রবিবার সকালে ভারতের নতুন সংসদ ভবন উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। নতুন লোকসভা কক্ষ থেকে তাঁর প্রথম বক্তৃতায় মোদী বলেন, 'পঞ্চায়েত ভবন থেকে সংসদ ভবন পর্যন্ত, আমাদের অনুপ্রেরণা আমাদের দেশ এবং এর জনগণের উন্নয়ন। আজ, এই নতুন সংসদের নির্মাণে আমরা যেমন গর্বিত, তেমনই গত ৯ বছরে দেশে ৪ কোটি দরিদ্র মানুষের জন্য বাড়ি এবং ১১ কোটি শৌচাগার নির্মাণের কথা ভাবলে, সেটাও আমাকে এক অপরিসীম তৃপ্তি দেয়।'
নতুন সংসদ ভবন
শুক্রবার (২৬ মে) এতদিনকার সংসদ ভবন, যা আসলে ব্রিটিশ কাঠামো। তার পাশেই নির্মিত হয়েছে নতুন সংসদ ভবন। সেই ভবনের ছবি সরকার প্রকাশ করেছিল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নতুন সংসদ ভবনের একটি ভিডিও ক্লিপ প্রকাশ করে টুইট করেছিলেন, 'নতুন সংসদ ভবন প্রত্যেক ভারতীয়কে গর্বিত করবে। এই ভিডিওটি এই ঐতিহ্যমণ্ডিত ভবনকে তুলে ধরেছে।' প্রধানমন্ত্রীর একথা বলার কারণ, সংসদ ভবনগুলি একটি নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যকে তুলে ধরে। এই ভবন দেশের শীর্ষ আইন প্রণয়নের কেন্দ্রস্থল। যা দেশের মূল্যবোধ এবং শক্তিরও প্রতীক। শুধু ভারতই নয়। প্রত্যেক দেশেরই এমন আইন তৈরির ভবন রয়েছে। তার মধ্যে বেশ কয়েকটি খুব সুন্দর এবং রীতিমতো চোখধাঁধানো।
বিনেনহফ, হেগ
নেদারল্যান্ডসের বিনেনহফ মূলত হেগ শহরে অবস্থিত ভবনগুলোর একটি কমপ্লেক্স। ১৩শ শতাব্দীতে তা তৈরি হয়েছিল। এর সবচেয়ে নজরকাড়া অংশটি হল রিডারজাল (নাইটস হল)। বিনেনহফ ১৫৮৫ খ্রিস্টাব্দের দিকে ডাচ প্রজাতন্ত্রের প্রতীক হয়ে উঠেছিল। সেই সময় স্টেটস-জেনারেল এবং ডাচ প্রজাতন্ত্রের কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন সংস্থা এই ভবনেই ছিল। আজ, এটিতে নেদারল্যান্ডসের স্টেট জেনারেলের উভয় কক্ষের পাশাপাশি মন্ত্রণালয় এবং নেদারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় রয়েছে।
জাতীয় সংসদ ভবন, ঢাকা
বিখ্যাত স্থপতি লুই কান দ্বারা ডিজাইন করা, বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ ভবন বিশ্বের বৃহত্তম আইনসভা ভবনগুলোর একটি। ১৯৬২ সালে এই ভবন নির্মাণের বরাত দেওয়া হয়েছিল। নির্মাণকাজ শেষ হতে দুই দশক লেগেছিল। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের জন্য কিছু সময় কাজটি বন্ধ ছিল। এই ভবন বাঙালির গণতন্ত্র ও গর্বের প্রতীক। ভবনটির একটি স্মারক রয়েছে। জাতীয় সংসদ ভবনটি ৯টি ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত কংক্রিট এবং চুনাপাথরের ব্লক দিয়ে তৈরি। যার মধ্যে একটি প্রার্থনা হল এবং পথও রয়েছে, যা অষ্টভুজাকার সংসদীয় কক্ষকে ঘিরে আছে।
আরও পড়ুন- সত্যি কি সেঙ্গোল ছিল ব্রিটিশের থেকে ভারতীয়দের ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রতীক, কী বলছে ইতিহাস?
ক্যাপিটল, ওয়াশিংটন ডিসি
এর নির্মাণকাজ ১,৮০০ সালে শেষ হয়েছিল। ক্যাপিটল আমেরিকান গণতন্ত্রের প্রতীক হিসেবে সর্বজনস্বীকৃত। এখান কংগ্রেস সদস্যরা যোগদান করেন। ১৫ লক্ষ বর্গফুটজুড়ে বিস্তৃত, ৬০০টিরও বেশি কক্ষ এবং বিরাট করিডোর-সহ এই ভবনটি ১৯ শতকের নিওক্লাসিক্যাল স্থাপত্যের একটি চমৎকার উদাহরণ। এর নকশা প্রাচীন গ্রিস এবং রোমের কাঠামো থেকে অনুপ্রেরণা পেয়েছে। ক্যাপিটলটি বহুবার প্রসারিত হয়েছে এবং এর সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য সংযোজন হল এর বিরাট সাদা গম্বুজ। ১৮৫৫ থেকে ১৮৬৬ সালের মধ্যে তৈরি হওয়া এই গম্বুজটির উচ্চতা ৮৮ মিটার। গম্বুজ থেকে গোটা ওয়াশিংটন শহরকে দেখা যায়।