সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যু ঘিরে প্রথম থেকেই দানা বেঁধেছিল রহস্য। ডিপ্রেশনের অজুহাত খাড়া হয়ে আদতে খুন করা হয়েছে বলিউডের এই দাপুটে অভিনেতাকে এ তথ্য জানিয়ে সিনে জগতের অনেকের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিল অভিনয় জগতের অনেকেই। কিন্তু এবার সুশান্ত মৃত্যুতে এল আইনি মোড়। কেস একটাই। কিন্তু এর তদন্ত করছে দুই ভিন্ন পুলিশবাহিনী! আইনে এও সম্ভব?
সুশান্তের মৃত্যুতে মুম্বাই পুলিশের কাছে কী কেস নথিভুক্ত হয়েছে?
জুনের ১৪ তারিখ বান্দ্রার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয়েছে সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃতদেহ। প্রাথমিকভাবে বান্দ্রা পুলিশ দুর্ঘটনাবশত মৃত্যু (অ্যাক্সিডেন্টাল ডেথ রিপোর্ট) হিসেবে কেস নথিভুক্ত করে। ভারতীয় দন্ডবিধির ১৭৪ ধারা অনুযায়ী দুর্ঘটনা কিংবা আত্মহত্যা বা অস্বাভাবিক মৃত্যুর ক্ষেত্রে এই ধারায় কেস রেজিস্টার হয়ে থাকে। এক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। সুশান্তের দেহে মৃত্যুর যেসব চিহ্ন পাওয়া গিয়েছিল আপাতদৃষ্টিতে তা আত্মহত্যার চিহ্ন হিসেবেই দেখা হয়েছে। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে পরিবারের পক্ষ থেকেও ভিন্ন কোনও অভিমত বা অভিযোগ করা হয়নি। ময়নাতদন্তেও মৃত্যুর অন্য কোনও কারণ বা খুনের কথা উল্লেখ ছিল না। ফলে তদন্তকারী অফিসার এই ঘটনাকে এডিআর কেস হিসেবেই ফাইল করেন।
যদি সেই সময় পরিবারের তরফে অভিযোগ করা হত তাহলে কী হত?
সাধারণত, ময়নাতদন্তেই উল্লেখ করা থাকে মৃত্যুর কারণ। আত্মহত্যা না কি খুন তা পোস্টমর্টেমেই সবচেয়ে ভাল বোঝা যায়। পরবর্তীতে ভিসেরা পরীক্ষার মাধ্যমে দেখা হয় কোনও বিষক্রিয়ায় মৃত্যু হয়েছিল কি না। অনেক সময় এমনটাও হয়েছে যেখানে প্রাথমিকভাবে এডিআর কেস ফাইল হলেও ময়নাতদন্তের রিপোর্টের পর সেই কেস খুনের কেস হিসেবে ফাইল হয়েছে। সেটা করা হয় ভারতীয় দন্ডবিধির ৩০২ ধারা অনুযায়ী। তবে যদি পরিবার কোনও ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলে সেক্ষেত্রে ভারতীয় দন্ডবিধির ৩০৬ ধারা অনুযায়ী সেই এফআইআর-এ বদল আনা সম্ভব।
মুম্বাই পুলিশ এবং বিহার পুলিশের কাছে কি আলাদা আলাদা কেস নথিভুক্ত হয়েছে?
বান্দ্রা পুলিশ যে কেস নথিভুক্ত করেছে সেই সময় সুশান্তের পরিবারের তরফে কোনও অভিযোগ করা হয়নি। তাই সেটা এডিআর ফাইল হিসেবেই নথিভুক্ত হয়েছে। কিন্তু পরবর্তীতে বিহার পুলিশের কাছে সুশান্তের বান্ধবী রিয়া চক্রবর্তীর নামে অভিযোগ দায়ের করে অভিনেতার পরিবার। এক্ষেত্রে বিহার পুলিশে রিয়া চক্রবর্তী এবং তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে প্ররোচনামূলক অভিযোগ দায়ের হয়েছে। সেই সূত্রে মুম্বাইয়ে তদন্ত করতে আসে বিহার পুলিশ। আর এরপরই শুরু হয় দুই বাহিনীর মধ্যে দ্বিমত। যদিও বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার জানিয়েছেন তিনি সিবিআই তদন্ত চান।
একই কেসে দুই পুলিশ বাহিনী ভিন্নভাবে তদন্ত করতে পারে?
আইন বলছে না, পারে না। এক্ষেত্রে সিবিআইকেই সরকারিভাবে তদন্তভার তুলে দিতে হবে। কিন্তু সমান্তরালভাবে কখনই তদন্ত করতে পারে না। তবে সুশান্তের মৃত্যু তদন্তের পাশাপাশি রিয়া চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে টাকা তছরূপেরও অভিযোগ করেছে সুশান্তের পরিবার। সেই কেস সব সামাল্লাছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)।
Read the full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন