Modi Government-Farmers: মোদী সরকারের চেষ্টা ব্যর্থ হল। শেষ পর্যন্ত কৃষক বিক্ষোভে কেন্দ্রীয় সরকারের সমাধানসূত্র কোনও কাজে দিল না। রবিবার মধ্যরাত পর্যন্ত প্রতিবাদী কৃষকদের সঙ্গে সরকার বৈঠক করেছিল। সেই বৈঠকে কেন্দ্রীয় সরকার একটি প্রস্তাব দেয়। প্রস্তাবটি হল, পঞ্জাবের ফসল বৈচিত্র্যের জন্য সমবায়গুলো থেকে সরকার ফসল কিনবে। এজন্য ওই সব সমবায়ের সঙ্গে সরকার চুক্তি করবে বলেও জানিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিরা। প্রস্তাব অনুযায়ী, পাঁচ বছরের জন্য চুক্তি হবে। তুর (অড়হর), উরদ, মসুর (মসুর), ভুট্টা এবং তুলা ফসল ওই সব সমবায়ের থেকে সরকার ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে (এমএসপি) কিনবে।
কারা কিনবে ফসল
এব্যাপারে খাদ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল সাংবাদিকদের বলেছেন, 'বিষয়টি একেবারেই নতুন। প্রচলিত ধারণার একদম বাইরের ব্যাপার।' পঞ্জাবের সমবায়গুলোর থেকে ন্যাশনাল কো-অপারেটিভ কনজিউমারস ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়া লিমিটেড (এনসিসিএফ), ন্যাশনাল এগ্রিকালচারাল কো-অপারেটিভ মার্কেটিং ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়া লিমিটেড (নাফেদ) এবং ভারতীয় তুলা কর্পোরেশন (সিসিআই) কোনও ঊর্ধ্বসীমা ছাড়া এই ফসলগুলো কিনবে।'
নতুন করে আন্দোলন
অবশ্য সোমবার সন্ধ্যায় আন্দোলনকারী কৃষকরা সরকারের এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে। কৃষকরা সারা দেশে সমস্ত ফসলের জন্য আইনিযুক্ত এমএসপি দাবি করেছেন। ড. স্বামীনাথন কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী এমএসপি দিতে হবে বলেই তাঁদের দাবি। একইসঙ্গে বিক্ষোভকারী কৃষকরা জানিয়ে দিয়েছেন, বুধবার সকাল ১১টায় 'দিল্লি চলো প্রতিবাদ মিছিল' ফের শুরু হবে।
কেন প্রস্তাব বাতিল করলেন কৃষকরা?
পাঞ্জাবের ভৌগলিক এলাকার ৮০% এরও বেশি (৫০.৩৩ লক্ষ হেক্টরের মধ্যে ৪১.১৭ লক্ষ হেক্টর) জমিতে ধান আর গম চাষ হয়। ২০১৯-২০ সালে, ৪১.১৭ লক্ষ হেক্টর জমিতে ধান এবং গম বপন হয়েছিল। তার মধ্যে ৩৫.২১ লক্ষ হেক্টর জমিতে গম চাষ হয়েছে। আর, ৩১.৪২ লক্ষ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে ধানের। তুলনায় তুলা চাষ হয়েছে অনেক কম ২.৪৮ লক্ষ হেক্টর, ভুট্টা ১.১৪ লক্ষ হেক্টর, ডাল (খরিফ এবং রবি উভয়ই) ৩৩ হাজার হেক্টর জমিতে। কেন্দ্র ধান-গম বাদ দিয়ে এই সব কম উৎপাদিত ফসল কেনার প্রস্তাব দিয়েছিল।
আরও পড়ুন- তোলপাড় পাকিস্তান! সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বিরাট ‘রায়’
যেখানে সমস্যা হচ্ছে কৃষকদের
হিসেব অনুযায়ী, ১ কেজি ধান উৎপাদনের জন্য প্রায় ২,৫০০ লিটার (সেচ বা বৃষ্টিপাতের মাধ্যমে) জল প্রয়োজন। এতদিন চাষের ফলে কৃষিপ্রধান পঞ্জাবের ভূগর্ভস্থ জল ব্যাপকভাবে এবং নির্বিচারে ব্যবহার করা হয়েছে। যার ফলে, ভূগর্ভস্থ জলের অভাব দেখা দিয়েছে। কৃষিজমি মরুকরণের পথে এগিয়ে গিয়েছে। পাশাপাশি, বহুমুখী ফসল উৎপাদনের চেষ্টাও ধাক্কা খেয়েছে। তুলা চাষের জমি ২০১৭-১৮ সালে ছিল ২.৯১ লক্ষ হেক্টর। সেটাই ২০২১-২২ সালে কমে ২.৫১ লক্ষ হেক্টরে নেমে এসেছে। আর, পঞ্জাবের খরিফ ফসল ভুট্টার উৎপাদন ১.১৪ লক্ষ হেক্টর থেকে ১.০৫ লক্ষ হেক্টরে নেমে এসেছে। তার মধ্যে অবশ্য ডালের উৎপাদনের পরিমাণ বেড়েছে। পঞ্জাবে ২০১৭-১৮ সালে ডাল উৎপাদিত হত ৩০,২০০ হেক্টর জমিতে। ডালের সেই চাষযোগ্য জমিই ২০২১-২২ সালে বেড়ে হয়েছে ৬২,৬০০। তবে, সেটা ব্যতিক্রম। আর, সেই কারণে কৃষকদের আর্থিক অবস্থা তলানিতে ঠেকছে। যে কারণে তাঁরা ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের দাবিতে এত সরব।