চিনের বাইরে যেসব দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ছড়িয়েছে, সংক্রমিতের সংখ্যার হিসেেব দক্ষিণ কোরিয়া সেই তালিকার তিন নম্বরে রয়েছে। জানা গিয়েছে, সে দেশে এই রোগ ছড়ানোর পিছনে হাত রয়েছে একটি তথাকথিত রহস্যময় ক্রিশ্চান গোষ্ঠীর। শিনচেওনজি চার্চ অফ জিসাসের একজন নির্দিষ্ট সদস্য, যাকে রোগী নং ৩১ বলে বর্ণনা করা হচ্ছে, সেই নাকি সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ঘটাচ্ছে। এর নাম দেওয়া হয়েছে মহাসংক্রামক (superspreader)।
মার্চ মাসের গোড়ায় দক্ষিণ কোরিয়ার সরকার এই ধর্মীয় গোষ্ঠীর নেতাদের বিরুদ্ধে খুনের তদন্ত করার করবার নির্দেশ দিয়েঠে। কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, সাহায্য করতে অস্বীকার করেছে এই গির্জা কর্তৃপক্ষ। অন্যেরা এই গির্জার গোপনীয় প্রকৃতি এবং অন্যান্য কারণকে রোগ ছড়ানোর ব্যাপারে দায়ী ঘোষণা করেছে।
স্প্যানিশ ফ্লু: শতবর্ষে হঠাৎ প্রাসঙ্গিক ভারতের আরেক মহামারী
কোরিয়া টাইমসের খবর অনুসারে, শিনচেওনজি গির্জা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৮৪ সালে। গির্জার প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন লি ম্যান-হী এবং তাঁর ধর্মীয় গোষ্ঠী। বলা হয়, এই গোষ্ঠীর অনুসারীর সংখ্যা ১,২০,০০০-এর বেশি। অন্য কিছু সংবাদ প্রতিবেদনের দেওয়া হিসেবে এই অনুসারীর সংখ্যা আরও বেশি, দু থেকে তিন লক্ষ। ২০০৭ সালে এই গোষ্ঠীর উপর প্রথম নজর পড়ে, যখন এক টেলিভিশনের তদন্তমূলক সাংবাদিকতায় প্রকাশিত হয়েছিস ভক্তরা বিশ্বাস করেন যে লি ম্যান-হী অমর। কোরিয়া টাইমসে এ খবর প্রকাশিত হয়েছে।
ফিনান্সিয়াল টাইমসের এক রিপোর্ট অনুসারে শিনচেওনজি গির্জা প্রতিষ্ঠার আগে, লি ম্যান-হী অন্য কিছু গির্জার সদস্য ছিল।
চিনের বাইরে সংক্রমণের হিসেবে দক্ষিণ কোরিয়ার স্থান ইতালি ও ইরানের পরেই, প্রায় ৮০০০। এখনও পর্যন্ত এই ভাইরাসের কারণে সে দেশে ৬৬ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে।
জল-সাবানই কিন্তু করোনাভাইরাস সংক্রমণ আটকানোর মোক্ষম অস্ত্র
দক্ষিণ কোরিয়ার সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের খবর এসেছে দায়েগু শহর থেকে। ১৪ মার্চ অবধি সংখ্যাটা সেখানে ৫,৫০০। এর সঙ্গে গির্জার যোগ রয়েছে বলে সন্দেহ প্রকাশ করে প্রশাসন। দায়েগুর মোট ৫৫০০ সংক্রমিতে মধ্যে ৪৩০০ সংক্রমণের সঙ্গে গির্জার যোগ চিহ্নিত করেছে কোরিয়ান সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল। তাদের ধারণা দক্ষিণ কোরিয়ায় মোট সংক্রমণে ৬০.৫ ভাগই গির্জাযোগ রয়েছে।
সম্প্রতি এই গোষ্ঠী রোগের প্রাদুর্ভাবের জন্য ক্ষমা চেয়েছে এবং দাবি করেছে তারা প্রশাসনের সঙ্গে সহযোগিতা করছে। শিনচেওনজি গির্জার ওয়েবসাইটে এক নোটিসে বলা হয়েছে, শিনচেওনজি গির্জার চেয়ারম্যান ও অন্য সকলে মিলে রাত দিন খেেট কোভিড ১৯ ছড়ানো প্রতিরোধ করতে সরকার, স্থানীয় প্রশাসন এবং জনস্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছে।
ফেব্রুয়ারির শেষে, লক্ষ লক্ষ দক্ষিণ কোরিয়া নাগরিক বলপূর্বক এই গির্জার অবলুপ্তি চেয়ে অনলাইনে আবেদন করেছিলেন।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন