তেলেঙ্গানা আগামী মাসে বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এর কঠোর প্রতিরোধমূলক আটক আইন ইতিমধ্যেই নজর কেড়েছে। অন্তত তিনটি পৃথক ঘটনায়, সুপ্রিম কোর্ট আইনের অতি ব্যবহারের ঘটনায় তেলেঙ্গানা সরকারের কড়া সমালোচনা করেছে। যার মধ্যে সর্বশেষ সমালোচনা করেছে ৪ সেপ্টেম্বরের এক রায়ে। সেখানে বিচারপতি সূর্যকান্ত ও দীপঙ্কর দত্তের বেঞ্চ জোর দিয়ে জানিয়েছে যে 'তেলেঙ্গানা রাজ্যের বর্তমান ক্ষতিকর প্রবণতা' আদালতের নজর এড়ায়নি।
প্রতিরোধমূলক আটক কি?
প্রতিরোধমূলক আটক মানে রাষ্ট্র কর্তৃক কোনও ব্যক্তিকে বিনা বিচারে আটক করা এবং আদালত কর্তৃক দোষী সাব্যস্ত করা, কিন্তু নিছক সন্দেহের ভিত্তিতে। আটকের মেয়াদ বাড়ানো না-হলে, সেটা একবছর পর্যন্ত হতে পারে। বিচারের ভিত্তিতে আটকের মত ব্যাপার নয় এই প্রতিরোধমূলক আটক। বিচারের ভিত্তিতে আটক হল বিচারাধীন। যাতে সে পালিয়ে যেতে না-পারে, সেজন্য আটক করা। আর, একজন আটক ব্যক্তিকে একটি প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবেও হেফাজতে নেওয়া যেতে পারে। এমনকি যদি সে অপরাধ না-করে থাকে, তবুও।
সংবিধানে প্রতিরোধমূলক আটকের বিধান আছে
ব্রিটেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডার মতো দেশে প্রতিরোধমূলক আটক একটি যুদ্ধকালীন ব্যবস্থা। ভারতে, সংবিধান নিজেই প্রতিরোধমূলক আটকের জন্য জায়গা করে দিয়েছে। সংবিধানের তৃতীয় অংশ, যা মৌলিক অধিকার নিয়ে কাজ করে, রাষ্ট্রকে প্রতিরোধমূলক আটকের জন্য এই অধিকারগুলি স্থগিত করার ক্ষমতাও দিয়েছে। ব্যক্তি স্বাধীনতার ওপর জোর দেওয়া সত্ত্বেও, তৃতীয় অংশ, যা সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর অংশ। অর্থাৎ, যাকে সংশোধন করা যায় না, তার ২২ অনুচ্ছেদের অধীনে প্রতিরোধমূলক আটকের বিধান আছে।
আরও পড়ুন- এবার সব পাঠ্যপুস্তকে ‘ইন্ডিয়া’র বদলে ‘ভারত’! NCERT-র তোলপাড় ফেলা সুপারিশ
রাষ্ট্র কোন আইনের অধীনে প্রতিরোধমূলক আটকের আদেশ দিতে পারে?
কেন্দ্রীয় আইনগুলির মধ্যে, জাতীয় নিরাপত্তা আইন, ফরেন লেনদেন আইন, ১৯৭৪ সালের চোরাচালান প্রতিরোধ আইন (COFEPOSA)-এ প্রতিরোধমূলক আটকের আদেশ দেওয়া যেতে পারে। এছাড়াও দেশে ২৫টিরও বেশি রাজ্যে প্রতিরোধমূলক আটক আইন বলবৎ রয়েছে। যেমন তেলেঙ্গানা আইন, যাকে বলা হয় তেলঙ্গানা প্রিভেনশন অফ ডেঞ্জারাস অ্যাক্টিভিটিস অফ বুটলেগার, ডাকাত, মাদক-অপরাধী, গুন্ডা, অনৈতিক পাচারকারী, জমিদখলকারী, জালিয়াতির মূল অপরাধী, সারের ক্ষেত্রে অপরাধী, খাদ্যে ভেজাল দেওয়া অপরাধী, জাল নথির অপরাধী, তফসিলকৃত পণ্যের অপরাধ, বন অপরাধী, গেমিং অপরাধী, যৌন অপরাধী, বিস্ফোরক পদার্থ অপরাধী, অস্ত্র অপরাধী, সাইবার অপরাধী, হোয়াইট কলার বা আর্থিক অপরাধী আইন। একই ধরনের আইন রয়েছে তামিলনাড়ু, গুজরাত এবং বিহারেও।