The Archaeological Survey of India (ASI): হিসেব মেলাতে গিয়ে ভারতীয় পুরাতত্ত্ব বিভাগ দেখতে পেয়েছে, দেশের বিভিন্ন সংরক্ষিত ঐতিহাসিক স্মৃতিস্তম্ভ পুরোপুরি অদৃশ্য হয়ে গিয়েছে। ওখানে যে সেসব ছিল, এখন তা বোঝাই দায়। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও দেশের সেই সব পুরাতাত্ত্বিক নির্দশন পাওয়া যায়নি। বাধ্য হয়ে তাই তালিকা ছোট করছে আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া (এএসআই)। এক বা দুই নয়। এমন ১৮টি পুরাতাত্ত্বিক নির্দশনের নাম এবার তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন হতাশ হয়ে পড়া এএসআই কর্তারা। যে নিদর্শনগুলো চুরি গিয়েছে, সেগুলোর সর্বভারতীয় গুরুত্ব ছিল বলেই এএসআই জানিয়েছে।
উধাও হয়ে যাওয়া স্মৃতিস্তম্ভ
এই সব স্মৃতিস্তম্ভের মধ্যে রয়েছে হরিয়ানার মুজেসার গ্রামের ১৩নং কোস মিনার। দিল্লির বারাখাম্বা কবরস্থান। ঝাঁসি জেলার গানার বুরকিলের সমাধি। লখনউয়ের গৌঘাটের একটি কবরস্থান। বারাণসীতে তেলিয়া নালা বৌদ্ধ ধ্বংসাবশেষ। ওই জায়গাগুলো অল্পসময়ের মধ্যে এমনভাবে বদলে গিয়েছে যে, ভারতীয় পুরাতত্ত্ব বিভাগের কর্তারা ম্যাপ নিয়ে বসেও ওই সব স্মৃতিস্তম্ভের বর্তমান অবস্থান ঠিক করতে পারছেন না।
উধাও স্মৃতিস্তম্ভগুলো নিয়ে কী করা হবে?
কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রকের অধীনে কাজ করে এএসআই। নির্দিষ্ট স্মৃতিস্তম্ভ এবং প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানগুলোকে তারা কেন্দ্রীয় আইন অনুযায়ী রক্ষা করে, সংরক্ষণ করে। ১৯০৪ সালের প্রাচীন স্মৃতিসৌধ সংরক্ষণ আইন, যা ১৯৫৮ সালে বদলে প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান আইন (AMASR আইন) হয়েছে, সেই আইন অনুযায়ী ভারতীয় পুরাতত্ত্ব বিভাগ ঐতিহাসিক স্থানগুলোকে সংরক্ষণ করে, রক্ষা করে। এই আইন অনুযায়ী, ওই সব স্মৃতিসৌধের আশপাশে কোনও ধরনের নির্মাণকাজ অনুমোদিত নয়।
ভূমি মাফিয়াদের দাপট
একবার স্মৃতিস্তম্ভটি তালিকায় ঢুকলে, সেখানে নগরায়ন বা নির্মাণকাজ করতেই দেবে না স্থানীয় থেকে সর্বভারতীয় প্রশাসন। কিন্তু, কোথায় কী? জমি মাফিয়াদের দাপটে আইন চুলোয় উঠেছে। প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন উধাও করে দেওয়া, আশপাশের জমি, ওই অঞ্চলের জমি, গোটা এলাকার মানচিত্র বদলে দেওয়া তাদের কাছে জলভাত, প্রমাণ করে দিয়েছেন জমি মাফিয়ারা। যার জেরে ভারতীয় পুরাতত্ত্ব বিভাগ বাধ্য হচ্ছে পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শনের তালিকা বদলাতে।
আরও পড়ুন- সমুদ্রমন্থনের সঙ্গে গাঁজার যোগাযোগ, শিব কি এমনি খেতেন?
কোনগুলো সংরক্ষণ করা হয়?
এএসআইয়ের বর্তমান তালিকায় ৩,৬৯৩টি স্মৃতিস্তম্ভ আছে। যে তালিকা আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ছোট হয়ে ৩,৬৭৫ হবে বলেই ভারতীয় পুরাতত্ত্ব বিভাগ জানিয়েছে। মন্দির, কবরস্থান, শিলালিপি, সমাধিস্থান, দুর্গ, প্রাসাদ, ধাপ, কূপ, পাথরকাটা গুহা, কামান এবং স্তম্ভ- যেগুলোর বয়স ১০০ বছরেরও বেশি, সেগুলোরই ঐতিহাসিক গুরুত্ব বিবেচনা করে সংরক্ষণের তালিকাভুক্ত করে এএসআই।