রোগ ছড়ানোর অভিযোগে ২৬৯ ও ২৭০ ধারায় কী রয়েছে?

১৮৮৬ সালে মাদ্রাজ হাইকোর্টে কলেরা সত্ত্বেও ট্রেনে ভ্রমণ করবার জন্য ২৬৯ ধারায় একজনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। অন্য আরেকজন উক্ত ব্যক্তির ট্রেনের টিকিট কেটে দেবার জন্য দোষী সাব্যস্ত হন।

১৮৮৬ সালে মাদ্রাজ হাইকোর্টে কলেরা সত্ত্বেও ট্রেনে ভ্রমণ করবার জন্য ২৬৯ ধারায় একজনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। অন্য আরেকজন উক্ত ব্যক্তির ট্রেনের টিকিট কেটে দেবার জন্য দোষী সাব্যস্ত হন।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Coronavirus

এ আইন ১০০ বছরেরও বেশি পুরনো

এ সপ্তাহের গোড়ায় কাংড়ার ৬৩ বছর বয়সী এক প্রবীণার বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ২৭০ ধারায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তিনি যে দুবাই ফেরত সে কথা তিনি গোপন করে গিয়েছিলেন, পরে তাঁরা কোভিড ১৯-এ আক্রান্ত হবার কথা পরীক্ষায় ধরা পড়েছে।

Advertisment

একইভাবে কাংড়ারই ৩২ বথর বয়সী আরেকজন কোভিড ১৯ রোগীর বিরুদ্ধে ওই ধারা প্রয়োগ করা হয়েছে। তিনি সিঙ্গাপুর থেকে ফিরেছিলেন। যাঁরা কোনও সংক্রমণ বা জীবননাশী কোনও রোগ ঘাতক উপায়ে ছড়িয়ে দিলে তাঁর বিরুদ্ধে এই ধারা প্রযুক্ত হয়ে থাকে।

গত সপ্তাহে, উত্তর প্রদেশ পুলিশ বলিউডের গায়িকা কণিকা কাপুরের বিরুদ্ধেও একই ধারা প্রযুক্ত হয়েছিল। একই সঙ্গে দেওয়া হয়েছিল ২৬৯ ও ১৮৮ ধারা। তিনি লখনউয়ে অন্তত তিনটি জমায়েতে গিয়েছিলেন, তার মধ্যে একটি পার্টিতে উপস্থিত ছিলেন রাজনৈতিক নেতারা।

অতমারীর সময়ে কোয়ারান্টিন নির্দেশ অমান্য করবার দায়ে ২৬৯ ও ২৭০ ধারা প্রয়োগের আরও উদাহরণ রয়েছে।

Advertisment

ভারতীয় দণ্ডবিধির ২৬৯ ও ২৭০ ধারা কী?

২৬৯ ধারায় (মারণ রোগ ছড়ানোর ব্যাপারে অবহেলাসূচক কাজ) এবং ২৭০ ধারা (মারণ রোগের সংক্রমণ ছড়াবার ঘাতক কাজ) ভারতীয় দণ্ডবিধির চতুর্দশ পরিচ্ছেদে বর্ণিত রয়েছে।

২৬৯ ধারায় ৬ মাসের জেল বা জরিমানা বা উভয়ই হতে পারে। ২৭০ ধারায় দু বছরের জেল বা জরিমানা বা উভয়ই হতে পারে। ২৭০ ধারায়, ঘাতক উপায়ে শব্দের মাধ্যমে অভিযুক্তের সজ্ঞান কর্মের কথা বোঝানো হয়।

করোনাভাইরাস মারীর সময়ে ১৮৮, ২৬৯ ও ২৭০ ধারা বিভিন্ন রাজ্যের লকডাউন জারি রাখবার জন্য কার্যকর করা হয়।

পূর্ববর্তী উদাহরণ

উভয় ধারাই মহামারীর সময়ে আদেশ অমান্য করবার জন্য এক শতকেরও বেশি আগে থেকে লাগু।

১৮৮৬ সালে মাদ্রাজ হাইকোর্টে কলেরা সত্ত্বেও ট্রেনে ভ্রমণ করবার জন্য ২৬৯ ধারায় একজনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। অন্য আরেকজন উক্ত ব্যক্তির ট্রেনের টিকিট কেটে দেবার জন্য দোষী সাব্যস্ত হন।

এই ধারাগুলি ঔপনিবেশিক কর্তৃপক্ষকে গুটি বসন্ত ও বিউবোনিক প্লেগের মড়কের সময়েও লাগু করতে হয়েছিল।

সম্প্রতি ফের এই আইন বলবৎ করবার ঘটনা ঘটে ২০১৮ সালের মার্চ মাসে, যখন স্বাস্থ্যমন্ত্রক বলে যে যক্ষ্মা রোগীর ব্যাপারে নোডাল অফিসার বা স্থানীয় স্বাস্থ্য আধিকারিরককে না জানালে এই ধারায় অভিযুক্ত হবে যে কোনও ক্লিনিকাল এসট্যাবলিশমেন্ট। ২০১২ সালে ভারতে যক্ষ্মাকে অবশ্য জ্ঞাতব্য রোগ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।

২০১৫ সালের জুন মাসে মজফফরপুরের এক জেলা আদালত নেসলের দুই অফিসার, ফিল্ম স্টার অমিতাভ বচ্চন, মাধুরী দীক্ষিত ও প্রীতি জিন্টার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করতে বলে, যাঁরা ম্যাগি কোম্পানির বিজ্ঞাপনে হাজির হয়েছিলেন। প্রয়োজনে তাঁদের গ্রেফতার করতেও বলা হয়। ভারতীয় দণ্ডববিধির ২৭০, ২৭৩ ও ৪২০ ধারায় এই মামলা রুজু হয়েছিল।

coronavirus