Advertisment

বিমান দুর্ঘটনার নেপথ্যে 'টেবিলটপ রানওয়ে'? আসল কারণ কী?

জায়গা-এলাকাভিত্তিক সেগুলির চরিত্রও এক এক রকম হয়। কিছু রানওয়ে থাকে বিপদজ্জনক। কোঝিকোরের বিমানবন্দরকে ঠিক এমনটাই কি বলা যায়?

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

ল্যান্ডিংয়ের আর মাত্র কিছুক্ষণ হাতে ছিল। দূরে দেখা যাচ্ছে রানওয়ের আলো। কিন্তু হিসেবের সামান্য ভুলচুক। ১৯০ জন যাত্রী নিয়ে রানওয়ে নামা হল না, তার আগেই ভেঙে দু'টুকরো হয়ে গেল এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের বিমান। শুক্রবার রাতে এমনই এক ভয়ঙ্কর বিমান দুর্ঘটনার সাক্ষী হতে হল কেরালার কোঝিকোরে বিমানবন্দরকে। সেই সঙ্গে ফিরল ২০১০ সালের ম্যাঙ্গালোর বিমানবন্দরের সেই দুর্ঘটনার স্মৃতি।

Advertisment

যত দোষ রানওয়ের?

রানওয়ে বিভিন্ন রকমের হয়। জায়গা-এলাকাভিত্তিক সেগুলির চরিত্রও এক এক রকম হয়। কিছু রানওয়ে থাকে বিপদজ্জনক। কোঝিকোরের বিমানবন্দরকে ঠিক এমনটাই কি বলা যায়? কেরলের এই বিমানবন্দরের রানওয়ে আদতে 'টেবিলটপ রানওয়ে'। অর্থাৎ ভূগোলের ভাষায় বলতে গেলে মালভূমির ন্যায় পাহাড় কেটে বানানো হয় এই রানওয়ে। বড় পাহাড় না হলেও ছোট পাহাড়ের ওপর চ্যাপ্টা সমতল ভূমি বলা যায় একে৷ এই ধরণের বিমানবন্দরে ল্যান্ডিং করানো খুবই বিপদজনক হয়ে ওঠে। বিমানবন্দরের পাশে খাদ থাকায় ল্যান্ডিংয়ের সামান্য গণ্ডগোলেই হয়ে যেতে পারে মারাত্মক বিপর্যয়৷ আর কোঝিকোড়ে এই বিমানবন্দরের চারদিকে অসংখ্য খাদ রয়েছে৷ এই টেবিল টপ মাউন্টেনে ল্যান্ডিং হয়ে যাওয়ার পর রানওয়েতে আর প্রায় কোনও জায়গাই থাকে না৷ মনে করা হচ্ছে শুক্রবারের বিপদের কারণ ছিল সেটাই।

তবে সরকারের উচ্চপদস্থ আধিকারিকেরা জানিয়েছেন যে ক্র্যাশ করে যাওয়ার পরও কোনও অগ্নিসংযোগ ঘটেনি বিমানটিতে। তাই রুখতে পারা সম্ভব হয়েছে বহু মৃত্যুকে। ডিজিসিএ-এর তরফে জানান হয়েছে অনেক বেশি স্পিড নিয়ে মাটি ছুঁয়েছে এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের বিমান। ফলে পাইলটের হাতে থামানোর মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি।

এই টেবিলটপ রানওয়ে কি শুধু কেরলেই রয়েছে?

না। কোঝিকোরের পাশপাশি ম্যাঙ্গালোর বিমানবন্দরও টেবিলটপ। এছাড়া মিজোরামের লেংপুই বিমানবন্দর, সিকিমের পাকওয়াং বিমানবন্দর, হিমাচল প্রদেশের সিমলা-কুলু এয়ারপোর্টও এমনই। ভূটান এবং নেপালের কাঠমান্ডুর বিমানবন্দরও টেবিলটপ এয়ারপোর্ট।

ম্যাঙ্গালোরে কী ধরনের দুর্ঘটনা হয়েছিল?

২০১০ সালে কর্নাটকের ম্যাঙ্গালোরে ঠিক একইভাবে দুর্ঘটনা ঘটেছিল। তবে সেক্ষেত্রে আগুন লেগে গিয়েছিল এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের বিমানটিতে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ১৫৮ জনের। গত বছর দুবাই থেকে আসা এক বিমান একটুর জন্য রক্ষা পায় ম্যাঙ্গালোর বিমানবন্দরে অবতরণ করার সময়। ভয়াবহতা এতটাই ছিল যে যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিল গোটা ঘটনায়।

কেন এই ধরনের বিপদের মুখোমুখি পড়তে হয়?

পাইলটদের মত টেবিলটপ মাউন্টেনের কারণেই এই রকমের দুর্ঘটনা ঘটে। অভিজ্ঞ পাইলটদের মত, খুব দক্ষতার সঙ্গে এই টেবিলটপ রানওয়েতে অবতরণ করতে হয়। সামান্যতম ভুলে বড় ধরনের বিপদ হতে পারে। কোঝিকোরের রানওয়ে ম্যাঙ্গালোরের থেকে ৪০০ মিটার লম্বা হলেও প্রস্থে অনেকটা ছোট। এছাড়াও শুক্রবারের আবহাওয়াও অনুকূল ছিল না। যখন অবতরণের সময় ছিল সেই সময় আবহাওয়া আরও খারাপ হতে শুরু করে। বিমানের গতি স্বাভাবিকের থেকে বেশি হওয়ায় ব্রেক কষেও আটকানো সম্ভব হয়নি এই বিপদ।

Read the story in English

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

kerala
Advertisment