Electoral Bonds Supreme Court: শেষ পর্যন্ত মোদী সরকারকে কুপোকাত করতে শাসক দলের অর্থভাণ্ডারে আঘাতের যে নীতি বিরোধীরা নিয়েছিলেন, তাতে তাঁরা আংশিক সফল হলেন। ২০১৭ সালে মোদী সরকার নির্বাচনী বন্ডের ঘোষণা করেছিল। তার প্রায় পরপরই বিরোধী দল সিপিএম ২০১৮ সালে এই বন্ডের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছিল। সিপিএমের পাশাপশি, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা 'কমন কজ', স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্রেটিক রিফর্মস (ADR)-সহ বেশ কিছু সংগঠন নির্বাচনী বন্ডের বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল। সেই মামলাতেই সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) নির্বাচনী বন্ডকে 'অসাংবিধানিক' বলে রায় দিয়েছে।
জয়ের পর প্রতিক্রিয়া
আদালতে এই জয়ের পর প্রতিক্রিয়ায় সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি বলেছেন, 'আদালতের রায়কে স্বাগত জানাই। নির্বাচনী বন্ড প্রকল্প রাজনৈতিক দুর্নীতিকে আইনসিদ্ধ করেছিল। তাই এই বন্ড প্রকল্পকে বাতিল করার দরকার ছিল। সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ সর্বসম্মতভাবে নির্বাচনী বন্ড প্রকল্পকে অসাংবিধানিক বলেছে। এই রায় গণতন্ত্রের স্বার্থে এবং ঐতিহাসিক।
আদালতে বিরোধীদের আইনজীবীর বক্তব্য
আদালতে প্রবীণ আইনজীবী কপিল সিবাল এই প্রকল্পের বিভিন্ন ফাঁকগুলো তুলে ধরেন। তিনি পরিষ্কার জানান, নির্বাচনী বন্ড প্রকল্পে এমন কিছুই নেই, যার জন্য অনুদানকে নির্বাচন প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত করতে হবে। সবচেয়ে বড় কথা, এসবিআইয়ের বিভাগই বলছে, এই বন্ডের অর্থ যে কোনও সময়ে এবং যে কোনও উদ্দেশ্যে ভাঙানো যেতে পারে।
- আদালতে সলিসিটর জেনারেল মোদী সরকারের হয়ে সওয়াল করেছেন।
- শাসক দলের প্রতি কোনও পক্ষপাতিত্ব হচ্ছে না বলে, তিনি বোঝানোর চেষ্টা করেন।
- সওয়ালে গোপনীয়তার অধিকারকে মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতির প্রসঙ্গ উঠে আসে।
আদালতে কেন্দ্রের বক্তব্য
কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে আদালতের সওয়াল করেছেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। তিনি আদালতে বলেছেন- ১) নির্বাচনী বন্ড প্রকল্প অর্থদাতাদের লুকোতে চায়নি। বরং, অর্থদাতাদের নিরাপত্তার জন্যই গোপনীয়তা নিশ্চিত করতে চেয়েছে। ২০১৯ সালে গোপনীয়তার অধিকারকে মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল শীর্ষ আদালত। নিজের বক্তব্যের পক্ষে সেই প্রসঙ্গও তুলে ধরেন সলিসিটর জেনারেল। ২) সংসদ, সরকার এবং নির্বাচন কমিশন বছরের পর বছর ধরে রাজনীতিতে কালো টাকার প্রবেশ বন্ধের চেষ্টা করেছে। এই ইস্যুতে বিভিন্ন ধরণের প্রকল্প, সংশোধনী এবং নীতি পরীক্ষার পরেই প্রকল্পটি চালু করা হয়েছিল। যদি এই প্রকল্পে কোনও ফাঁকও থাকে, তবে তা সংশোধন করা যেতে পারে। প্রকল্পটি বন্ধ করার প্রয়োজন হবে না।
আরও পড়ুন- মোদী সরকারের ওপর বিরাট আঘাত! নির্বাচনী বন্ড নিয়ে তুলকালাম করা নির্দেশ আদালতের
৩) তুষার মেহতা আরও দাবি করেছিলেন যে নির্বাচনী বন্ড শাসক দলের প্রতি পক্ষপাতিত্ব করছে, এই উদ্বেগের সঙ্গে প্রকল্পটির সাংবিধানিক বৈধতার কোনও সম্পর্ক নেই। শাসক দলের প্রতি পক্ষপাতিত্ব হয়ে থাকলে, সেটা শাসক দলের প্রতি জনগণের আস্থার প্রতীক। সেজন্য প্রকল্পটিকে দায়ী করা যায় না।