বুধবারই অল্ট নিউজের সহ-প্রতিষ্ঠাতা মহম্মদ জুবেরের জামিন মঞ্জুর করেছে সুপ্রিম কোর্ট। একইসঙ্গে জুবেরের বিরুদ্ধে মামলাগুলোকে একত্রিত করার নির্দেশ দিয়েছে। এই জামিন ব্যক্তিগত স্বাধীনতার জন্য যথেষ্ট নয় বলেই মনে করছে আদালত। একই ব্যক্তির বিরুদ্ধে একই অভিযোগে একাধিক জায়গায় মামলার বিরুদ্ধে এর ফলে আইনি রক্ষাকবচ তৈরি হল।
বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি সূর্যকান্ত ও বিচারপতি এএস বোপান্নাকে নিয়ে গঠিত তিন সদস্যের বেঞ্চ জানিয়েছে, 'অভিযুক্তের প্রতি ন্যায়ের জন্যই এফআইআরগুলোকে একই তদন্তকারী সংস্থার অধীনে একত্রিত করা ও পরিচালনা করা প্রয়োজন।' এই নির্দেশের ফলে আদালতকে এড়িয়ে অভিযুক্তকে ক্রমাগত হেফাজতে রাখার রাষ্ট্রীয় চেষ্টা বাধা পেল।
বেঞ্চ মনে করছে, একই অভিযোগে রাজ্যজুড়ে বিভিন্ন আদালতে একাধিক মামলায় কোনও অভিযুক্তকে হেফাজতে রাখা, তাঁকে ব্যক্তিগত স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত করারই শামিল। আদালত মনে করছে, একটি মামলায় জুবেরকে জামিন দেওয়ার পর অন্য মামলায় তাঁকে জেলে ভরে রাখা স্রেফ 'দুষ্ট চক্র'র জালে বন্দি হওয়ার মত ব্যাপার। এই কারণে আদালত উত্তরপ্রদেশের পাঁচটি জেলা থেকে ছ'টি এফআইআর দিল্লিতে স্থানান্তরিত করার নির্দেশ দিয়েছে।
আরও পড়ুন- মন্দার ভয়ে থরহরি কম্পমান তেলের বাজার, কমল হঠাৎ-ঘাড়ে-চাপা রফতানি শুল্ক, কিন্তু কেন?
আর, এভাবে সুপ্রিম কোর্ট কার্যত জুবেরের বিরুদ্ধে উত্তরপ্রদেশ সরকারের পদক্ষেপকে বাতিল করে দিল। এমনটাই মনে করছে আইনজীবী মহল। জুবেরের এই মামলার রায় বিজেপির প্রাক্তন সর্বভারতীয় মুখপাত্র নূপুর শর্মার মামলাতেও প্রভাব ফেলতে পারে। নূপুর শর্মার বিরুদ্ধেও একই অভিযোগে বিভিন্ন রাজ্যে মামলা হয়েছে।
জুবেরের মামলার তিন বিচারপতির অন্যতম বিচারপতি সূর্যকান্তের অধীনে নূপুর শর্মার মামলাও চলছে। তিনি নূপুর শর্মার মামলার দুই বিচারপতির অন্যতম। গ্রেফতারের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অপব্যবহারের বিরুদ্ধে আদালতের এই সীমা নির্ধারণ কিন্তু নতুন নয়। কিন্তু, আদালতের বারবার নির্দেশের পরও রাষ্ট্রীয় শক্তি সাধারণ নাগরিকদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারের আইনকে অপব্যবহার করেছে বলেই অভিযোগ। ২০০১ সালে টিটি অ্যান্টনি বনাম কেরল রাজ্যের রায়ে সুপ্রিম কোর্ট বলেছিল, 'যেখানে তথ্যটি প্রথম এফআইআরে অভিযুক্ত ব্যক্তির একই অপরাধের সঙ্গে সম্পর্কিত, সেখানে কোনও দ্বিতীয় এফআইআর হতে পারে না।' কিন্তু, সুপ্রিম কোর্টের এই সব ভর্ৎসনার পরও যে পরিস্থিতিটা বিন্দুমাত্র বদলায়নি, জুবেরের মামলায় ফের তা প্রমাণিত হল বলেই মনে করছেন আইনজীবীদের একাংশ।
Read full story in English