Advertisment

খালিস্তানি সংগঠন নিষিদ্ধ - কারণগুলো কী

পাঞ্জাব পুলিশ বলছে এসএফজে এবং রেফারেন্ডাম ২০২০ পাকিস্তানের সমর্থনপুষ্ট। গোয়েন্দা আধিকারিকরা বলছেন, এসএফজে-র যে ওয়েবসাইট তার ডোমেইনের এবং একটি করাচির ওয়েবসাইটের ডোমেইন একই।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
SFJ Banned

২০০৭ সালে তৈরি হয় এই সংগঠন

বুধবার কেন্দ্র একটি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনকে নিষিদ্ধ করেছে। সংগঠনটির নাম শিখস ফর জাস্টিস। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই সংগঠনটি পাঞ্জাবকে বিচ্ছিন্ন করার জন্য প্রচার চালিয়ে থাকে।

Advertisment

সংগঠনটির পরিচয়

শিখস অফ জাস্টিস (এসএফজে) তৈরি হয় ২০০৭ সালে। আমেরিকার এই সংগঠনটি শিখদের জন্য পৃথক ভূমি অর্থাৎ খালিস্তানের দাবিদার। গুরপাতওয়ান্ত সিং পান্নুন নামে পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গ্র্যাজুয়েট, এবং বর্তমানে এসএফজে-র মুথ তথা আইনি উপদেষ্টা। বিচ্ছিন্নতাবাদী এই প্রচার চলে রেফারেন্ডার ২০২০ নামে। এদের লক্ষ্য পাঞ্জাবকে ভারতের হাত থেকে মুক্ত করা। পান্নুনের নিজের কথায়, ২০২০ সালের নভেম্বর মাসে পাঞ্জাবে এবং পৃথিবীর বেশ কিছু বড় শহরে এই রেফারেন্ডাম নিয়ে ভোটাভুটির পরিকল্পনা রয়েছে এসএফজে-র। যেসব দেশে ভোট হওয়ার কথা সেগুলির মধ্যে রয়েছে উত্তর আমেরিকা, ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ফিলিপিন্স, সিঙ্গাপুর, কেনিয়া এবং মধ্য প্রাচ্যের দেশগুলি।

রেফারেন্ডাম ২০২০-র একটি ওয়েবসাইটও রয়েছে, যাতে বলা হয়েছে, ভারত থেকে স্বাধীন হওয়ার ব্যাপারে পাঞ্জাবি মানুষদের মধ্যে ঐকমত্য হয়ে গেলে আমরা রাষ্ট্র সংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার কাছে গিয়ে পাঞ্জাবকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা চালাব।

নিষিদ্ধ

ইউএপিএ আইনে এসএফজে-কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করার সময়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে, তথাকথিত শিখ রেফারেন্ডামের নামে এসএফজে পাঞ্জাবে বিচ্ছিন্নতাবাদ এবং সন্ত্রাসবাদী আদর্শকে উৎসাহ দিচ্ছে। এরা বিদেশি ভূমি থেকে নিরাপদে কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছে এবং এদের সমর্থন করছে অন্যদেশে শত্রুশক্তি।

পাঞ্জাব পুলিশ যে একটি ডসিয়ের তৈরি করেছে। তাতে দেখা যাচ্ছে সোশাল মিডিয়ায় এসএফজে কয়েক বছর ধরে বিচ্ছিন্নতাবাদী পোস্ট করেছে, পুলওয়ামা হামলাকে জঙ্গি কার্যকলাপ বলে চিহ্নিত করা যায় না, এই মত পোষণ করেছে কাশ্মীরী বিচ্ছিন্নতাবাদীদের উৎসাহ দেওয়ার জন্য, ভারত থেকে পলাতকদের দেশে যাতে প্রত্যর্পণ না করা হয়, সে ব্যাপারে তাদের আইনি সহায়তা দিয়েছে। বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে  খালিস্তানপন্থী সমর্থকরা ম্যাঞ্চেস্টারে রেফারেন্ডাম ২০২০ লেখা টি শার্ট পরে হাজির হয়েছিলেন। এই ঘটনাও এই নিষিদ্ধকরণের সিদ্ধান্ত কার্যকর করার অন্যতম কারণ হতে পারে।

এসএফজে এবং পান্নুনের বিরুদ্ধে একডজনেরও বেশি মামলা দায়ের করা হয়েছে, এর মধ্যে পাঞ্জাবে দায়ের করা হয়েছে তিনটি দেশদ্রোহিতার মামলা।

 পাক যোগাযোগ

পাঞ্জাব পুলিশ বলছে এসএফজে এবং রেফারেন্ডাম ২০২০ পাকিস্তানের সমর্থনপুষ্ট। গোয়েন্দা আধিকারিকরা বলছেন, এসএফজে-র যে ওয়েবসাইট তার ডোমেইনের এবং একটি করাচির ওয়েবসাইটের ডোমেইন একই। পান্নুম নিজেই বলেছেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে তিনি ফোন করে রেফারেন্ডাম ২০২০কে রাজনৈতিক সমর্থন দিতে বলেছেন। এ ব্যাপারে তিনি ভারতীয় সেনাবাহিনীর সাহায্যে ১৯৭১ সালে ঢাকার পতনের কথা উল্লেখ করেছেন। একই সঙ্গে ১৯৮৪ সালে ঘটনাবলীতে শিখদের সমর্থন না করার পাকিস্তানি ব্যর্থতাকে ভুলিয়ে দিতে বলেছেন। এসবই পাঞ্জাব পুলিশের ডসিয়েরে উল্লিখিত রয়েছে।

এসএফজের পিছনে

আইনের স্নাতক ও এমবিএ পান্নুন বারবার শিরোনামে এসেছেন ভারতীয় রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে মামলা করার সুবাদে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তিনি সফররত প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং ও নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে ১৯৮৪-র শিখ বিরোধী দাঙ্গা ও গুজরাটের গোধরা দাঙ্গা ইস্যুতে মামলা করেন। ২০১৬ সালে পাঞ্ডাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিংকে এসএফজে-র মামলার কারণে কানাডা সফর বাতিল করতে হয়। এমনকী অমিতাভ বচ্চনের বিরুদ্ধেও মামলা করেছেন পান্নুন।

নিষিদ্ধ হওয়ার পর

অমরিন্দর সিং এই নিষিদ্ধির নির্দেশকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, আইএসআইয়ের সমর্থনপুষ্ট ভারত বিরোধী বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তির হাতে থেকে দেশকে রক্ষা করার এটি প্রথম ধাপ। পাঞ্জাবের আরেক মন্ত্রী সুখজিন্দর সিং রণধাওয়া, যাঁকে একবার পান্নুন হুমকি দিয়েছিলেন, তিনি বলেছেন, এফআইআরে যেহেতু পান্নুনের নাম রয়েছে, আমাদের উচিত ওর প্রত্যর্পণের দাবি জানানো।

এর প্রতিক্রিয়ায় পান্নুন একটি ভিডিও আপলোড করেছে যাতে তাঁকে ভারতীয় পতাকায় আগুন দিতে দেখা যাচ্ছে। ভিডিওয় একটি বার্তাও দেওয়া হয়েছে- তোমরা রেফারেন্ডাম আটকাতে পারবে না।

Read the Full Story in English

Advertisment