Advertisment

দক্ষিণ কোরিয়ায় নতুন করে কোভিড সংক্রমণে বিপন্ন এলজিবিটিকিউ গোষ্ঠী

দক্ষিণ কোরিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রকের আধিকারিক এলজিবিটিকিউদের বৈষম্যের মুখে না ফেলার আর্জি জানিয়েছেন। এ নিয়ে গত সপ্তাহে সাংবাদিক সম্মেলনও করেন তিনি।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

প্রতীকী ছবি

একসময়ে দক্ষিণ কোরিয়ায় করোনাক্রান্তের সংখ্যা ছিল চিনের পরেই। এর পর বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে সে দেশ করোনা মোকাবিলায় দারুণ সাফল্যের জন্য প্রশংসিত হয়েছে। এ পরিস্থিতিটা গত সপ্তাহে বদলে গিয়েছে, রাজধানী সিওলের নাইটক্লাব অধ্যুষিত জেলায় নতুন করে রোগ ছড়ানোর পর।

Advertisment

নতুন সংক্রমণের ঘটনার সঙ্গে দেশের এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়ের উপরেও নজরে পড়েছে, কারণ নতুন সংক্রমণের ১৩০টি এঁদের মধ্যে। গত ২ মে ২৯ বছর বয়সী এক ব্যক্তি বেশ ওই জেলার বেশ কয়েকটি জায়গায় যাওয়ার পর এ ঘটনা ঘটেছে।

দক্ষিণ কোরিয়ার জনস্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ ঘোষণা করেছেন ওই কোভিড আক্রান্ত ব্যক্তি প্রায় ৫৫০০ জনের সংস্পর্শে এসেছেন। ওই সংক্রমিত ব্যক্তি এলজিবিটিকিউ কম্যুনিটির সদস্য। এর ফলে আগে থেকেই বৈষম্য ও হেনস্থার মুখে থাকা এই গোষ্ঠী রক্ষণশীল দক্ষিণ কোরিয় সমাজে ফের বিপন্ন।

নতুন করে রোগের প্রাদুর্ভাবে উদ্বেগজনক বিষয় কী?

দক্ষিণ কোরিয়ার এলজিবিটিকিউ গোষ্ঠীর আশঙ্কা এবার তাঁদের চিহ্নিত করা হবে এবং তাঁরা ফের বৈষম্য ও হেনস্থার মুখে পড়বেন, যার জেরে তাঁদের টেস্ট বিঘ্নিত হবে এবং তাঁদের ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশিত হবে। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রকট রক্ষণশীল সমাজে এঁরা এমনিতেই হেনস্থা ও বৈষম্যের মুখে পড়েন। মাত্র কয়েকটি জায়গাতেই তাঁরা খোলামেলা ভাবে ঘোরাফেরা করতে পারেন। এই ক্লাবগুলি সেরকমই একটি জায়গা। এই গোষ্ঠীর সদস্যরা দক্ষিণ কোরিয়ার মিডিয়ায় যেভাবে প্রকোপস্থল হিসেবে গে ক্লাবকে চিহ্নিত করা হচ্ছে তার বিরুদ্ধেও মুখর হয়েছেন।

 কীভাবে এই গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বৈষম্যের মাত্রা বৃদ্ধি ঘটল?

দক্ষিণ কোরিয়ার এক রক্ষণশীল সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে যে ওই সংক্রমিত ব্যক্তি স্থানীয় বেশ কিছু ব্যবসাক্ষেত্রে গিয়েছিলেন, যার অন্যতম ছিল গে ক্লাবগুলি। অন্য কোরিয় সংবাদমাধ্যমগুলিও ওই একই কথা বলেছে। ক্লাবে যাঁরা যান, তাঁদের অনেকেরই নাম, পরিচয় এমনকি তাঁরা কোথায় কাজ করেন, সে সবই প্রকাশিত হয়ে গিয়েছে।

দক্ষিণ কোরিয়ার অনেকেই এলজিবিটিকিউ কম্যুনিটির অস্তিত্বের কথা জানতেন না। তাঁরাও এবার এসব জেনে গিয়েছেন এবং এই গোষ্ঠী এবার কোভিড-১৯ এর সঙ্গে যুক্ত আতঙ্ক ও কুসংস্কারের জেরে আরও বেশি বৈষম্যের মুখে পড়তে চলবেন।

দক্ষিণ কোরিয়া সরকার কী করছে?

দক্ষিণ কোরিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রকের আধিকারিক এলজিবিটিকিউদের বৈষম্যের মুখে না ফেলার আর্জি জানিয়েছেন। এ নিয়ে গত সপ্তাহে সাংবাদিক সম্মেলনও করেন তিনি।

সিওলের মেয়র পার্ক ওয়ন-সুন য়াঁরা ওই ক্লাবগুলিতে যান, তাঁদের টেস্ট করানোর অনুরোধ জানিয়েছেন এবং প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তাঁদের ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষিত থাকবে। একই সঙ্গে তিনি যারা টেস্ট এড়াবে তাদের জরিমানা করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

এলজিবিটিকিউ গোষ্ঠীর সাপোর্ট গ্রুপগুলি নানাভাবে সাহায্যের রাস্তায় নেমেছে। দক্ষিণ কোরিয়ার কিছু সোশাল মিডিয়া ব্যবহারকারীর মতে এই ঘটনা সমকামবিদ্বেষীদের হাতে নতুন অস্ত্র তুলে দিল। এর ফলে এলজিবিটিকিউ গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে নতুন করে সংক্রমণ ছড়ানোর অভিযোগ তোলা যাবে।

coronavirus south korea
Advertisment