে মারণ বিপদ?
এখন যা পরিস্থিতি জ্বর-কাশি হলেই কি টেস্ট করা উচিত?
করোনা উপসর্গের সঙ্গে হুবহু মিলে গেলে তবেই টেস্ট নচেৎ নয়। মনে হতে পারে কেন এমন বলা হচ্ছে! বিশেষজ্ঞরাই জানাচ্ছেন উপসর্গের বাড়বাড়ন্ত না থাকলে করোনা পরীক্ষা করতে গিয়ে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকছে। আমাদের দেশে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ১০০ শতাংশ সঠিকভাবে করোনা পরীক্ষা কোথাও হচ্ছে না। এটা সম্ভবও নয় বলেই মত। স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর যে দৃঢ়তা থাকা প্রয়োজন তৃতীয় বিশ্বের দেশ ভারতে তা নেই। তাই অনেকক্ষেত্রে করোনা পরীক্ষাকেন্দ্র থেকেই রোগ বহন করে ফিরছে অনেকে।
রিপোর্ট যদি নেগেটিভ আসে এর অর্থ কী আমি আক্রান্ত কিংবা পজিটিভ আসা মানে আক্রান্ত নই?
এই প্রশ্নের একটাই উত্তর- হতেও পারে, হতে নাও পারে। এই অনিশ্চয়তার উত্তরের একটাই কারণ তা হল পরীক্ষাকেন্দ্র কেমন সেটা। আইসিএমআর নির্দেশিকা মেনে নাইসেড-এ যেভাবে পরীক্ষা হয় তা নির্ভুল। অন্যান্য বেশ কিছু বেসরকারি এবং সরকারি জায়গাতেও রিপোর্ট নিয়ে ভুলভ্রান্তি হয়েছে। তাই এক্ষেত্রে ১০০ শতাংশ নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না। চিকিৎসার ক্ষেত্রে দুটি জিনিষ মাথায় রাখা হচ্ছে। প্রথমে রোগ নির্ণয় করা। দ্বিতীয় সঠিকভাবে তা নির্ণয় হচ্ছে কি না তা দেখা। গলদ থাকছে সেখানেই।
ভুল রিপোর্ট কতটা ভুল?
পজিটিভ হোক কিংবা নেগেটিভ, ভুল রিপোর্টেই তৈরি হচ্ছে একাধিক সমস্যা। করোনাই নেই অথচ রিপোর্টে এল করোনা পজিটিভ! ভাবুন সেই চিকিৎসা সুস্থ দেহে কতটা মারাত্মক। সম্পূর্ণ ভুল রিপোর্টে ভুল চিকিৎসায় মৃত্যু অনিবার্য হতে পারে। আবার এর ঠিক উল্টোটা। অর্থাৎ করোনা আছে কিন্তু রিপোর্ট এল নেগেটিভ। যিনি ভুক্তভোগী তিনি বাজার করে, দোকান হাট করে নিজের অজান্তেই কয়েকশো মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দিলেন মারণ ভাইরাস। দোষ কার? মানুষ না মেশিনের? তর্কাতীত বিষয়।
রিপোর্ট ভুল বা ঠিক কীভাবে মাপা হচ্ছে?
এক্ষেত্রে দুটি বিষয় মাথায় রাখছেন গবেষকরা। এক, সেনসিটিভিটি এবং দুই, স্পেসিফিসিটি। একটি নির্দিষ্ট ফর্মুলা মেনে ঠিক ভুলের বিষয়টি মাপা হচ্ছে। তবে এক্ষেত্রেও অনেকটাই 'ধরে নেওয়া' হচ্ছে।
তবে কি উপসর্গ হলে পরীক্ষা করা উচিত?
অবশ্যই উচিত। উপসর্গহীনদের ক্ষেত্রে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া কষ্টসাধ্য। কিন্তু করোনা উপসর্গ টের পেলে পরীক্ষা করা উচিত। সেক্ষেত্রে যদি নেগেটিভ আসে তাহলে দ্বিতীয়বার টেস্ট করা উচিত। উপসর্গ থাকলেও কেন রিপোর্ট নেগেটিভ এল তা নিয়ে উপরিউক্ত প্রক্রিয়াতেও বিশ্লেষণ করা যেতে পারে।
Read the full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন