সোমবার, সুপ্রিম কোর্টের একটি সাংবিধানিক বা পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ বলেছে যে তা সংবিধানের ১৪২ অনুচ্ছেদের অধীনে তার ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারে। যেখানে পক্ষগুলোকে উল্লেখ না-করেই বিবাহের অনাকাঙ্ক্ষিত ভাঙনের ক্ষেত্রে সম্মতিকারী পক্ষগুলিকে সরাসরি বিবাহবিচ্ছেদের নির্দেশ দিতে পারে। এমনিতে এক পারিবারিক আদালতে পারস্পরিক সম্মতিতে বিবাহবিচ্ছেদের নির্দেশের জন্য ৬ থেকে ১৮ মাস অপেক্ষা করতে হয়।
আদালতের বক্তব্য
বিচারপতি এসকে কউলের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ বলেছে, 'আমরা ধরে নিয়েছি যে বিবাহের (বিয়ের শর্ত) অপূরণীয় ভাঙনের কারণে এই আদালতের পক্ষে বিবাহ ভেঙে দেওয়া সম্ভব। এটি পাবলিক পলিসির (জননীতির) নির্দিষ্ট বা মৌলিক নীতি লঙ্ঘন করবে না।' এই রায় শীর্ষ আদালতে দায়ের শিল্পা শৈলেশ বনাম বরুণ শ্রীনিবাসনের ২০১৪ সালের একটি মামলার সঙ্গে সম্পর্কিত, যেখানে উভয়পক্ষ ভারতীয় সংবিধানের ১৪২ অনুচ্ছেদের অধীনে বিবাহবিচ্ছেদ চেয়েছিল।
হিন্দু বিবাহ আইন (এইচএমএ)-এর অধীনে বিবাহবিচ্ছেদ পাওয়ার বর্তমান পদ্ধতি কী?
হিন্দু বিবাহ আইন, ১৯৫৫-এর ধারা ১৩বি-এর অধীনে, পারস্পরিক সম্মতিতে বিবাহবিচ্ছেদ পাওয়ার পদ্ধতি নির্ধারণ করা হয়েছে। ধারা ১৩বি (১) অনুযায়ী উভয়পক্ষই জেলা আদালতে বিবাহবিচ্ছেদের নির্দেশ চেয়ে তাদের বিয়ে ভেঙে দেওয়ার জন্য আবেদন জানাতে পারে। এই শর্তে যে তারা একবছর বা তার বেশি সময় ধরে আলাদাভাবে বসবাস করছে। একসঙ্গে বসবাস করতে সক্ষম হয়নি। শুধু তাই নয়, পারস্পরিকভাবে তাদের বিয়ে ভেঙে দিতেও সম্মত হয়েছে।
যা করতে পারে আদালত
এইচএমএ বা হিন্দু ম্যারেজ অ্যাক্টের ১৩বি (২) ধারা অনুযায়ী, বিবাহবিচ্ছেদ চাওয়া উভয়পক্ষকে বিবাহবিচ্ছেদের নির্দেশ পাওয়ার জন্য তাদের আবেদন পেশ করার তারিখ থেকে অন্তত ৬, সর্বোচ্চ ১৮ মাস অপেক্ষা করতে হবে। এর মধ্যে ছয় মাসের সময় দেওয়া হয়, যাতে আবেদনকারী উভয়পক্ষই তাদের আবেদন প্রত্যাহার করার জন্য যথেষ্ট সময় হাতে পায়। বাধ্যতামূলক সময় অতিবাহিত হওয়ার পরে এবং উভয়পক্ষের শুনানির পরে, আদালত যদি সন্তুষ্ট হয়, তবে তা আবেদনের প্রেক্ষিতে তদন্ত করতে পারে। নির্দেশের তারিখ থেকে বিবাহ বিলুপ্ত করে বিবাহ বিচ্ছেদের আদেশ জারি করতে পারে।
আরও পড়ুন- অনলাইন কোচিং সেন্টার বাইজুর বিরুদ্ধে তল্লাশি ইডির, উদ্ধার নথি-ডিজিটাল ডেটা
তবে, এই বিধানগুলো প্রযোজ্য হয় যখন বিবাহের পর থেকে কমপক্ষে একবছর অতিবাহিত হয়। পাশাপাশি, ব্যভিচার, নিষ্ঠুরতা, পরিত্যাগ, ধর্মান্তর, উন্মাদনা, কুষ্ঠরোগ, যৌনরোগ, ত্যাগ এবং মৃত্যুর অনুমানের মতো কারণে স্বামী/স্ত্রী বিবাহ বিচ্ছেদ চাইতে পারে।