ধৃত মন্ত্রী সেন্থিল বালাজিকে বরখাস্তের ব্যাপারে তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল আরএন রবির বৃহস্পতিবারের সিদ্ধান্ত রাজ্যপালের ভূমিকার সাংবিধানিক সীমাবদ্ধতাকে পরীক্ষা করেছে। পাশাপাশি, রাজভবনকে এক অজানা রাজনৈতিক অঞ্চলের দিকে ঠেলে দিয়েছে। সংবিধানের ১৬৪ (১) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে যে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যপাল কর্তৃক নিযুক্ত হবেন। আর, 'অন্যান্য মন্ত্রীরা মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শে রাজ্যপাল কর্তৃক নিযুক্ত হবেন এবং মন্ত্রীরা রাজ্যপালের খুশিমতো পদে আসীন থাকবেন।'
যাইহোক, সুপ্রিম কোর্টের রায়গুলোর একটি লাইন ব্যাখ্যা করেছে যে গভর্নরের ক্ষমতা প্রাথমিকভাবে মন্ত্রী পরিষদের 'সহায়তা এবং পরামর্শ'র মাধ্যমে টিকে থাকে। ১৯৭৪ সালে শমসের সিং বনাম পাঞ্জাব রাজ্যে, সুপ্রিম কোর্টের সাত বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ জানিয়েছিল, রাজ্যপাল অবশ্যই 'কিছু ব্যতিক্রমী পরিস্থিতি বাদে মন্ত্রীদের সহায়তা ও পরমার্শ অনুসারে প্রথাগত সাংবিধানিক ক্ষমতা প্রয়োগ করবেন।' এই ব্যতিক্রমী পরিস্থিতিগুলোর মধ্যে একটি হল সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানো সরকারকে বরখাস্ত করা।
সরকার গঠনের জন্য কোনও দলকে আমন্ত্রণ জানানোর সিদ্ধান্ত। এই উভয় পরিস্থিতিতে মন্ত্রী পরিষদের সহায়তা ও পরামর্শ রাজ্যপালের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। রাজ্য সরকার বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠ হলে, তাতেই রাজ্যপালের খুশি হওয়ার কথা। কিন্তু, তামিলনাড়ুর বর্তমান রাজ্যপাল আরএন রবি এইসব নিয়মের ধার ধারেননি। যা দেখে, লোকসভার প্রাক্তন মহাসচিব পিডিটি আচারি দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেছেন যে মুখ্যমন্ত্রীর সম্মতি ছাড়াই একজন রাজ্যপাল একজন স্বতন্ত্র মন্ত্রীকে বরখাস্ত করলেন। এটা সম্ভবত তামিলনাড়ুতেই প্রথম উদাহরণ তৈরি করল। আচারি বলেন, 'আমি এর আগে এমন কোনও উদাহরণ মনে করতে পারি না। মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শ ব্যতীত, কোনও রাজ্যপাল কোনও মন্ত্রীকে নিয়োগ বা বরখাস্ত করতে পারেন না।'
আরও পড়ুন- ওয়াগনার বিদ্রোহে নড়ে উঠেছে রাশিয়া, কী উপকার হল ইউক্রেনের?
গত বছর, কেরলের গভর্নর আরিফ মহম্মদ খান মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নকে চিঠি লিখেছিলেন। তাঁকে কেরলের অর্থমন্ত্রী কেএন বালাগোপালের বিরুদ্ধে 'সাংবিধানিকভাবে উপযুক্ত ব্যবস্থা' নিতে বলেছিলেন। একইসঙ্গে সতর্ক করে বলেছিলেন যে তিনি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীর ওপর খুশি থাকার সাংবিধানিক রীতি প্রত্যাহার করবেন। প্রতিক্রিয়ায় বিজয়ন একটি সাংবাদিক বৈঠকে বলেছিলেন যে এই ব্যাপারে রাজ্যপালের ক্ষমতা 'খুব সীমিত'।