Advertisment

অযোধ্যা মধ্যস্থতায় শ্রী শ্রী রবিশংকরের ব্যর্থ প্রচেষ্টার ইতিহাস

মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার পর শ্রী শ্রী আরএসএস প্রচারক মহীরাজধ্বজ সিং,অযোধ্যা দিগম্বর আখড়ার মোহান্ত সুরেশ দাস, বিজেপি নেতা বিনয় কাটিয়ার এবং বিভিন্ন মুসলিম সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলেন।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Sri Sri Ayodhya Mediation explained

অয়োধ্যা থেকে লখনউ, সর্বত্র গেছেন তিনি, বৈঠক করেছেন সব পক্ষের সঙ্গে (ফোটো- জসবীর মালহি)

রামজন্মভূমি-বাবরি মসজিদ বিতর্কের সমাধানে সুপ্রিম কোর্ট মধ্যস্থতার পথ নেওয়ার নির্দেশ দিতে বলেছে। এ ব্যাপারে একটি প্যানলে গঠন কের ৮ সপ্তাহের মধ্যে বিষয়টি মেটানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্যানেলে যে তিনজন রয়েছেন তাঁদের অন্য়তম হলেন আর্ট অফ লিভিংয়ের প্রবক্তা শ্রী শ্রী রবি শংকর।

Advertisment

২০১৭ সাল থেকেই এ ব্যাপারে চেষ্টা করে আসছেন শ্রী শ্রী। সাফল্যের মুখ অবশ্য তিনি বন্দুমাত্র দেখেননি। লখনউ থেকে অযোধ্যা পর্যন্ত সফর অবধি করেছেন তিনি সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি মেটানোর জন্য।

২০১৭ সালের ১৫ নভেম্বর শ্রী শ্রী উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের সঙ্গে লখনউয়ে সাক্ষাৎ করেন। আদিত্যনাথ সে আলোচনাকে স্বাগত জানিয়ে সাংবাদিকদের বলেন সরকার এ মামলায় যেহেতু কোনও পক্ষ নয়, আমি সব পক্ষকে বলেছি যদি আপনারা আলোচনার মাধ্যমে চূড়ান্ত সমাধানে পৌঁছতে পারেন, তাহলে সরকার সর্বতোভাবে তাকে সমর্থন করবে। কিন্তু যদি তাঁরা সিদ্ধান্তে না পৌঁছতে পারেন... যদি কথা না বলতে পারেন... তাহলে আদালত রয়েছে... আমরা সবাই আদালতের সিদ্ধান্ত মেনে চলব।



মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার পর শ্রী শ্রী আরএসএস প্রচারক মহীরাজধ্বজ সিং,অযোধ্যা দিগম্বর আখড়ার মোহান্ত সুরেশ দাস, বিজেপি নেতা বিনয় কাটিয়ার এবং বিভিন্ন মুসলিম সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলেন। নির্মোহী আখড়ার রাজা রামচন্দ্রাচার্য, হিন্দু মহাসভার স্বামী চক্রপাণি এবং লখনউয়ের শিবসেনা প্রধান অনিল সিংয়ের সঙ্গেও কথা বলেন তিনি।

আরও পড়ুন, অযোধ্যা সমস্যার সমাধানে তিন মধ্যস্থতাকারীর সংক্ষিপ্ত পরিচয়

পরদিন অর্থাৎ ১৬ নভেম্বর শ্রী শ্রী অযোধ্যা পরিদর্শন করেন এবং বলেন, বাবরি মসজিদ-রাম জন্মভূমি একমাত্র সমাধান হিন্দু ও মুসলিম উভয়পক্ষের সহযোগিতায় সুবিশাল এক মন্দির নির্মাণ। তিনি বলেন, ”১০০ বছর পর, একটি সম্প্রদায় মনে করতে পারে যে ন্যায়বিচার হয়নি... একই ইস্যু ফের মাথা চাড়া দিতে পারে... এ বিষয়টির একমাত্র চিরকালীন সমাধান হতে পারে যদি দুই সম্প্রদায়ের মানুষের সহযোগিতায় একটি বিশাল মন্দির নির্মাণ করা যায়... তাহলে স্বপন সত্যি হবে। এ দেশের সব সম্প্রদায়ের এবং যুবকদের মধ্যে ঔদার্য, ভালবাসা এবং ভ্রাতৃত্বের বোধ রয়েছে।”

শ্রী শ্রী বলেন তিনি কোনও সমাধান দিচ্ছেন না, বা তিনি কোনও ফর্মুলা নিয়ে অযোধ্যায় আসেননি। ”আমি অযোধ্যায় এসেছি খোলা মনে, যেখানে সবাই খোলা মনে আলোচনা করতে পারবে এমন একটি মঞ্চ তৈরি করতে। আমি এসেছি এই আসা নিয়ে যে আলোচনার মাধ্যমে তা সম্ভব।”

ওই দিনই শ্রী শ্রী রাম জন্মভূমি ন্যাসের প্রধান নিত্য গোপাল দাসের সঙ্গে দেখা করেন, দেখা করেন জমি বিতর্ক মামলার বাদী ইকবাল আনসারি, নির্মোহী আখড়ার সন্ত এবং বাবরি ধ্বংস মামলার মোকদ্দমাকারী হাজি মেহবুবের সঙ্গে।

আরও পড়ুন, ‘নিরপেক্ষ কেউ থাকলে ভাল হত’, মধ্যস্থতা প্যানেলে রবিশঙ্করকে নিয়ে সংশয়

শ্রী শ্রীর সঙ্গে নিত্যগোপাল দাসের বৈঠকে সন্তরা বলেন রাম জন্মভূমি আন্দোলনের অভিমুখ বদলানো ঠিক হবে না। তাঁরা এও বলেন কেবলমাত্র ন্যাসের নেতৃত্বেই রাম মন্দির নির্মাণ করতে হবে।



বৈঠকের পর নিত্যগোপাল বলেন, উনি (শ্রী শ্রী) বলেছেন সংহতির বাতাবরণে একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছোন উচিত। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ একটি সমাধানে পৌঁছবেন, শ্রী শ্রীকে উদ্ধৃত করে বলেন তিনি।

আনসারি বলেন এ সমস্যার সমাধান আলোচনার মাধ্যমে হবে না। সুপ্রিম কোর্টই এর সমাধান করতে পারে।

হাজি মেহবুব বলেন, আমি ওঁকে বলেছি যে আমি নিজে এ উদ্যোগ বা মন্দির নির্মাণের বিরোধী নই। কিন্তু বিতর্কিত জমি মসজিদের জন্য ছেড়ে দিয়ে মন্দির অন্য কোথাও বানাতে হবে।

এই বৈঠকগুলির পর শ্রী শ্রী বলেন, মুসলিমরা মোটের উপর রাম মন্দির নির্মাণের বিরোধী নন।

পরদিন লখনউয়ে শ্রী শ্রী রবি শংকর দেখা করেন সুন্নি মৌলানা খলিদ রশিদ ফারাঙ্গি মোহালির সঙ্গে। তাঁর সঙ্গে দেখা করার পর শ্রী শ্রী বলেন, কোনও কোনও আদালতের রায়ের পরিবর্তে মানষের হৃদয় থেকে যদি কোনও সমাধান বেরিয়ে আসে তাহলে তা মানুষ যুগ যুগ ধরে মনে রাখবে।

আরও পড়ুন, অযোধ্যা সমস্যার সমাধানে মধ্যস্থতাপ্রয়াসের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

তিনি বলেন, আমরা দু পক্ষই মনে করি যে আমাদের সেতু নির্মাণ করতে হবে। দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে সত্যিই কোনও বিভেদ নেই। আমরা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে একসঙ্গে বাস করছি এবং আমাদের বন্ধুত্বের পরিবেশ তৈরি করতে হবে।

মাহালির সঙ্গে বৈঠকের সময়ে শ্রী শ্রী তাঁকে অনুরোধ করেন, যেন মাহালি অন্য মুসলিম ধর্মগুরু, সুন্নি সম্প্রদায়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব এবং সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডের অন্য সদস্যদের সঙ্গে  কথা বলেন যাতে সমস্ত পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা যায়।

মাহালি এ ব্যাপারে শ্রী শ্রী রবিশংকরকেআশ্বস্ত করলেও তিনি বলেন, বিরোধীদের সঙ্গে কথা বলার আগে নিজের সম্প্রদায়ের মধ্যে এ ব্যাপারে মতৈক্যে আসা প্রয়োজন।

গত বছর নভেম্বরে দিল্লিতে আয়োজিত সারা ভারত সন্ত সমিতির এক বৈঠকে শ্রী শ্রী বলেন, এ ব্য়াপারে তিনটি সম্ভাবনা রয়েছে, আলোচনা, দ্রুত নির্দেশ দেওয়ার জন্য সুপ্রিম কোর্টে আবেদনের অথবা সরকারকে অনুরোধ।

Read the Full Story in English

Explained
Advertisment