প্রতিবছর ১৬ মে সিকিম দিবস পালিত হয়। ১৯৭৫ সালে সিকিম ভারতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল। সেই ঘটনার স্মরণে এই দিনটি পালিত হয়। এবছরও দিনটি পালিত হল। রাজনৈতিক নেতারা, যেমন কংগ্রেস পার্টির প্রধান মল্লিকার্জুন খাড়গে, রাহুল গান্ধী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা বিজেপির নেতা অমিত শাহ সিকিম দিবসে তাঁদের শুভেচ্ছাবার্তা জানিয়েছেন। ২২তম রাজ্য হিসেবে সিকিম ভারতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল ভারতে রাজ্যগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করার ওপর জোর দিয়েছিলেন। সর্দার প্যাটেলের সেই চেষ্টার প্রায় দুই দশক পরে সিকিম ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল। কীভাবে, চলুন দেখে নিই।
চোগিয়াল রাজপরিবারের সাথে সিকিমের ইতিহাস
সিকিম রাজ্য ১৬৪২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। কথিত আছে, তিন জন তিব্বতি লামা ফুন্টসং নামগ্যালকে সিকিমের প্রথম শাসক বা চোগিয়াল হিসেবে সম্মানিত করেছিলেন। নামগিয়াল রাজবংশের রাজতন্ত্র ১৯৭৫ সালে সিকিমের ভারতভুক্তি পর্যন্ত ৩৩৩ বছর ধরে টিকে ছিল। সিকিমের চোগিয়াল রাজবংশ ছিল তিব্বতি বংশোদ্ভূত। ভারত ও চিনের মধ্যে চিঁড়েচ্যাপ্টা হয়ে যাওয়া সিকিমের সঙ্গে হামেশাই ভুটান এবং নেপালের ভূমি নিয়ে বিরোধ চলত। ভারতের ব্রিটিশ উপনিবেশ হওয়ার পর প্রথমে দুই দেশের মধ্যে এক ধরনের আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক তৈরি হয়।
আরও পড়ুন- কুনোয় একের পর এক চিতা মৃত্যুতে প্রশাসনের কপালে ভাঁজ, চিতারা কি স্বল্পায়ু?
ব্রিটিশদের চোখে বাফার রাজ্য
ব্রিটিশরা বরাবরই সিকিমকে চিনের এবং নেপালের বিরুদ্ধে একটি বাফার রাষ্ট্র হিসেবে দেখেছে। নেপাল ও ব্রিটিশ বাহিনীর মধ্যে (১৮১৪-১৬ সাল) যুদ্ধ হয়। যা, অ্যাংলো-গোর্খা যুদ্ধ নামে পরিচিত। এই যুদ্ধ সিকিমের বিভিন্ন অঞ্চলকে সুরক্ষিত করেছিল। বলা ভালো নেপালের থেকে মুক্ত করেছিল। কারণ, নানা সময়ে নেপাল ওই অঞ্চলগুলো দখল করে নিয়েছিল। ১৮৬১ সালে তুমলং চুক্তির মাধ্যমে সিকিমকে আনুষ্ঠানিকভাবে সুরক্ষা দিয়েছিল ব্রিটিশরা। যার অর্থ সিকিমের ওপর ব্রিটিশদের নিয়ন্ত্রণ ছিল। কিন্তু, সিকিম আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রিটিশদের নিয়ন্ত্রণে ছিল না। তাদের শাসনের অধীনে ছিল না। শুধু তাই নয়, চোগিয়ালরা তাদের ক্ষমতা ধরে রেখেছিল।