ভারতের পশ্চিম উপকূলে প্রস্তাবিত বার্ষিক ৬ কোটি টন মেগা শোধনাগার প্রকল্পকে বাস্তবায়নকে প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার প্রচেষ্টা জোরদার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সৌদি আরব। এই প্রকল্প বছরের পর বছর ধরে ঝুলছে। প্রকল্পের অগ্রগতির ওপর নজর রাখার জন্য একটি যৌথ মনিটরিং কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। চলতি সপ্তাহের শুরুতে সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স তথা প্রধানমন্ত্রী মহম্মদ বিন সলমনের ভারত সফরের সময় এই মনিটরিং কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
কেন কাজ আটকে?
সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহির অংশগ্রহণের প্রস্তাব থাকলেও মহারাষ্ট্রের কোঙ্কন অঞ্চলে মেগা তৈল শোধনাগার এবং পেট্রোকেমিক্যাল প্রকল্পের কাজ এখনও শুরুই হয়নি। রত্নগিরি জেলার প্রস্তাবিত স্থানগুলোর আশপাশে স্থানীয়রা প্রকল্পের বিরুদ্ধে দৃঢ় প্রতিরোধে শামিল হয়েছেন। ইতিমধ্যে রাজ্যের রাজনৈতিক সমীকরণ পরিবর্তন হয়েছে। যার ফলে প্রকল্পটি প্রায় ব্যর্থ হয়েছে। এই প্রকল্পে ২০১৫ সালে সর্ববৃহৎ তৈল পরিশোধন কাঠামো নির্মাণের কথা ছিল। এটা ভারতের সরকারি এবং বেসরকারি সংস্থার যৌথ প্রচেষ্টা।
অর্থ বরাদ্দ
সোমবার এক বিবৃতিতে বিদেশ মন্ত্রকের সচিব আউসাফ সঈদ বলেন, 'উভয় পক্ষই, প্রধানমন্ত্রী (নরেন্দ্র মোদী) এবং ক্রাউন প্রিন্স, পশ্চিম উপকূলের শোধনাগার প্রকল্পের প্রাথমিক বাস্তবায়নে তাদের পূর্ণ সমর্থনের কথা জানিয়েছেন। আরামকো, আবু ধাবির সরকারি তেল সংস্থা এডিএনওসি এবং ভারতীয় সংস্থার সাহায্যে এখানে প্রকল্পের কাজ চলবে। ভারতীয় সংস্থাগুলোর কাজের জন্য ইতিমধ্যেই ৫,০০০ কোটি মার্কিন ডলার বরাদ্দ করা হয়েছে।'
কারা করবে কাজ
সৌদি আরবের তেল সংস্থা বা সৌদি আরামকো সৌদি আরবের জাতীয় তেল কোম্পানি। ২০১৮ সালের এপ্রিলে আরামকো মূল প্রকল্পের জন্য একটি প্রাথমিক চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। ভারতের যে সংস্থাগুলো এই প্রকল্পে আছে, সেগুলো হল- পাবলিক সেক্টর রিফাইনার ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশন (আইওসি), ভারত পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসিএল) এবং হিন্দুস্তান পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (এইচপিসিএল)। তারা এই শোধনাগার নির্মাণের কাজ করবে।
আগেও ব্যয় হয়েছে
আগে এই প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল তিন লক্ষ কোটি টাকা। সেই সময় আরামকো এবং ভারতীয় কোম্পানিগুলো যৌথভাবে প্রকল্পটি চালিয়ে যাওয়ার জন্য এডিএনওসিকেও যুক্ত করেছিল। আইওসি, বিপিসিএল, এইচপিসিএল ইতিমধ্যেই একটি যৌথ উদ্যোগে রত্নাগিরি রিফাইনারি অ্যান্ড পেট্রোকেমিক্যালস (আরআরপিসিএল) প্রকল্পটি বাস্তবায়নের চেষ্টা চালাচ্ছে।
আরও পড়ুন- সেপ্টেম্বরে বিশ্বের ৮ দেশে ভয়াবহ বন্যা! কারণটা কী?
এখনও দিন ঘোষণা হয়নি
সোমবারের ঘোষণা একটি সংকেত হিসেবে তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, ঘোষণা অনুযায়ী এই প্রকল্পটিকে এখনও কেন্দ্র এবং বিদেশি অংশীদাররা অগ্রাধিকারের আওতায় রেখেছে। যা, প্রকল্পের আশা পুনরুজ্জীবিত করেছে। তবে, এটি এখনও স্পষ্ট নয় যে শোধনাগারটি কখন চালু হবে। তবে, ভারত ও সৌদি আরবের বিবৃতি অনুযায়ী, এই প্রকল্পকে দিনের আলো দেখাতে হলে অনেক কিছু বদলাতে হবে।