Olympic-sports: গ্রেট ব্রিটেন বনাম সুইডেনের মধ্যে ১৯১২ সালের গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকে দড়ি টানাটানির ছবি। (উইকিমিডিয়া কমন্স)
Part of the Olympics: চলতি প্যারিস অলিম্পিকে মোট ৩২টি খেলা রয়েছে। যার মধ্যে আছে টেনিস, ভলিবল, সকার, বিভিন্ন ধরনের কুস্তি, জলে নানারকম খেলা, জিমন্যাস্টিকস এবং সাইক্লিং। কিন্তু এমনও বহু খেলা আছে, যা একটা সময় অলিম্পিকের অংশ ছিল। কিন্তু, পরবর্তীতে তা অলিম্পিকের খেলার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
প্যারিসে ১৯০০ সালের অলিম্পিক গেমসে প্রথম এবং শেষবারের মত জীবন্ত পায়রার শুটিং খেলার আয়োজন করা হয়েছিল। জীবন্ত পায়রাগুলোকে বাতাসে উড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। প্রতিযোগীরা সম্ভাব্য সর্বাধিক সংখ্যক পায়রা মেরেছিলেন। এই ইভেন্ট চলাকালীন, প্রায় ৩০০ পায়রাকে মারা হয়েছিল। স্বর্ণপদক জিতেছিলেন বেলজিয়ামের লিওন ডি লুন্ডেন। পরের বছরগুলোয় অলিম্পিক কর্তারা জীবিত পায়রা ব্যবহার না করার সিদ্ধান্ত নেন। বদলে, মাটির পায়রার শুটিং আয়োজিত হয়। লক্ষ্যবস্ত হিসেবে সেই মাটির পায়রাগুলোকে বিভিন্ন গতিতে বিভিন্ন উচ্চতায় বাতাসে ছোড়া হয়েছিল। প্রতিযোগীরা সেই ছুড়ে দেওয়া পায়রা লক্ষ্য করেই গুলি করেছিলেন।
মরিস ফাউরে (ফ্রান্স), লিওন ডি লুন্ডেন (বেলজিয়াম), এবং ডোনাল্ড ম্যাকিনটোশ (অস্ট্রেলিয়া) লাইভ কবুতর শুটিং ইভেন্টে অংশগ্রহণ করেছিলেন। (উইকিমিডিয়া কমন্স)
Advertisment
২. বেলুনে চেপে ভ্রমণ/ হট এয়ার বেলুনিং (১৯০০)
১৯০০ সালের অলিম্পিক গেমসে হট এয়ার বেলুনিং খেলা চালু ছিল। প্রথমে এটা ছিল একটা প্রদর্শনী। পরে সেটাই খেলা হিসেবে চালু হয়। কয়েক মাস ধরে হট এয়ার বেলুনিং নিয়ে একাধিক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল। অংশগ্রহণকারীরা বিভিন্ন বিভাগে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। এই সব বিভাগের অন্যতম ছিল ভ্রমণ। আবার, বেলুনে চেপে একটা দূরত্বে গিয়ে নির্দিষ্ট উচ্চতায় পৌঁছনো। সেখান থেকে ছবি তোলার প্রতিযোগিতাও ছিল। ফরাসি প্রতিযোগী হেনরি দে লা ভল্ক্স প্যারিস থেকে পোল্যান্ড পর্যন্ত এমন বেলুনে চেপে ভ্রমণ করেছিলেন। পোল্যান্ড তখন রাশিয়ার অংশ ছিল। হেনরির বেলুন ৭৬৮ মাইল পর্যন্ত উড়েছিল। যা ছিল, সবচেয়ে দূর পর্যন্ত বেলুনের উড়ে যাওয়া। কিন্তু, পুরস্কার দূর। যখন হেনরি বেলুনের সঙ্গে থাকা যাত্রীআসন থেকে মাটিতে নামেন, রাশিয়ান পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করেছিল। কারণ, তিনি বিনা পাসপোর্টে রাশিয়ায় প্রবেশ করেছিলেন।
৩. দড়ি টানাটানি/ টাগ-অফ-ওয়ার (১৯০০ থেকে ১৯২০)
১৯০০ থেকে ১৯২০ সালের মধ্যে পাঁচটি অলিম্পিক গেমসে টাগ-অফ-ওয়ার ইভেন্ট হয়েছিল। নিয়ম অনুসারে, প্রতিটি দলের সদস্য সংখ্যা ছিল আট জন। যে দল প্রতিপক্ষকে ছয় ফুট টেনে আনতে পারবে, তারাই জিতবে, সেটাই ছিল নিয়ম। নিয়ম অনুযায়ী, যদি উভয়পক্ষ এই লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হয়, বিচারকরা আরও পাঁচ মিনিট অতিরিক্ত সময় দেবেন। তারপর যে দল, সবচেয়ে বেশি অগ্রগতি করেছে, তাদের বিজয়ী ঘোষণা করা হবে বলেই স্থির হয়েছিল। লন্ডনে ১৯০৮ সালের অলিম্পিক গেমসে, ব্রিটিশ দল স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ভারী বুট পরেছিল বলে অভিযোগ ওঠে। যা ঘিরে বিতর্কের সূত্রপাত হয়। ভারী বুটের জন্য শেষ পর্যন্ত দড়ি টানাটানি খেলা থেকে ব্রিটেন বাদ পড়ে।
৪. ডুব সাঁতার/ প্লাঞ্জ ফর দি ডিসটেনস (১৯০৪-১৯০৮)
এই ইভেন্টে অ্যাথলিটকে নির্দিষ্ট জায়গা থেকে জলে ঝাঁপ দিতেন। এরপর জলের ওপরে শরীরের কোনও অংশ না তুলে অপর তীরে পৌঁছতেন। টাইম ম্যাগাজিনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, '৬০ সেকেন্ড বা তার বেশি সময় জলের নীচে কাটিয়ে তারপর বহুদূরে গিয়ে মাথা তোলা বা যে প্রতিযোগী সবার আগে গিয়ে অপর তীরে উঠতেন, তাঁকেই বিজয়ী ঘোষণা করা হত। বেশি দূরত্বের ক্ষেত্রে কতটা দূরত্ব অতিক্রম করছেন, সেটা মাপা হত।'
নিউ ইয়র্ক অ্যাথলেটিক ক্লাবের ডব্লিউই (WE) ডিকি, ১৯০৪ সালের অলিম্পিকে ৬২ ফুট, ৬ ইঞ্চি দূরত্ব অতিক্রম করে এই প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয়েছিলেন। (উইকিমিডিয়া কমন্স)
নামে জীবিত হরিণের কথা থাকলেও এই ইভেন্টে কোনও জীবিত হরিণকে গুলি করা হত না। প্রতিযোগীদেরকে রেলের কোচের ওপর বসানো হরিণের আকৃতির কাঠের পুতুলকে গুলি করতে হত। এই গুলি করা হত ১০০ মিটার দূর থেকে। প্রতিযোগীদের হাতে ৪ সেকেন্ড সময় থাকত। রেলপথ দিয়ে রেলের কোচ যাওয়ার সময় কাঠের হরিণটিকে গুলি করতে হত। ১৯২০ সালের অলিম্পিক গেমসে, সুইডেনের ৭২ বছর বয়সি প্রতিযোগী অস্কার সোয়ান এই ইভেন্টে রৌপ্যপদক জিতেছিলেন। তিনি হলেন অলিম্পিকের ইতিহাসে সবচেয়ে বয়স্ক পদকজয়ী।