Story of Nobel laureate Muhammad Yunus: নোবেল জয় তাঁকে বিশ্বের সবচেয়ে বিখ্যাত বাংলাদেশিদের একজন করে তুলেছিল। শেখ হাসিনা সরতেই মহম্মদ ইউনুস যেন জীবন বৃত্তের আরেকটি অংশে প্রবেশ করেছেন। ৮৪ বছর বয়সে, তিনি এক নতুন কাজ শুরু করেছেন। সেটা হল, ক্ষতবিক্ষত দেশের পুনর্গঠন। ২০০৯ সালে মহম্মদ ইউনুস, দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে আইডিয়া এক্সচেঞ্জ অনুষ্ঠানে বলেছিলেন যে তিনি সম্প্রতি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হওয়ার আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করেছেন।
আগেও প্রস্তাব পেয়েছিলেন
২০০৬-০৯, এই সময়েও বাংলাদেশে কোনও নির্বাচিত সরকার ছিল না। তবে তিনি নিজেই একটি রাজনৈতিক দল গঠনের চেষ্টা শুরু করেছিলেন। যে চেষ্টা কাজ করেনি। মহম্মদ ইউনুস সেই সময় বলেছিলেন, 'আমি যাঁদের চেয়েছিলাম, তাঁরা আমার সঙ্গে যোগ দিতে চায়নি। আর, যাঁরা আমাকে ঘিরে ছিল, আমি তাঁদেরকে চাইনি।' এই কথা বলার দেড় দশক পরে, 'মাইক্রোফাইন্যান্সের জনক' এই ৮৪ বছর বয়সি বাংলাদেশি, সেদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নিয়েছেন। এবার, সম্ভবত তাঁর নিজের শর্তে। যে তরুণ আন্দোলনকারীরা শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনের পতন ঘটিয়েছে, তাঁরাই চেয়েছিল যে মহম্মদ ইউনুস বাংলাদেশের দায়িত্ব নিন।
ক্ষুদ্র ঋণের ধারণা
ইউনুস ১৯৭১ সালে ভ্যান্ডারবিল্ট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে পিএইচডি করেন। সে বছরই বাংলাদেশের জন্ম হয়। মুক্তিযুদ্ধের সময়, তিনি পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য সমর্থন আদায় করতে মার্কিন নাগরিক সমাজের সঙ্গে কাজ করেছিলেন। দেশে ফিরে ইউনুস চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের প্রধান হিসেবে যোগদানের আগে পরিকল্পনা কমিশনে অল্প সময়ের জন্য কাজ করেন। এখানেই তিনি ক্ষুদ্রঋণ সম্পর্কে তাঁর ধারণা গড়ে তোলেন।
আরও পড়ুন- আদানিকে অভিযুক্ত করার জের? এবার বিরাট শাস্তির মুখে, কাঠগড়ায় খোদ হিন্ডেনবার্গ
ইউনুসের উপলব্ধি
ইউনুস ২০০৬ সালে তাঁর নোবেল গ্রহণের সময় বক্তৃতায় বলেছিলেন, '১৯৭৪ সালে বাংলাদেশে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের প্রেক্ষাপটে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসরুমে অর্থনীতির মার্জিত তত্ত্ব শেখানো আমার কাছে কঠিন ছিল। আমি ক্ষুধা ও দারিদ্র্যের মুখে সেই সব তত্ত্বগুলোর শূন্যতা অনুভব করেছি।' তিনি একজন দরিদ্র মহিলার সঙ্গে তাঁর সাক্ষাতের কথা জানিয়েছেন। ওই মহিলা স্থানীয় মহাজনের থেকে এক ডলারের কম অর্থ ধার নিয়েছিলেন। এই শর্তে ধার নিয়েছিলেন যে মহাজনের দ্বারা নির্ধারিত মূল্যে ওই মহিলার তৈরি সমস্ত পণ্য কেনার একচেটিয়া অধিকার ওই মহাজনেরই থাকবে। ইউনুস মনে করেছেন, এটা আসল 'দাস শ্রম'। এই ধরনের মহাজনদের হাত থেকে ওই ধরনের মহিলাদের মুক্তি দিতেই ইউনুস ক্ষুদ্রঋণ ব্যবস্থার প্রচলন করেন। তাঁর সেই ব্যবস্থাই পরে গ্রামীণ ব্যাংকের রূপ নেয়।