মণিপুর পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার বিন্যাস সম্পর্কে সরকার ও বিরোধীদের মতভেদ হওয়ার পরে বৃহস্পতিবার সংসদের বাদল অধিবেশনের উদ্বোধনী দিন ব্যাহত হয়েছিল। সরকার স্বল্পমেয়াদি আলোচনার জন্য সম্মত হলেও, বিরোধীরা জোর দিয়েছিল যে সংসদের যাবতীয় কাজকর্ম ২৬৭ ধারার অধীনে স্থগিত করতে হবে। আলোচনার পর প্রধানমন্ত্রীকে একটি স্বতঃপ্রণোদিত বিবৃতি দিতে হবে।
এখন প্রশ্ন হল বিধি ২৬৭ এবং ১৭৬ কী?
সংসদের কার্যপ্রণালী বিধি ২৬৭-র মাধ্যমে স্থগিত করা যেতে পারে। কারণ, বিধি অনুযায়ী, যে কোনও সংসদ চেয়ারম্যানের সম্মতিক্রমে, সেই দিনের অধিবেশনের তালিকাভুক্ত কাজকর্ম স্থগিতের আবেদন জানাতে পারেন। আর, সেই অনুযায়ী, কার্যপ্রণালী স্থগিত করা যেতে পারে। তবে শর্ত হল যেখানে কার্যপ্রণালী স্থগিতকরণের নির্দিষ্ট বিধিমালা রয়েছে, সেখানে এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে না। পাশাপাশি, সংসদে স্বল্পমেয়াদী আলোচনা, অথবা সংক্ষিপ্ত আলোচনা বিধি ১৭৬-এর অধীনে পরিচালিত হয়। যা আড়াই ঘণ্টার বেশি চলে না।
এতে বলা হয়েছে যে জরুরি এবং জনসাধারণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা করতে ইচ্ছুক যে কোনও সদস্য সংসদের মহাসচিবকে লিখিতভাবে নোটিশ দিতে পারেন যে বিষয়টি উত্থাপন করা হবে। এক্ষেত্রে তা স্পষ্টভাবে এবং সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে। তবে শর্ত থাকে যে নোটিশের সঙ্গে একটি ব্যাখ্যামূলক নোটও থাকতে হবে। যেখানে প্রশ্নের আলোচনার কারণ উল্লেখ করতে হবে আবেদনকারীকে। আর, নোটিশটিতে সমর্থন জানিয়ে কমপক্ষে দুই সদস্যের স্বাক্ষর এবং সমর্থনও থাকতে হবে।
আরও পড়ুন- অভিন্ন দেওয়ানি বিধি: বারবার অবস্থান বদলেছে গেরুয়া শিবির?
একবার চেয়ারম্যান নোটিশটি স্বীকার কর নিলে, নিয়ম অনুযায়ী তিনি পরিষদীয় নেতার সঙ্গে পরামর্শ করে, যে তারিখে এই জাতীয় বিষয়টি আলোচনার জন্য নেওয়া যেতে পারে, তা নির্ধারণ করবেন এবং আলোচনার জন্য আড়াই ঘণ্টার বেশি সময় দেবেন না। যার অর্থ হল, বিধি ১৭৬-এর অধীনে একটি স্বল্পমেয়াদি আলোচনা অবিলম্বে করা যেতে পারে। সময় কয়েক ঘণ্টা ন্টা পরে, পরের দিন বা পরবর্তী তারিখ হিসেবেও বেছে নেওয়া যেতে পারে। কিন্তু, নিয়ম বলছে যে স্বল্প সময়ের আলোচনায় কোনও আনুষ্ঠানিক ভোট দেওয়া যাবে না। এক্ষেত্রে বিধি অনুযায়ী, যে সদস্য নোটিশ দিয়েছেন, তিনি একটি সংক্ষিপ্ত বিবৃতি দিতে পারেন। আর, মন্ত্রী শীঘ্রই জবাব দেবেন।