Supreme Court on Electoral Bond: নির্বাচনী বন্ড 'অসাংবিধানিক', জানাল সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু, কীসের ভিত্তিতে এমনটা জানাল সুপ্রিম কোর্ট? সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) নির্বাচনী বন্ড প্রকল্পের বৈধতা সম্পর্কে রায় দিয়েছে। দুই বিচারপতি তাঁদের রায়ে নির্বাচনী বন্ডকে 'অসাংবিধানিক' বলেছেন। যা আদালতকে সর্বসম্মত রায়ের পথে চালিত করেছে। ভারতের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি সঞ্জীব খান্না, বিচারপতি বিআর গাভাই, বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা, বিচারপতি মনোজ মিশ্রের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ গত বছরের ২ নভেম্বর থেকে এই বিষয়ে রায়দান স্থগিত রেখেছিল। আদালত তার রায়ে বেশ কিছু বিষয় তুলে ধরেছে।
- - আদালত বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) এই রায় দিয়েছে।
- - গত বছরের ২ নভেম্বর থেকে এই বিষয়ে রায়দান স্থগিত রেখেছিল আদালত।
- - ২০১৭ সালে কেন্দ্রীয় বাজেট বক্তৃতায় প্রথমবার এই বন্ডের কথা উল্লেখ করা হয়েছিল।
কী এই নির্বাচনী বন্ড?
ইলেক্টোরাল বন্ড স্কিম বা নির্বাচনী বন্ড প্রকল্পে কর্পোরেশন অথবা কোনও ব্যক্তি, স্টেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া (এসবিআই) থেকে নির্বাচনী বন্ড কিনে রাজনৈতিক দলগুলোকে বেনামে অর্থ দান করতে পারে। তবে যাঁরা নির্বাচনী বন্ড কিনেছেন, তাদের বিবরণ এসবিআইয়ের কাছে থাকে। এই প্রকল্প অনুসারে, কোনও বন্ড থেকে হওয়া আয়, ইস্যু হওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে ভাঙানো যায় না। তা প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে জমা করতে হয়। ২০১৭ সালে কেন্দ্রীয় বাজেট বক্তৃতায় প্রথমবার এই বন্ডের কথা উল্লেখ করেছিলেন তৎকালীন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। রাজনৈতিক দলগুলোর অর্থায়নে অস্বচ্ছতার অভিযোগে সমাধান হিসেবে জেটলি এই প্রকল্পের কথা জানিয়েছিলেন। জেটলি বলেছিলেন, 'রাজনৈতিক দলগুলো তাদের তহবিলের বেশিরভাগ অর্থ বেনামি অনুদানের মাধ্যমে পেয়ে থাকে। অনুদানের এই অর্থই পরে নগদ হিসেবে দেখানো হয়। তাই ভারতে রাজনৈতিক তহবিলের প্রাপ্তিকে পরিষ্কার করার একটি প্রচেষ্টা দরকার।'
নির্বাচনী বন্ড প্রকল্পকে কেন আদালতে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছিল?
ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী) এবং এনজিও 'কমন কজ' এবং 'এডিআর' এই মামলায় আদালতে পিটিশন দাখিল করেছিল। 'কমন কজ' এবং 'এডিআর'-এর তরফে আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ যুক্তি দিয়েছিলেন, রাজনৈতিক দল এবং প্রার্থীদের সম্পর্কে জানার অধিকার নাগরিকদের আছে। ভূষণ জানিয়েছেন, গোটা ভারতে প্রায় ২৩ লক্ষ নথিবদ্ধ সংস্থা আছে। নির্বাচনী বন্ড পদ্ধতিতে কোন কোম্পানি বা সংস্থা কত অনুদান দিয়েছে, তা খুঁজে বের করা বা জানা সাধারণ নাগরিকের পক্ষে সম্ভব না। ভূষণ আদালতে অভিযোগ করেছেন, নির্বাচনী বন্ড প্রকল্প পক্ষপাতমূলক একটি প্রকল্প। এই প্রকল্প সবসময় শাসকের পক্ষে কাজ করে চলেছে। এই প্রকল্পে সরকারি লাইসেন্স, লিজ, নীতি পরিবর্তন, চুক্তির ক্ষেত্রে সরকারি ছাড়ের বিনিময়ে বিভিন্ন ব্যক্তি বা সংস্থা শাসক দলকে অর্থ দেবে। আর, সেই সব সংস্থার নামও গোপন থাকবে।
আরও পড়ুন- আপনার প্রেমপর্ব জমে ক্ষীর, নাকি বিস্বাদ হতে যাচ্ছে, জানুন এই সব সংকেতে!
শেয়ার হোল্ডারদের ক্ষমতাকে অস্বীকার
প্রবীণ আইনজীবী কপিল সিবাল, আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করে অভিযোগ করেছেন, নির্বাচনী বন্ড প্রকল্পের জন্য কোম্পানিগুলি তাদের শেয়ার হোল্ডারদের প্রতি দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হচ্ছে। শেয়ার হোল্ডারদের কিছু না-জানিয়েই, কোম্পানিগুলো নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলোকে 'ফানেল মানি' দিতে পারছে। এর ফলে ওই কোম্পানির মালিকরা রাজনৈতিক ক্ষেত্রে তাদের কোম্পানির কীভাবে কাজ করা উচিত, সেই বিষয়ে শেয়ার হোল্ডারদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতাকে অস্বীকার করছেন।